হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতো কড়া হেডমাস্টার আছেন। মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, হাবিবুল বাশার আর আব্দুর রাজ্জাকের গড়া নির্বাচক প্যানেলও আছে। তারপরও ভাবা হয়, তিনি-মানে নাজমুল হাসান পাপনই শেষ কথা। যদিও তিনি নির্বাচক নন।
Advertisement
আনুষ্ঠানিকভাবে খেলোয়াড় নির্বাচন ও দল সাজান না বিসিবি সভাপতি। শুধু দল হওয়ার পর চূড়ান্ত অনুমোদনটা তিনি দেন। তবে তার সই করা ছাড়া কোনো জাতীয় দলই ঘোষিত হয় না। তাই ধরা হয়, দল নির্বাচনে নাজমুল হাসান পাপনই সর্বেসর্বা।
বিসিবি প্রধানের সম্ভাব্য বিশ্বকাপ স্কোয়াড কি? নাজমুল হাসান পাপনের চোখ কাদের ওপর স্থির? কোন ১৫ ক্রিকেটার তার বিশ্বকাপ দলে থাকতে পারেন? তা জানতে যাদের রাজ্যের কৌতুহল, তাদের জন্য আছে সুখবর।
সরাসরি না হলেও বিসিবি সভাপতি আজ ১৮ মে বৃহস্পতিবার পড়ন্ত বিকেলে টিম বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিশ্বকাপ স্কোয়াড সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা দিয়ে দিয়েছেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার শেরে বাংলায় বিশেষভাবে সক্ষমদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে পাপন বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়ে কথা বলেন।
বিসিবি সভাপতির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী-তামিম ইকবাল, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়-এই ৬ জন বিশ্বকাপ দলে নিশ্চিত। সাথে মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, এবাদত হোসেনের দলে থাকাও প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করছেন পাপন।
তাদের সঙ্গে আর কারা কারা থাকতে পারেন? তা নিয়েও আছে বিস্তর ব্যাখ্যা পাপনের। তিনি কথা পেতেছেন খুব কায়দা করে। পুরো স্কোয়াড সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিসিবি প্রেসিডেন্ট প্রথমে সাংবাদিকদের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে দেন।
‘আপনাদের সবার কাছে কিন্তু একটা করে দল চাইব বিশ্বকাপের, স্কোয়াড না একদম একাদশ দিতে হবে কিন্তু’-গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ব্রিফিং শেষ করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় এমন কথা বললেন নাজমুল হাসান পাপন।
Advertisement
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিশ্বকাপ দলে থাকা না থাকা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে কিছুটা রসিকতার স্বরেই একাদশ চেয়ে বসেন তিনি। পাপন যোগ করেন, ‘এখন ক্রিকেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব হচ্ছে মিডিয়া। এটাতে আমরা খুশি। আপনারা এত বেশি সম্পৃক্ত, এটা আমাদেরও সাহায্য করে। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়েও আমরা খুশি, কিন্তু ওখানে অনেকে মনে হয়েছে ক্রিকেট নিয়ে কোনো ধারণাই নেই, কিন্তু মন্তব্য করেই যাচ্ছে।’
‘আপনারা এখানে যারা আছেন তারা ক্রিকেট সম্পর্কে প্রত্যেকেই...আমার চেয়ে বেশি জানেন এমন বহু লোক আছে। আমি চিন্তা করছি আপনাদের কাছে নাম চাইব যে, সেরা একাদশ তৈরি করে দেন। তারপর দেখি আপনারা কী বলেন। এটা হলে ভালো হয় না? জানতে তো পারলাম। আপনারা কি মনে করেন, কাকে খেলানো উচিত।’
এরপর সম্ভাব্য স্কোয়াড নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন পাপন, ‘আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন তামিম, লিটন, শান্ত, হৃদয়, মুশফিক, সাকিব। এই ছয়জনের মধ্যে কাউকে তো আপনারা বাদ দিবেন বলে মনে হয় না। ওপেনিংয়ে নাইম শেখ ও বিজয় ভালো পারফর্ম করছে, তারাও আসতে পারে। কী আসবে, আমি জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ বলছি। আমার ধারণা ওপেনিংয়ে (বাড়তি) একজনকে তারা নেবে। ইনজুরির জন্য ব্যাকআপ লাগবে।’
এরপর পেস বোলার প্রসঙ্গে পাপন বলে ওঠেন, ‘আমার ধারণা তিনটা পেসার খেলবে নিশ্চিত। সাকিব যদি খেলে একটা স্পিনার খেলবে। পাঁচটা বোলার ছাড়া তো বিশ্বকাপে খেলবেন না। হাসান মাহমুদ আছে, তাসকিন, শরিফুল, এবাদত, মোস্তাফিজ আছে। যে কেউ খেলতে পারে। চারজন পেসারও খেলতে পারে। যদি তিনজন স্পিনার নিয়ে খেলে তাহলে মানে ছয়টা বোলার নিয়ে খেলতে চায় তাহলে বাড়তি স্পিনার লাগবে। বাড়তি থাকে একটা জায়গা সেখানে আছে মেহেদি হাসান মিরাজ। আমার মনে হয় না কেউ বলবে মিরাজকে বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে বাদ দেয়া উচিত।’
ঠিক এরপর বিসিবি সভাপতি মিডল অর্ডার তথা সাত নম্বর পজিশন নিয়ে কথা বলেন। তার ব্যাখ্যা, ‘কোনো কারণে পাঁচ বোলার নিয়ে খেললে একটা সুযোগ আসে একজন বাড়তি ব্যাটার খেলানোর। ওখানে এখন স্কোয়াডে আছে রাব্বি। স্কোয়াডে নাই কিন্তু যেকোনো সময় ঢুকতে পারে আফিফ, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক। যদি আমি পাঁচ বোলার নিয়ে খেলি, কোন কারণে একটা বোলার চোটে পড়লে ম্যাচে মধ্যে তাহলে বলটা করবে কে? এজন্য অলরাউন্ডার পেলে ভালো হয়। আল্টিমেটলি নান্নু (প্রধান নির্বাচক) কি করবে আমি জানি না, আমি আমার কথা বলছি।’
রিয়াদের মত অভিজ্ঞ পারফরমারকে বিশ্বকাপের মতো আসরে নিয়ে বসিয়ে রাখা কি ঠিক হবে? এ প্রশ্নের জবাবে পাপন বলেন, ‘ওই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে আফিফ, মাহমুদউল্লাহ দুজনেরই ব্যাটিং অনুযায়ী থাকতে পারে। রাব্বি চোট থেকে আসার পর তেমন কোনো পারফরম্যান্স করেনি। আপনি যদি বোলিংয়ে চিন্তা করেন; এখানে এগিয়ে থাকবে আফিফ, মোসাদ্দেক। মাহমুদউল্লাহও করতে পারে। ফিল্ডিংও যদি চান, তাহলে আমার মনে হয় আফিফ ওদের উপরে। তারপরও মোসাদ্দেকও রিয়াদের চেয়ে ভালো হতে পারে।’
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস