চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ এখন জাপানি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার পর জাপান বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও লজিস্টিক খাতে অবকাঠামো উন্নয়নসহ কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। যা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
Advertisement
তিনি বলেন, একইভাবে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরাও জাপানের সঙ্গে যৌথ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে আগ্রহী। এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার জেটরো এবং জেবিসিসিআইয়ের সঙ্গে উভয়দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে জাপান ডেস্ক চালু করেছে।
বুধবার (২৪ মে) বিকেলে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই), জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেটরো) এবং জাপান কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ইন ঢাকার (জেসিআইইডি) মধ্যে বিজনেস টু বিজনেস বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে জেটরোর ঢাকাস্থ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ইউজি অ্যান্ডো, চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, জেসিআইএডির (শুকোকাই) এবং জেবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মাইয়াংহো লি, চেম্বারের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর হাজ্জাজ উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
এছাড়া চেম্বার পরিচালকদের মধ্যে অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), অঞ্জন শেখর দাশ, বেনাজির চৌধুরী নিশান, মো. শাহরিয়ার জাহান, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, সাকিফ আহমেদ সালাম, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, তানভীর মোস্তফা চৌধুরী ও মোহাম্মদ নাসিরুল আলম (ফাহিম) অংশ নেন।
অন্যদের মধ্যে চেম্বারের সাবেক পরিচালকদের মধ্যে এস. এম. আবু তৈয়ব, মাহফুজুল হক শাহ ও কামাল মোস্তফা চৌধুরী, রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ, প্রান্তিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম সারওয়ার, পিএইচপি মোটরসের এমডি মো. আক্তার পারভেজ, রিলায়েন্স এসেটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টস (বিডি) লিমিটেডের পরিচালক ওমর মুক্তাদিরসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বাংলাদেশের জেটরো কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ইউজি অ্যান্ডো বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। ফলে জাপান এখন বাংলাদেশের অন্যতম কৌশলগত অংশীদার। এর ভিত্তিতে জাপান ফ্রি অ্যান্ড ইন্দো প্যাসিফিকের অংশ হিসেবে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে, যা বাংলাদেশকে একটি অর্থনৈতিক হাবে পরিণত করবে। ফলে বাংলাদেশ সাউথ এশিয়ার গেটওয়েতে পরিণত হবে।
তিনি আরও বলেন, জাপানি ব্যবসায়ীরা সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে তাদের বিনিয়োগ করেন। এখনো তারা বিনিয়োগের জন্য চট্টগ্রামকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই চট্টগ্রামে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে জাপান কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রামে এসেছেন। এতে দুদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
Advertisement
জেসিআইএডির (শুকোকাই) এবং জেবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মাইয়াংহো লি বলেন, জাপানের স্বনামধন্য ১৬টি কোম্পানির মধ্যে মিতসুবিশি করপোরেশন, ফার্স্ট রিটেলিং (ইউনিকলো), ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল, তেইজিং ফ্রন্টিয়ার কোম্পানি, ইউসেন লজিস্টিকস (বাংলাদেশ) লিমিটেড, আলসক বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ সার্ভিস লিমিটেড, সেটশোইউ এস্টেক করপোরেশন, টিএনওয়াই লিগ্যাল বাংলাদেশ লিমিটেড, কেটু লজিস্টিকস বাংলাদেশ লিমিটেড, এমইউএফজি ব্যাংক লিমিটেড (মিতসুবিশি গ্রুপ), মামিয়া-ওপিসহ বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম সফর করছেন। ভৌগোলিক সুবিধার কারণে চট্টগ্রামে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী জাপানি বিনিয়োগকারীরা।
তিনি দুদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে এ ধরনের বিটুবি আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হবে বলে উল্লেখ করেন।
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, চট্টগ্রাম চেম্বার দেশে তথা চট্টগ্রামে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। জাপান ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিটুবি আলোচনা বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
ইকবাল হোসেন/এমকেআর/এএসএম