বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সুতীক্ষ্ণ ধারণা ছিল হ্যাকারদের। এমনকি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হ্যাকাররা দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দাগিরি চালিয়ে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ফেব্রুয়ারির শুরুতে অজ্ঞাত হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পেমেন্ট অ্যাডভাইজ পাঠায়। ফিলিপাইনের স্থানীয় ব্যাংকে টাকা স্থানান্তরের জন্য এসব অ্যাডভাইজ পাঠানো হয়। পরে পাঁচটি অ্যাডভাইজে মোট ৭৮৫ কোটি ১৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ফিলিপাইনের কয়েকটি ব্যাংকে পাচার হয়।যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাক করে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা হ্যাকাররা নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। তবে মঙ্গলবার বাংলাদেশের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক। নিউ ইয়র্কের এ ব্যাংকটি বলছে, তাদের সিস্টেম হামলার শিকার হয়েছে এ ধরনের কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই।ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুরোধ পাওয়ার পর স্বাভাবিক পদ্ধতিতে অর্থ স্থানান্তর করা হয়। বেলজিয়াম ভিত্তিক সুইফট (কোনো ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরের জন্য গোপন সঙ্কেতলিপির ব্যবহার) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানায়নি যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যাংক।নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানান, অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রথমে তথ্য সংগ্রহ করেছে হ্যাকাররা। যাতে প্রতারণা করতে গিয়ে তারা কোনো ধরনের বিপদের মুখোমুখি না হন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম সম্পর্কে গভীর ধারণা পেতে তারা (হ্যাকাররা) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দাগিরি চালিয়েছে।গত বছর বিশ্বের কয়েকটি দেশের বেশকিছু ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেম ব্যবহার করে সুইফটে প্রবেশ করে কারবানাক গ্যাং। ওই সময় ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থও হাতিয়ে নেয় কারবানাক। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফিলিপাইনের ৩টি বড় ক্যাসিনো ব্যবহার করে সে দেশের হ্যাকাররা বাংলাদেশ থেকে ৭৮৫ কোটি ১৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ফিলিপাইনের কয়েকটি ব্যাংকে পাচার করে নিয়ে গেছে বলে এর আগে দেশটির সংবাদমাধ্যম এবিএস-সিবিএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়। এ নিয়ে প্রথমে জাগো নিউজে বাংলাদেশের ৮০০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে হ্যাকাররা! শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এসআইএস/এবিএস
Advertisement