প্রতিবছরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণ সংগঠক, উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবকের তালিকা প্রকাশ করে থাকে বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস। ‘থার্টি আন্ডার থার্টি’ নামের এই তালিকায় স্থান পান ৩০ বছরের কম বয়সীরা। যাতে বাংলাদেশি তরুণরাও থাকেন। এবারও ২০২৩ সালে এশিয়ার মধ্যে এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন সাত বাংলাদেশি।
Advertisement
আরও পড়ুন: ২৮ বছর বয়সেই সফল উদ্যোক্তা মুন্না
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) ফোর্বসের ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ করা হয়। যাতে দেখা যায়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ৩০ বছরের কম বয়সী সাত বাংলাদেশির নাম রয়েছে। তারা হলেন রুবাইয়াত ফারহান, তাসফিয়া তাসবিন, জাহ্নবী রহমান, আনোয়ার সায়েফ, সারাবন তহুরা, আজিজ আরমান এবং দীপ্ত সাহা।
রুবাইয়াত ফারহান ও তাসফিয়া তাসবিন
Advertisement
মিডিয়া, মার্কেটিং এবং বিজ্ঞাপন বিভাগে রয়েছে এই দুজনের নাম। তাদের তৈরি ‘মার্কোপলো ডট এআই’ দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করে থাকে। তাদের একটি অ্যাপ রয়েছে যা অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করা যায়। এর মাধ্যমে উদ্যোক্তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা প্রচার করতে পারে। ২০২২ সালে কোম্পানিটি ভেনচার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান ‘সিঙ্গাপুর ভিসি’ ফার্ম থেকে সাত লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ পায়।
আরও পড়ুন: করোনাকালে তরুণ উদ্যোক্তা, আস্থা অর্জনই চ্যালেঞ্জ
জাহ্নবী রহমান
ফোর্বসের তালিকায় সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট বা সামাজিক প্রভাব ক্যাটাগরিতে রয়েছে জাহ্নবী রহমানের নাম। তিনি বাংলাদেশের রিল্যাক্সি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকেন গ্রাহকরা। অর্থের বিনিময়ে ভার্চুয়াল থেরাপির ব্যবস্থা করে দেয় রিল্যাক্সি। জাহ্নবী রহমান কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর করেছেন। সম্প্রতি হুয়াওয়ের আইসিটি ইনকিউবেটর ২০২২-এ দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে এই অ্যাপ। এটি ১৫ হাজারের বেশি ব্যবহারকারী ডাউনলোড করেছেন।
Advertisement
আনোয়ার সায়েফ ও সারাবন তহুরা
এই দুই তরুণ উদ্যোক্তার নামও রয়েছে সামাজিক প্রভাব ক্যাটাগরিতে। তারা টার্টল ভেঞ্চার স্টুডিও’র প্রতিষ্ঠাতা। যা নতুন স্ট্যার্টআপদের অর্থায়ন, পরামর্শসহ বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক সুবিধা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সহায়তা করে টার্টল ভেঞ্চার। ২০১৮ সাল থেকে তারা ৯০ জনের বেশি উদ্যোক্তার সঙ্গে কাজ করেছে। সেই উদ্যোক্তারা পেয়েছে ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ। প্রযুক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর পাশাপাশি ‘ইয়ং টার্টল’ নামে একটি কর্মসূচি পরিচালনা করছে টার্টল ভেঞ্চার।
আরও পড়ুন: তরুণ উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় ইউনিলিভার-অরেঞ্জ কর্নারসের চুক্তি
আজিজ আরমান
এই তরুণ প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে প্রতিষ্ঠা করেন ‘যাত্রী’। গত বছর ‘যাত্রী’র মাধ্যমে রাজধানীতে চলাচলকারী পাঁচ হাজার ৬৫০টি বাসের জন্য ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করে বাসমালিকদের সংগঠন। যাতে করে ভাড়া নিয়ে যে নৈরাজ্য আছে তা দূর হয়। মূলত বাসে ন্যায্যভাড়া নিশ্চিত করার জন্য এটি একটি পদক্ষেপ। ২০২১ সালে ‘যাত্রী’ ১২ লাখ ডলার বিনিয়োগ পায়। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৫২ লাখ ৫০ হাজার ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে ‘যাত্রী’। আজিজ আরমানের নাম কনজ্যুমার টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে রয়েছে।
দীপ্ত সাহা
একই ক্যাটাগরিতে রয়েছে দীপ্ত সাহার নাম। তিনি ‘অ্যাগ্রোশিফট টেকনোলজিস’র সহপ্রতিষ্ঠাতা। যা কৃষি সরবরাহের চেইন প্ল্যাটফর্ম। ২০২২ সালে চালু হয় এটা। এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে টাটকা পণ্য কিনতে পারেন।
জেডএইচ/জেআইএম