মতামত

চাই সুদূরপ্রসারী দৃষ্টির প্রতিফলন

প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ এক সময় স্বপ্ন থাকলেও এখন তা বাস্তবতা। শুধুই তাই নয় দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হচ্ছে হাইটেক পার্ক। এতে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে দেশ যেমন আরও এগিয়ে যাবে তেমনি বাড়বে কর্মসংস্থানও। তবে এই পার্ক নিয়ে পরিবেশবিদরা চিন্তিত। তারা বলছেন যাতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয় পার্ক নির্মাণের সময় সেটি দেখতে হবে। এবার এ ধরনের নির্দেশনা আসলো খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে।  দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণাধীন হাইটেক পার্কগুলোর কারণে সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশের যেন ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার হাইটেক পার্ক বোর্ড অব গভর্নরসের প্রথম সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। নানা কারণেই পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। এরমধ্যে প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোও যুক্ত হয়েছে। আইটি বর্জ্য সারা পৃথিবীর পরিবেশের জন্যই এক বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশকেও এ সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে। কারণ যে হারে প্রযুক্তি পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে সে হারে বাড়বে প্রযু্ক্তি বর্জ্যও। এ বিষয়ে এখনই সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোতে হবে। পরিবেশ সচেতনতার এ যুগে পরিবেশ দূষণবন্ধে কার্যকর পদক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই। খালবিল-নদীনালা দখল হয়ে যাচ্ছে। ঢাকার চার পাশের নদীগুলোর অবস্থা সঙ্গীন। ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গার পানি এতোটাই দূষিত হয়েছে যে পানির রং পাল্টে গেছে। এই পানিতে কোনো মাছ বা এ জাতীয় প্রাণির বেঁচে থাকায়ই দায় হয়ে পড়েছে। এছাড়া সুন্দরবনের শ্যালা নদীর ওপর দিয়ে নৌযান চলাচলের কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে সাম্প্রতিক সময়ে যে পরিবেশ দূষণের ঘটনা ঘটেছে এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্যালা নদীতে নৌযান বন্ধের জোরালো দাবি করে আসছে পরিবেশবিদরা। এ ব্যাপারেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া সুন্দর বনের কাছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কারণে এই ম্যানগ্রোভ বন ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনিতেই জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত হুমকির মুখে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যেতে পারে। এসব দিক বিবেচনায় পরিবেশ রক্ষায় আন্তরিক হতে হবে। সেটা হাইটেক পার্ক, বিদ্যুৎকেন্দ্র, নদীদখল, সুন্দরবন রক্ষাসহ যে কোনো বিষয়েই হোক না কেন। এইচআর/আরআইপি

Advertisement