পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বড়হরপাড়া খালের ওপর নির্মিত আয়রন সেতুটি ভেঙে গেছে অনেক আগে। নতুন সেতুর জন্য অপসারণ করা হয় ভেঙে যাওয়া সেতুর মালামাল। এখন খালের দুপাশে বসবাসরত ৬-৭টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের অবলম্বন ড্রামের ওপরে তক্তা দিয়ে তৈরি বিশেষ ভেলা। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
Advertisement
স্থানীয়রা জানান, ২০ বছর আগে বড়হর খালের ওপর নির্মিত হয় বড়হরপাড়া সেতু। নির্মাণের পর কয়েক বছর ভালো থাকলেও ৪-৫ বছর আগ থেকেই সেতুর বিভিন্ন স্থান থেকে খসে পড়ে বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা। শুধু তাই নয়, আয়রন সেতুটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাওয়ায় এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ছয় মাস আগে সেতুটি অপসারণ করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে সেতু না থাকায় বড়হরপাড়া খালের দুপাশে অবস্থিত বড়হরপাড়া, পৌরঘোজা, মম্বিপাড়া, গঙ্গামতিসহ ৬-৭টি গ্রামের মানুষকে চলাচলে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সেতু লাগোয়া একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদরাসা রয়েছে শিশুরা ড্রামের ভেলায় পারাপার হতে না পারায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আসতে হয়। পারাপারে দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে।
ইউনুস নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জাগো নিউজকে বলেন, ‘ড্রামের ওপর রশি টেনে ঝুঁকি নিয়ে খাল পার হতে হয়। আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। সরকার নতুন সেতু করার কথা বলেছে। সেটা যেন দ্রুত করা হয়।’
Advertisement
আলম হাওলাদার নামের এক কৃষক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বাড়ি বড়হরপাড়া খালের দক্ষিণ পাশে কিন্তু আমার সব কাজ খালের উত্তর পাশে পৌরঘোজায়। প্রতিদিন সেখানে কৃষিকাজে যেতে হয়। সামগ্রিক মালামাল আনা-নেওয়া সবকিছু এখন এই ড্রাম টেনে করতে হয়। এতে আমরা এলাকার কৃষকরা যে কত ভোগান্তিতে আছি তা বলে বোঝানো যাবে না।’
পৌরঘোজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাহফুজ নামের এক চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলে, ‘এখানে যখন সেতু ছিল তখন আমি একা একা স্কুলে আসতাম। এখন আমার আম্মু সঙ্গে করে বাড়িতে নিয়ে যায়। ড্রামের ভেলায় পারাপারের সময় আমার অনেক ভয় লাগে। নতুন সেতু হয়ে গেলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে।’
লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, পরিত্যক্ত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ সেতুটি অপসারণ করে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এখন কেন হচ্ছে না তা নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো।
কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ জাগো নিউজকে বলেন, নতুন সেতু নির্মাণে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন খুব শিগগির কাজ শুরু হবে। নয়তো আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।
Advertisement
এসআর/জিকেএস