বাজারে গো-খাদ্যের দাম বাড়ছে। এতে লোকসানের মুখে পড়ে অনেক খামারি ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে গবাদি পশুর সংখ্যা কমে আসায় চাহিদার বিপরীতে দুধ উৎপাদনও হুমকির মুখে পড়েছে।
Advertisement
গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় যশোরের শার্শায় একের পর এক খামার বন্ধ হচ্ছে। দুধ উৎপাদন এবং গরু মোটাতাজাকরণে কয়েক বছর ধরেই বেশ সাফল্যের সঙ্গে চলছিল এখানকার খামার ব্যবসা। দুগ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিতি বাড়ায় এখানে দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রও গড়ে ওঠে। মিল্কভিটার দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র দুই শতাধিক খামারির কাছ থেকে দৈনিক গড়ে দুই হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করছিল। কিন্তু সম্প্রতি ভুষি, বাইপ্রো, গম, চালের খুদ, চালের পালিস, খৈলসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ৬ মাস আগে যে খামারে ৭০০ গরু ছিল সেই খামারিরা কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ২০০ গরু লোকসানে বিক্রি করছেন।
খামারিদের অভিযোগ, বাজার মনিটরিং না থাকায় মুনাফালোভীরা ইচ্ছামতো গো-খ্যাদ্যের দাম বাড়িয়ে চলেছে।
এক খামারি বলেন, ৬ মাস আগে এক বস্তা ভুষি কিনেছিলাম ১ হাজার ৭৫০ টাকায়। এখন তার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩০০ টাকা। বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দিন দিন গো-খাদ্যের দাম বাড়ছে।
Advertisement
আরেক খামার ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা মো. নাসির উদ্দীন বলেন, আমার খামারে ৭০০ গরু ও ১০০ কর্মচারী ছিল। তবে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমি ২০০ গরু বিক্রি করে দিয়েছি।
এদিকে খামারিদের গরু বিক্রি করে দেওয়ার কারণে দেখা দিয়েছে দুধের ঘাটতি।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, খামারিদের গরু বিক্রি করে দেওয়ার কারণে এই এলাকায় দুধ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব মিল্কভিটাতেও পড়েছে।
অন্যদিকে বর্তমান সংকট মোকাবিলায় খামার ব্যবসায়ীদের ঘাসচাষ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন যশোরের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘কাঁচা ঘাস উৎপাদন করলে খাদ্যের দাম সহনীয় পর্যায় চলে আসবে। যার ফলে তাদের উৎপাদন খরচ কমে আসবে।’
যশোরের শার্শায় বর্তমানে ৮৮ হাজার ৭৩৪টি গরু রয়েছে। আর লোকসানে পড়ে এরইমধ্যে খামারিরা বিক্রি করেছেন প্রায় ২০ শতাংশ গরু।
এফএ/জিকেএস