এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল ভোক্তা বাজার রয়েছে। এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এ অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করাও এখন সময়ের দাবি।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার অনন্য সুযোগ রয়েছে। এ অঞ্চলের তরুণদের দক্ষ মানবসম্পদে রুপান্তরিত করতে পারলে তা আশীর্বাদ বয়ে আনবে।’
বুধবার (২৪ মে) রাজধানীর একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় আয়োজিত ‘দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সার্কের গুরুত্ব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জসিম উদ্দিন বলেন, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্কের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের অমিত সম্ভাবনা বিরাজমান। চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক বাণিজ্যের বিশাল এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়টি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে আঞ্চলিক বাণিজ্য জোরদারে সদস্য দেশগুলোকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।
Advertisement
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, নতুন বাজারে প্রবেশ, পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, আন্তঃসীমান্ত ব্যবসায়িক সহযোগিতা বাড়ানোসহ বাণিজ্যের বাধা দূর করার মাধ্যমে সার্ক বাণিজ্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে কাজ করতে পারে বেসরকারি খাত। সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বিজনেস টু বিজনেস মিটিং পারস্পরিক বাণিজ্য জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। তিনি বলেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্ক স্থাপন করা গেলে এ অঞ্চল হতে পারে বিশ্বের অন্যতম গতিশীল ও উদীয়মান শক্তি। এ লক্ষ্যে শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন ও সংস্থাগুলোকে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।
সার্ক সিসিআই’র (শ্রীলঙ্কা) প্রাক্তন সভাপতি রুয়ান এদিরিঙ্গে বলেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর বিপুল জনশক্তি, বিশাল বাজার, অর্থ, পর্যাপ্ত খনিজ সম্পদ ও কাঁচামাল রয়েছে। অথচ এসব সম্পদকে আমরা সঠিক কাজে লাগাতে পারিনি। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সার্ক চেম্বারের সদস্যদের নিজ নিজ দেশের ব্যবসায়ী নেতৃত্ব এবং সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাগুলো দূর করতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।
সার্ক সিসিআই’র (পাকিস্তান) সহ-সভাপতি আঞ্জুম নিসার বলেন, অন্যান্য আঞ্চলিক জোটগুলো তাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে জোরালোভাবে কাজ করছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমরা এখনো সার্কের মতো এত সম্ভাবনাময় একটি জোটকে কাজে লাগাতে পারিনি। পর্যটন, কৃষি, মৎস্য, শিল্প, মানব উন্নয়নসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে আমাদের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ অঞ্চলে বাণিজ্যের সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে নিজ নিজ দেশের সরকারকে আরও তৎপর করতে কাজ করতে হবে।
Advertisement
অনুষ্ঠানে অতিথি বক্তা ছিলেন ইউএন ইএসসিএপি-এর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া অফিসের ডেপুটি হেড ও সিনিয়র ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের কর্মকর্তা ড. রাজন সুদেশ রত্ন। সঞ্চালনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাশরুর রিয়াজ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মালদ্বীপের সাবেক মন্ত্রী মরিয়ম শাকিলা, সার্ক সিসিআই’র (শ্রীলঙ্কা) প্রাক্তন সভাপতি রুয়ান এদিরিঙ্গে, সার্ক সিসিআই’র (নেপাল) ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নেপাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফএনসিসিআই) সাবেক সভাপতি চন্ডি রাজ ঢাকাল, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় বসু, আফগানিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য জানাকা সিদ্দিকী, এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি, পরিচালকসহ বাংলাদেশ ও সার্কভুক্ত দেশগুলো ব্যবসায়ী নেতারা।
ইএআর/এএএইচ