দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেছেন, জ্বালানির অনুমানযোগ্য মূল্যের বিষয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকা অপরিহার্য। এ বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন।
Advertisement
আহসান খান চৌধুরী বলেন, কারখানা স্থাপন বিষয়ে আমরা প্ল্যানিং জানি না। আমাদের যদি প্ল্যানিংটা বলা হয়, যে অমুক জায়গা কারখানা হওয়া দরকার, আমরা সেখানে কারখানা করবো। আর যেখানে কারখানা হয়েছে সে বিষয়েও কোনো রিকমন্ডেশন (সুপারিশ) থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।
শনিবার (২০ মে) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘জ্বালানি নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা’ শীর্ষক স্টেকহোল্ডার ডায়ালগে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এসময় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন>> প্রাণ-এর শিল্পপার্ক পরিদর্শনে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান
Advertisement
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, অস্থিতিশীল বৈশ্বিক ভূ-অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সময়কালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা অন্যতম পূর্বশর্ত।
তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রাথমিক জ্বালানি উৎসে আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে এবং রাষ্ট্রায়িত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এগুলোর সংস্কার একান্ত অপরিহার্য।
ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, দেশের বেসরকারিখাতের উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়নে একটি পূর্ব অনুমানযোগ্য জ্বালানির মূল্য নীতিমালা একান্ত অপরিহার্য। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে জ্বালানি চাহিদা এবং সরবরাহের ভিত্তিতে ‘পাওয়ার সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান’ পুনঃসংশোধনের আহ্বান জানান তিনি।
এফআইসিসিআই সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, কার্যকর রোডম্যাপ এবং জ্বালানিপ্রাপ্তি ও ব্যবহার নিশ্চিতকরণ খুবই জরুরি।
Advertisement
আরও পড়ুন>> প্রাণ কৃষি ও কৃষককে স্মার্ট করার কাজ করছে
এসময় সামিট পাওয়ারের পরিচালক ফয়সাল করিম বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানিতে একটি সুনিদিষ্ট কর কাঠামো অনুসরণ দরকার।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, শিল্পখাতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে সরকারকে আরও কঠোর হওয়া দরকার। কারখানায় সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করেন তিনি।
ফারুক হাসান বলেন, আমাদের জ্বালানির দাম বেড়েছে, পানির দাম বেড়েছে, অন্যদিকে রপ্তানি শিল্পের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। আমাদের রপ্তানি ৪০ বিলিয়ন থেকে ৩০ বিলিয়নে এসেছে। বিদ্যুৎসংযোগের ক্ষেত্রে সিকিউরিটি বিল জমা নেওয়া হয়। কিন্তু এখন কেউ বকেয়া রাখে না, তাহলে কেন এ বিল রাখা হবে? এ সিকিউরিটি বিল অন্তত ৬ মাসের জন্য বন্ধ রাখা উচিত।
এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আমাদের অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে হবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ‘ইলেকট্রিক চার্জিং স্টেশন’ স্থাপনে এখনই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
ইএআর/ইএ/জেআইএম