বরিশাল আওয়ামী লীগের একক নিয়ন্ত্রক আবুল হাসানাত আবদুল্লার স্ত্রী সাহানারা বেগম ২০২০ সালের ৭ জুন ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাকে বরিশাল নগরীর মুসলিম গোরস্তানে দাফন করা হয়। পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে এতদিন মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত তার ভাবির কবরে যাননি। এমনকি কখনো কবর জিয়ারতও করেননি।
Advertisement
অবশেষে মান-অভিমান ভেঙে দীর্ঘ তিন বছর পর বড় ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লার স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেছেন মেয়র প্রার্থী। শুক্রবার (১৯ মে) বাদ জুমা নগরীর মুসলিম গোরস্থান জামে মসজিদে নামাজ আদায় শেষে তিনি সাহানারা বেগমসহ মান্নান দরবেশের কবর জিয়ারত ও সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদসহ আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত করেন।
আরও পড়ুন: বরিশাল সিটি নির্বাচন, আওয়ামী লীগের বিভক্তি গড়াচ্ছে ‘সংঘাতে’
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- বরিশাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনিচ উদ্দিনসহ তার কর্মী-সমর্থকরা।
Advertisement
আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, নানা কারণে খোকন সেরনিয়াবাতের সঙ্গে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছে। হাসানাতপুত্র সাদিক আবদুল্লাহ ২০১৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরে দুই পরিবারের মধ্যে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়।
অবশেষে সব মান-অভিমান ভেঙে খোকন সেরনিয়াবাত প্রথমবার শুক্রবার সাহানারা বেগমের কবর জিয়ারত করেছেন। তিনি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছোট ভাই এবং বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর চাচা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেরনিয়াত পরিবারের ঘনিষ্ঠরা জানান, ২০১৩ সালের দিকে বরিশালের সেরনিয়াবাত ভবনে অবস্থান করেন সাদিক। তিনি ২০১৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়ির সেরনিয়াবাত ভবনটি নিজের দখলে রেখেছেন। সেখানে এক দিনের জন্যও ঢুকতে পারেননি খোকন। বরিশালে দুয়েক দিন অবস্থানের প্রয়োজন হলে তিনি ওঠেন গোরস্তান রোডের তার শ্যালকের বাসায়।
আরও পড়ুন: খোকন অনুসারীরা চান না সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে আসুক
Advertisement
এদিকে সাদিককে বাদ দিয়ে মেয়র পদে খোকন সেরনিয়াবাতকে দলীয় মানোনয়ন দিলে চাচা-ভাতিজার এ দ্বন্দ্ব আরও প্রকট আকার ধারণ করে। নির্বাচনী সমাবেশে ভাতিজা সাদিক আবদুল্লাকে বিষদাগার করে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে চাচাকে।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও আবুল খায়ের আবদুল্লাহ অভিমান ভেঙে ভাবি শাহানারা বেগমের কবর জিয়ারত করেছেন, যা অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। এর মধ্য দিয়ে নিজের উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। এবার দুই পরিবারের মধ্যে কিছুটা হলেও দূরত্ব কমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
শাওন খান/এসজে/এমএস