দ্রোহ, প্রেম, ধর্মীয় অনুপ্রেরণা ও সাম্যবাদের কবি কাজী নজরুল ইসলামের একেকটি দীপ্তিমান শব্দবর্ধন সেই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে বাঙালিকে উজ্জীবিত করেছে স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত। এখনো বাঙালির যে কোনো আন্দোলনে তার সৃষ্টি আজও সমানভাবে অনুপ্রেরণা যোগায়। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার অনবদ্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আমাদের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন।
Advertisement
কানাডার ক্যালগেরির বাংলাদেশ সেন্টারে প্রবাস বাংলা ভয়েসের আয়োজনে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
‘প্রবাস বাংলা ভয়েস’ এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুলের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির সভাপতি কয়েস চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির সহ-সভাপতি কাজী জুনায়েদ, ইকবাল রহমান, সাধারণ সম্পাদক শুভ্র দাস শুভ্র, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লা রফিক, আলবার্টা রাইটার্স ফোরামের সভাপতি বায়েজিদ গালিব, সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান এবং কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জয়ন্ত বসু।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি কয়েস চৌধুরী বলেন, কাজী নজরুলের প্রতিটি সৃষ্টি আমাদের অনুপ্রাণিত করে তোলে। তার বৈচিত্র্যময় লেখা যেমন বাঙালির ঈদ উৎসবকে রঙিন করে তোলে, তেমনি তার শ্যামা সংগীত আজও অতুলনীয় পূজা অর্চনায়।
Advertisement
বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সহ-সভাপতি কাজী জুনায়েদ বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম তার লেখনীর মাধ্যমে যে সমাজ ব্যবস্থা রেখে গেছেন তার সুফল আমরা এখনো ভোগ করছি। গণতন্ত্র রক্ষায় তার ভূমিকা ছিল অসাধারণ। তিনি ছিলেন সাম্যের কবি।
বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সহ-সভাপতি ইকবাল রহমান বলেন, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তার আদর্শের প্রভাব ফেলেছেন, তার কবিতা ও গানের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সাধারণ সম্পাদক শুভ্র দাস শুভ্র বলেন, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার সৃষ্টির মধ্য দিয়ে শুধু প্রবাসে নয় সারা বিশ্বের মানুষের মাঝে তিনি জাগ্রত থাকবেন। তার জন্মদিনে আমাদের অভিনন্দন এবং বিনম্র শ্রদ্ধা।
আলবার্টা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ রফিক বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রেম, বিরহ-বেদনা ও সাম্যের কবি। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্য-সংগীত তথ্য সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পুরুষ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় কাজী নজরুল ইসলামের লেখনী ধুমকেতুর মতো আঘাত করে জাগিয়ে তুলেছিল ভারতবাসীকে। বিদ্রোহী কবিতে পরিণত হন তিনি।
Advertisement
আলবার্টা রাইটার্স ফোরামের সভাপতি, রম্যগল্প লেখক ও কলামিস্ট বায়াজিদ গালিব বলেন, নজরুল ছিলেন দ্রোহের কবি, সাম্যবাদের কবি ও প্রেমের কবি। জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোষ্ঠীর উর্ধ্বে তিনি তার সাহিত্যকে স্থান দিয়েছিলেন মানব প্রেম ও জাতীয়তাবাদী চিন্তা চেতনায়।
আলবার্টা রাইটার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, ‘দুখু মিয়া’ হিসেবেও পরিচিত এই কবি সাম্রাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, নিপীড়ন, অনাচার, বৈষম্য, শোষণ ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে অগ্নিকণ্ঠে সোচ্চার হয়ে লিখেছেন অসংখ্য গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও গান। এছাড়া তিনি ছিলেন চির প্রেমের কবি। প্রেম নিয়েছিলেন এবং দিয়েছিলেন। তিনি বিদ্রোহী কবি হলেও তার প্রেমিক রূপ ছিল প্রবাদপ্রতিম।
কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জয়ন্ত বসু বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, শিশু সাহিত্যিক, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার, স্বরলিপিকার, গীতিনাট্যকার, গীতালেখ্য রচয়িতা, চলচ্চিত্র কাহিনিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, সংগীত পরিচালক, গায়ক, বাদক, সঙ্গীতজ্ঞ ও অভিনেতা ছিলেন। তার জন্মদিনে বিনম্ন শ্রদ্ধা।
‘প্রবাস বাংলা ভয়েস’ এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল বলেন, চুরুলিয়ার সেই দুখু মিয়া শুধু কানাডা নয় সারা বিশ্বে তার সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে অমর হয়ে থাকবেন, তার জন্মদিনে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি, শুভ জন্মদিন।
এমআরএম/এমএস