এবারের আইপিএলে অনেকগুলো ম্যাচেরই নাটকীয় সমাপ্তি হয়েছে। শেষ বলে এসে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে অনেকগুলো ম্যাচে। তবে, টুর্নামেন্ট থেকে এমন নাটকীয় বিদায় সম্ভবত কলকাতা সমর্থকরা আশা করেনি।
Advertisement
লখনৌ সুপার জায়ান্টসের ছুঁড়ে দেয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্য প্রায় ৯ ওভারের মধ্যে তাড়া করতে পারলে প্লে-অফের জন্য নিজেদের টিকিয়ে রাখার সম্ভাবনা ছিল। সেটা যখন পারেনি, তখন শেষ ম্যাচে অন্তত জয়ের স্বান্তনা নিয়েই বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলো কলকাতার ক্রিকেটাররা।
কিন্তু শেষ মুহূর্তের রুদ্ধশ্বাস নাটকীয়তায় সেই জয়ও সম্ভব হয়নি। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের কাছে মাত্র ১ রানে হেরে, পরাজয়কে সঙ্গী করেই এবারের আইপিএলে নিজেদের অভিযান শেষ করতে হলো কলকাতা নাইট রাইডার্সকে।
সে সঙ্গে গুজরাট টাইটান্স এবং চেন্নাই সুপার কিংসের পর তৃতীয় দল হিসেবে এবারের আইপিএলের প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে গেলো লখনৌ সুপার জায়ান্টসের। বিদায় নিশ্চিত হলো কলকাতা নাইট রাইডার্স, পাঞ্জাব কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের।
Advertisement
নাটকীয়তার চূড়ান্ত প্রদর্শনী হয়েছিলো শনিবার রাতে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২১ রান। ২০ রান করলে ম্যাচ টাই। উইকেটে সেই রিঙ্কু সিং, যিনি ২৮ বলে উইকেটে রয়েছেন ৫১ রান নিয়ে এবং মাত্রই মাঠে নামা ভাইভাব অরোরা। বোলার যশ ঠাকুর। অরোরা প্রথম বল মোকাবেলা করে ১ রান নিয়ে দিলেন রিঙ্কু সিংকে। পরের বলেই ওয়াইড। ১ বলে হলো ২ রান।
পরের দুই বলই নাটকীয়ভাবে ডট দিয়ে দিলেন যশ ঠাকুর। রিঙ্কু সিংকে রান নিতে দিলেন না। চতুর্থ বল আবারও ওয়াইড। অর্থ্যাৎ তিন বল থেকে হলো মাত্র ৩ রান। নাটকীয়তা তখনও বাকি। চতুর্থ বলটিকে সীমানার ওপারে পাঠিয়ে ছক্কা হাঁকালেন রিঙ্কু। শেষ ২ বলে প্রয়োজন ১২ রান। রিঙ্কুর তো টানা ছক্কা মারার অভিজ্ঞতা আছে। এ কারণেই শেষ নাটকীয়তা দেখার অপেক্ষায় সবাই।
৫ম বলে ছক্কা মারতে পারলেন না রিঙ্কু। মারলেন বাউন্ডারি। ১ রানের ব্যবধান তৈরি হয়ে গেলো। শেষ বলেও ছক্কা হাঁকালেন রিঙ্কু সিং। কিন্তু সেই ১ রানের ব্যবধানটাই শেষ পর্যন্ত থেকে গেলো। এই ১ রানেই হেরে যেতে হলো কেকেআরকে। ৩৩ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থেকেও পরাজিত দলে রিঙ্কু সিং।
জয়ের জন্য ১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই ছিলো কেকেআরের। জেসন রয় এবং ভেঙ্কটেশ আয়ার মিলে ৫.৫ ওভারে ৬১ রানের জুটি গড়ে তোলেন। ১৫ বলে ২৪ রান করে আউট হন ভেঙ্কটেশ আয়ার। এই জুটি ভাঙলে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে।
Advertisement
জেসন রয় আউট হন ২৮ বলে ৪৫ রান করে। নিতিশ রানা ৮ রানে আউট হয়ে যান। ১৫ বলে ১০ রান করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। রিঙ্কু সিংয়ের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে কিছুটা সম্ভাবনা জেগেছিলো কলকাতার। কিন্তু শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় সেটা আর সম্ভব হয়নি। তিনি ৬ বাউন্ডারি এবং ৪ ছক্কায় ৩৩ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
আন্দ্রে রাসেল ৭, শার্দুল ঠাকুর ৩, সুনিল নারিন ১ রানে আউট হন। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১৭৫ রানে থেমে যায় কেকেআর। পরাজয় ১ রানে। লখনৌয়ের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন রবি বিষনোই এবং যশ ঠাকুর। ১টি করে উইকেট নেন ক্রুনাল পান্ডিয়া এবং কৃষ্ণাপ্পা গৌতম।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে কিছুটা বিপদে পড়লেও শেষের দিকে নিজেদের সামলে নেয় লখনৌ সুপার জায়ান্টস। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় তারা।
৩ রান করে ওপেনার করন শর্মা আউট হয়ে যান। কুইন্টন ডি কক ২৭ বলে করেন ২৮ রান। ২০ বলে ২৬ রান করেন প্রেরন মাঁকড়। মার্কাস স্টোইনিজ কোনো রানই করতে পারেননি। ৯ রান করেন ক্রুনাল পান্ডিয়া।
২১ বলে ২৫ রান করেন আয়ুস বাদোনি। বিধ্বংসী ছিলেন নিকোলাস পুরান। ৩০ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৫টি ছক্কার মার মারেন তিনি। কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ৪ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন।
আইএইচএস/