কৃষি ও প্রকৃতি

চিনাবাদামের বাজারমূল্য ৩২ কোটি টাকা

দিগন্তজোড়া সবুজ মাঠ। দক্ষিণা বাতাসে দোল খাচ্ছে চিনাবাদাম গাছ। ক্ষেতের এক প্রান্ত থেকে এসব গাছ উপড়ে মাটির নিচ থেকে বাদাম বের করছেন কৃষকেরা। আবার কেউবা সেই বাদাম প্রখর রোদের মধ্যে শুকিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। বলছিলাম হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের কথা। এ বছর ভাটির জেলায় চিনাবাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে মাঠে মাঠে বাদাম তোলায় ব্যস্ত চাষিরা।

Advertisement

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে ১ হাজার ৭২৬ হেক্টর জমিতে চিনাবাদামের আবাদ হয়েছে। যেখান থেকে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন বাদাম উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য ৩২ কোটি টাকা। গত বছরের ১৬ জুন ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জে ১০০ হেক্টর বাদাম বানের পানিতে তলিয়ে যায়। যার বাজারমূল্য ছিল ১ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে নিরাপদ মুগডাল উৎপাদন

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা গ্রামের কৃষক খুদেজা বেগম। গত বছরের ১৬ জুনের ভয়াবহ বন্যায় খুদেজার সব বাদাম তলিয়ে যায়। পরে ধার-দেনা করে সংসার চালাতেন তিনি। চলতি মৌসুমে চড়া সুদে টাকা এনে দুই একর জমিতে বাদাম চাষ করেন। সেই বাদামের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি তিনি।

Advertisement

শুধু খুদেজা বেগম নন, কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় সুনামগঞ্জে ৬ হাজার কৃষক বাদাম চাষ করেছেন। অন্য বছরের তুলনায় বাদামের ফলন ভালো হওয়ায় বন্যা ও বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই মাটির নিচ থেকে তুলে শুকিয়ে দ্রুত ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তবে ফলন ভালো হলেও দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।

চাষি আমির মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছর একটা বাদামও ঘরে তুলতে পারিনি। সব বাদাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ বছর বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করি এ বাদাম বিক্রি করে আমরা লাভবান হবো।’

আরও পড়ুন: থাই পেয়ারা চাষে সফল নাটোরের দুই ভাই

আফরোজ আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর বাদামের বাম্পার ফলন হলেও দাম পাওয়া নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। বাজারে বাদামের দাম ভালো পেলে আমরা লাভবান হবো।’

Advertisement

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর সুনামগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০০ হেক্টর বেশি বাদামের ফলন হয়েছে। চাষিরা বাজারদরও ভালো পাবেন বলে আশা করি।’

লিপসন আহমেদ/এসইউ/এএসএম