আবিদ আহনাফ
Advertisement
শহরে এখন কর্পোরেট পোগ্রাম বলি আর রিয়েলিটি শো কিংবা প্রতিষ্ঠানের প্রচারণায় ভিন্নমাত্রার ফেসবুক লাইভ—একটাই নাম এখন বেশ আলোচিত। নামটি ‘রাফসান সাবাব’। দেশীয় উপস্থাপনায় তার উপস্থিতি এখন বেশ বড়সড়। জনপ্রিয় মানুষটির ফেসবুক পেজে এক মিলিয়নের বেশি মানুষ তাকে নিয়মিত ফলো করেন। তার শেয়ার করা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ক্লিপিংস ছড়িয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে।
রাফসানের শুরুর গল্পটা কিন্তু ভীষণ অন্যরকম! পরিবারের একমাত্র পুত্রসন্তানের একাডেমিক লাইফ নিয়ে বাবা-মায়ের হতাশাজনক আলোচনা। তারই মাঝে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে বাবা-মায়ের হতাশ বাক্য শুনছিল পরিবারের সেই সদস্য। তখনই সিদ্ধান্ত নিলেন, বাবা-মায়ের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে তাদের মুখে হাসি ফোটাবেন। তিনিই হয়ে উঠলেন জনপ্রিয় উপস্থাপক এবং হোয়াট অ্যা শোর প্রতিষ্ঠতা।
রাফসানের স্কুলজীবন কেটেছে ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে। সেখানে ছিলেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। পরে ভর্তি হন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে। কলেজে থাকাকালীন রাফসান উপলব্ধি করেন, নিজের ভেতরে থাকা উপস্থাপনার সুপ্ত প্রতিভা।
Advertisement
আরও পড়ুন: ১০ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো চাকরি মেলা
ক্যাডেট কলেজে উপস্থাপনার অভিজ্ঞতা থাকলেও আনুষ্ঠানিক উপস্থাপনায় রাফসানের অভিষেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিয়ের দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালীন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনার সুবাদে এবং নতুন কিছু শেখার তীব্র ইচ্ছা থেকে সুযোগ তৈরি হয়। সে সময়ে আইবিএর শেষ বর্ষে থাকা টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিকের সঙ্গে কাজের সুযোগ হয়।
আয়মান সাদিকের সহযোগিতায় ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করেন ‘টেন মিনিটস স্কুল শো’র। মূলত এ সময়েই রাফসানের শেখা হয় কনটেন্টের খুঁটিনাটি নানা বিষয়। টেন মিনিটস স্কুল শোর পরে রাফসান লঞ্চ করেন ‘হ্যাশ ট্যাগ’ নামের আরেকটি শো। যেখানে দেশের নানা পরিচিত মুখের সঙ্গে আলোচনা হতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়ে।
নিজের তৈরি করা ‘হোয়াট অ্যা শো’ নিয়ে রাফসান সাবাব বলেন, ‘জিমি কেমেল, জিমি ফেলেনর মতো বিশ্ববিখ্যাত তারকা উপস্থাপকদের থেকে অনুপ্রাণিত হই। ফলে গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ভিন্ন কিছু করার চেষ্টায় ২০১৯ সালে যাত্রা শুরু হয় ‘হোয়াট অ্যা শো’র।’
Advertisement
আরও পড়ুন: বাবার অনুপ্রেরণায় বিসিএস ক্যাডার মানস
শুরুর দিকে সব কিছু খুব অগোছালো হলেও বর্তমানে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের পৃষ্ঠপোষকতা এবং রাফসানের দারুণ কনটেন্ট রিসার্চের ফলে ‘হোয়াট অ্যা শো’ পরিণত হয়েছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি শোগুলোর একটি হিসেবে।
প্রতি এপিসোডেই দেখা যাচ্ছে দেশসেরা তারকাদের। নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করে যে কোনো ব্যক্তিরই সুযোগ রয়েছে ‘হোয়াট অ্যা শো’র লাইভ দর্শক সারিতে উপস্থিত থাকার।
তরুণ উপস্থাপক এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের উদ্দেশ্যে রাফসান সাবাব বলেন, ‘হঠাৎ করেই এ পেশাকে ফুল টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে না নিয়ে, সময় নিয়ে এবং হার্ড ওয়ার্ক ও পেশনেটলি গ্রো করাই সর্বোত্তম।’
রাফসান সাবাবের স্বপ্ন একদিন ‘হোয়াট অ্যা শো’ নামের রিয়েলিটি শোটি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে জয় করে নেবে আন্তর্জাতিক দর্শকের মনও।
এসইউ/এমএস