কালবৈশাখী ঝড়ে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ছাউনিসহ সবকিছুই উড়ে গেছে। ভেঙে গেছে পিলার। ফলে খোলা আকাশের নিচেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। রোদ থেকে রক্ষায় মাথার ওপর সামিয়ানা টানিয়ে নেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা।
Advertisement
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সমাজের শ্রমজীবী, হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০১২ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিশুকল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ইসলামপুর পৌর শহরের পূর্ব ভেঙ্গুরা এলাকায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে ৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু করলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এছাড়া বিদ্যালয়টিতে পাঁচজন শিক্ষক ও একজন দপ্তরি কর্মরত আছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে বিদ্যালয়ের পুরো ঘর। মাটি আর কিছু ইট ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিদ্যালয়ের ভেঙে যাওয়া মালামাল। তবে পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচেই বসে পড়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে সামিয়ানা টানিয়ে। প্রচণ্ড গরমে তাই কষ্টের যেন সীমা নেই কোমলমতি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ১৬ মে রাতে পুরো উপজেলার ওপর দিয়ে প্রচণ্ড বেগে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এতে তাদের বিদ্যালয়ের সবকিছুই উড়ে যায়। কিন্তু প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চলমান। তাই পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে হচ্ছে। ঘরটি মেরামতের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি লিখিত আবেদনও করেছেন তারা।
Advertisement
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুলতানা ও চতুর্থ শ্রেণির তাকিয়াসহ আরও অনেকে জানায়, পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় তারা ভালো কোনো স্কুলে পড়াশোনা করতে পারে না। কিন্তু তাদের বিদ্যালয়টি ঝড়ে ভেঙে গেছে। তাই তাদের সামিয়ানার নিচে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এতে তাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে বলে জানান তারা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ১৬ মে কালবৈশাখী ঝড়ে একশত ফুট দৈর্ঘ্যের চারচালা টিনশেড ঘরটি পুরোটাই বিধ্বস্ত হয়েছে। সামিয়ানা টানিয়ে কোনোরকমে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তবে সামনে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তাই ঘরটি দ্রুত মেরামত করা না গেলে শিক্ষা কার্যক্রম বেশিদিন চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে ঘরটি মেরামতের জন্য ইউএনওর কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করা হয়েছে। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ ফেরদৌস জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্যালয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষার অধীনে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিছু একটা করতে পারেন।
Advertisement
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমান বলেন, সম্প্রতি পত্র মারফত বিষয়টি জেনেছি। তাই প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজে/জেআইএম