আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০, নিখোঁজ শতাধিক

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে বাংলাদেশে কোনো প্রাণহানি না হলেও প্রতিবেশী মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়েছে। স্থানীয় নেতা ও জান্তা-সমর্থিত মিডিয়ার বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মিয়ানমারে মোখার আঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা ৬০ জনে পৌঁছেছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক মানুষ। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

গত রোববার (১৪ মে) ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলে আছড়ে পড়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। এতে বাংলাদেশে ১২শ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে বড় ক্ষতিটা হয়েছে মিয়ানমারে। সেখানে অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে, মাছ ধরার নৌকা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বহু এলাকা।

আরও পড়ুন>> সেন্টমার্টিনে ১২৫০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, ভাঙলো ৪ শতাধিক নারকেলগাছ

রাখাইনের নেতারা জানিয়েছেন, রাজ্যটিতে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বু মা এবং নিকটবর্তী খাউং ডোকে কার গ্রামে অন্তত ৪১ জন মারা গেছেন।

Advertisement

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি জানিয়েছে, রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ের উত্তরে রাথেদাউং এলাকার একটি গ্রামে মঠ ধসে ১৩ জন নিহত হয়েছেন এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামে একটি ভবনধসে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

বু মা গ্রামের প্রধান কার্লো বলেছেন, শতাধিক লোক নিখোঁজ থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন>> মোখার হুঙ্কার উপেক্ষা করে সাগরবিলাস!

ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারিয়েছে ৬৬ বছর বয়সী আ বুল হু সনের মেয়ে। মঙ্গলবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়ের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে হু সন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আগে আমার শরীর ভালো ছিল না। তাই অন্যত্র যেতে বিলম্ব হয়ে যায়। আমরা সরে যাওয়ার কথা ভাবতে ভাবতেই ঢেউ এসে আমাদের টেনে নিয়ে যায়।

Advertisement

এএফপি সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, হু সনের মতো আরও অনেকে ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের খুঁজতে সমুদ্রতীরে হেঁটে বেড়াচ্ছেন।

জান্তা-নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গত সোমবার পাঁচজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল। তবে বিস্তারিত জানানো হয়নি।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এ এলাকায় আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ছিল মোখা। এর আঘাতে বিশাল এলাকা তছনছ হয়ে গেছে, রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ অংশে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন>> মোখা রেখে গেছে ক্ষত, দুর্ভোগে কয়েক হাজার মানুষ

জাতিসংঘের শরণার্থী অফিস বলেছে, তারা ঝড়ের আঘাতে রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাসকারীদের মৃত্যুর খবর তদন্ত করছে।

তবে রোহিঙ্গা গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তাদের কাছে কোনো ধরনের সহায়তা পৌঁছায়নি।

বাসারা গ্রামের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী কিয়াও স্বর উইন বলেন, কোনো সরকার, কোনো সংস্থা আমাদের গ্রামে আসেনি। আমরা দু’দিন ধরে কিছু খাইনি... আমরা কিছুই পাইনি। বলতে পারি, কেউ জিজ্ঞাসা করতেও আসেনি।

সূত্র: এনডিটিভিকেএএ/