দেশজুড়ে

সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু, তীরে ফিরেছেন জেলেরা

বঙ্গোপসাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আজ শনিবার থেকে। শুক্রবার (১৯ মে) দিনগত রাত ১২টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় বঙ্গোপসাগর ও সাগর মোহনা থেকে তীরে ফিরে এসেছেন ভোলার জেলেরা। তবে নিষেধাজ্ঞার এ ৬৫ দিন তাদের নামে বরাদ্দের চাল পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

Advertisement

সরেজমিন দেখা গেছে, ভোলার সদর উপজেলার শিবপুরের ভোলার খাল, দৌলতখান ও চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ঘাটে সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া জেলেরা তাদের ফিশিং বোট নিয়ে তীরে ফিরে আসছেন। তীরে পৌঁছেই তাদের ফিশিং বোটে থাকা মাছ শিকারের বিভিন্ন সরঞ্জাম উঠিয়ে কেউ বাড়িতে আবার কেউ মৎস্য আড়তদারদের হেফাজতে রাখছেন।

ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল এলাকার জেলে ইউসুফ মাঝি ও সলেমান মাঝি বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে তারা সাগর থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রওনা দেন। শুক্রবার সকালে ভোলার খাল ঘাটে পৌঁছান। এ নিষেধাজ্ঞার সময় তারা আর সাগরে মাছ শিকার করতে যাবেন না। তাই ফিশিং বোট থেকে মাছ শিকারের সব সরঞ্জাম উঠিয়ে বাড়িতে নিয়ে রাখছেন।

চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাট এলাকার সাগরে মাছ শিকার করা জেলে আরিফ মাঝি, শরীফ মাঝি ও আকবর মাঝি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার ৬৫ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা আমাদের ভালোর জন্যই দিয়েছে। এজন্য আমরা তীরে ফিরে এসেছি। তবে নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের আয়-রোজগার বন্ধ থাকবে। এতে আমাদের চলতে কষ্ট হবে। তারপরও আমরা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবো।’

Advertisement

নিষেধাজ্ঞার সময়ে কিস্তি আদায় বন্ধ ও বরাদ্দের চালের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ‘বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ফিশিং বোট তৈরি ও মাছ শিকারের মালামাল ক্রয় করেছি। এখন নিষেধাজ্ঞার কারণে আয় বন্ধ থাকবে। তাই এনজিওর কিস্তি দিতে পারবো না। সরকার যদি এ ৬৫ দিন এনজিওগুলোকে কিস্তি আদায় বন্ধে নির্দেশ দেয় তাহলে আমাদের জন্য খুবই ভালো হবে। এছাড়া আমাদের নামে বরাদ্দের চাল যদি দ্রুততম সময়ে বিতরণ করা হয় তাহলে স্ত্রী, সন্তানসহ দুমুঠো খেতে পারবো।’

এ বিষয়ে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফল করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। কেউ যদি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেন তাহলে তাদের আইনের আওতায় এসে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা বেকার হয়ে পড়বেন। তাই এনজিওর কিস্তি বন্ধের জন্য আমরা আলোচনা করেছি। জেলেরা যাতে দ্রুত চাল পায় সেজন্যও আমরা ব্যবস্থা নেবো।

জেলার সাত উপজেলায় সাগরে মাছ শিকার করা নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৯৫০ জন। এদের মধ্যে সব জেলেই এবছর নিষেধাজ্ঞার সময় ৮৬ কেজি করে চাল পাবেন।

Advertisement

জুয়েল সাহা বিকাশ/এসআর