জাতীয়

‘টেকসই উন্নয়নে নিরাপদ কর্মপরিবেশের বিকল্প নেই’

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর দেশে কর্মপরিবেশের কিছুটা উন্নয়ন হয়েছে। তারপরও অনেক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন শ্রমিকরা। এজন্য কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও পেশাগত নিরাপত্তায় আরও কাজ করতে হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের বিকল্প নেই।

Advertisement

শনিবার (২০ মে) এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। ঢাকার ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনিস্টিটিউশন অডিটোরিয়ামে (কেআইবি) এ সম্মেলন হয়। আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা (আইএলও), কানাডা এবং নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতায় সম্মেলনের আয়োজন করে ভলান্টারি সার্ভিসেস ওভারসিজ (ডিএসও) বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন: শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণে জাতীয় মানদণ্ড তৈরির দাবি

‘সবার জন্য স্বাস্থ্য ও পেশাগত নিরাপত্তা’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম খান।

Advertisement

তিনি বলেন, এ দেশের যুবকরা এখন সবচেয়ে বড় শ্রমশক্তি। নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরিতে তারা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। সরকারও তাদের সঙ্গে নিয়ে কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও পেশাগত নিরাপত্তায় কাজ করছে। এছাড়া আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে যেতে গেলে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা আর দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে চাই না। চাই নিজেদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে।

আরও পড়ুন: শ্রমিকদের নিরাপত্তা-কল্যাণ পোশাক শিল্পের প্রধান অগ্রাধিকার

আইএলও বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার নীরান রামজুধান বলেন, আইএলও’র হিসাবে বিশ্বে প্রতিদিন সাড়ে সাত হাজার মানুষ কর্মপরিবেশের অনিরাপত্তার কারণে মারা যায়। এরমধ্যে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর শ্রমিকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। আমরা দেখছি, বাংলাদেশে এখনো তরুণ ও যুবক শ্রেণি যাদের বয়স ১৫-২২ বছর তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

Advertisement

তিনি বলেন, এটা ঠিক যে শিশুশ্রম প্রতিরোধে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর সার্বিক নিরাপত্তায়ও বেশ উন্নতি হয়েছে। তারপরও বেশ কিছু অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে প্রচুর কাজ বাঁকি রয়েছে। কারণ প্রতিটি শ্রমিকের নিরাপদে ঘরে ফেরার অধিকার এখনো নিশ্চিত হয়নি।

শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান শেখ মেরিনা সুলতানা বলেন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। দেশে অনেক আইন রয়েছে শ্রমিক ও তাদের উন্নত কর্মপরিবেশের জন্য। তাদের এ অধিকারগুলো আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। যদিও এগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন এখনো সম্ভব হয়নি। কারণ আইনগুলো জানা ও সচেতনতার অভাব রয়েছে মালিক-শ্রমিক উভয়পক্ষের।

আরও পড়ুন: কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ ১৫ লাখ নির্ধারণের দাবি

অনুষ্ঠানে শ্রমিকের কর্মক্ষেত্র, স্বাস্থ্য ও সবুজ কারখানা নিয়ে দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া এসব বিষয়ে বিভিন্ন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন ছিল। সেখানে বিজয়ীদের দেওয়া হয় পুরস্কার।

ভিএসও বাংলাদেশ ১৯৭৪ সাল থেকে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, শ্রমিকের নিরাপদ কর্মক্ষেত্র তৈরি এবং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ডিএসও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর খবিরুল হক কামাল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক নাসির উদ্দিন আহমেদ।

এনএইচ/জেডএইচ/