ক্যাম্পাস

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে খাবারের দাম-রিকশা ভাড়ায় নৈরাজ্য

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চলছে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিপরীক্ষা। চলতি বছর রেকর্ড ২ লাখ ৫৬ শিক্ষার্থী চবিতে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন। গত সোমবার (১৫ মে) থেকেই ক্যাম্পাসে হাজারো ভর্তিচ্ছুর আনাগোনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

আর এই সুযোগে ইচ্ছামতো খাবারের দাম ও রিকশা ভাড়া আদায় করছে অসাধু ব্যবসায়ী এবং রিকশাচালকরা। এতে দূর থেকে আসা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন।

জানা গেছে, ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে খাবারের দাম ও যানবাহনের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তা মানতে নারাজ ক্যাম্পাসের হোটেল ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ক্যাম্পাসের রিকশাচালকরা নির্ধারিত ভাড়ার থেকে কয়েক গুণ বেশি চাচ্ছেন নবাগতদের থেকে। বেশি ভাড়া না দিলে কোনো চালকই যেতে রাজি হচ্ছেন না। তাই অসহায় হয়ে অতিরিক্ত মূল্যেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে ভর্তিচ্ছুদের।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত রিকশা ভাড়া ৩০ টাকা। কিন্তু এখন চাওয়া হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকা। জিরো পয়েন্ট থেকে যে কোনো ছাত্রী হলের ভাড়া ১৫ টাকা। তা এখন হয়ে গেছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। এভাবে প্রতি গন্তব্যে ৫০ থেকে ৬০ টাকা ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছেন চালকরা। অন্যদিকে, শহর থেকে ক্যাম্পাসে বাস মালিক সমিতি নির্ধারিত ৩ নম্বর বাসে ভাড়া ২০ টাকা এবং দ্রুতযানে ৪০ টাকা। সেই ভাড়া এখন নেওয়া হচ্ছে ৪০ এবং ৬০ টাকা করে।

Advertisement

জামালপুর থেকে আসা এক অভিভাবক জাগো নিউজকে বলেন, রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে নামি। সিএনজি না পেয়ে রিকশাকে জিজ্ঞাসা করি খালেদা জিয়া হলে যাবে কি না। তিনি ১৫০ টাকার নিচে যাবেন না। পরে ১৪০ টাকায় আসতে রাজি হয়। আসার পর শুনি প্রকৃত ভাড়া মাত্র ৪০ টাকা।

রোজাইন রাফি নামে এক চবি শিক্ষার্থী তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, দুই নম্বর গেট থেকে জিরো পয়েন্ট রিকশা ভাড়া চাচ্ছে ৬০ টাকা। এর নিচে একজন রিকশাচালকও যেতে রাজি হচ্ছেন না। অথচ রেগুলার ভাড়া ১৫ টাকা। প্রশাসন নিশ্চুপ থাকার কারণে এরকম গলাকাটা মূল্য ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে।

এদিকে, ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে খাবারের দামও বেড়েছে সমানতালে। বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত বিরিয়ানির দাম ১২৫ টাকা হলেও হোটেলে রাখা হচ্ছে ১৫০ টাকা। ৭০ টাকার মুরগি ৯০ টাকা এবং ৬৫ টাকার মাছ ৮০ টাকা।

ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থী বলেন, আমানত হলের সামনের এক হোটেলে দুপুরের খাবার খাই। বিরিয়ানির দাম রেখেছে ১৫০ টাকা করে। অথচ চার্টে দেওয়া ১২০ টাকা। আমি এটার কারণ জিজ্ঞাসা করলে দোকানদার বলে, ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে তারা মান বাড়াচ্ছে তাই দাম বেশি। অথচ বিরিয়ানিতে স্বাদের কোনো ছিটেফোঁটাও ছিল না। মুরগির টুকরাও ছিল ছোট।

Advertisement

চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার জাগো নিউজকে বলেন, হোটেলগুলোতে খাবারের চার্ট দেওয়া আছে। এর বেশি রাখতে পারবে না। এ বিষয়ে তাদের কড়াভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। যেসব হোটেলে বেশি রাখছে অভিযোগ পাচ্ছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, রিকশা ভাড়াও নির্ধারিত করা আছে। যদি কেউ বেশি রাখে তার ছবি তুলে রাখবেন। আমরা ব্যবস্থা নেবো।

আহমেদ জুনাইদ/এমআরআর/এএসএম