দেশজুড়ে

শখের ছাদবাগানে আঙুরের সমাহার

শখের বশে বাসার ছাদে বাগান করেছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা বিসিক এলাকার সজীব চৌধুরী। বাগানের জন্য বেছে নিয়েছিলেন পছন্দের ফল আঙুরের চারা। সেই বাগানে এখন প্রায় ৭০-৮০টি গাছ রয়েছে। যার মধ্যে আঙুর গাছের চারাই বেশি। সজীবের শখের বাগানে প্রায় ৩৫ জাতের আঙুর গাছ রয়েছে।

Advertisement

বাগানের প্রতিটি গাছেই থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। বাণিজ্যিকভাবে আঙুরের ফলন না হলেও বাসার চাহিদা মেটানো হচ্ছে এই বাগান থেকে। অনেক সময় আত্মীয়স্বজনদের উপহার হিসেবেও দেওয়া হচ্ছে আঙুর।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফতুল্লা বিসিক এলাকার শহীদুল ইসলামের চারতলা ভবনের ছাদে সজীব চৌধুরী এই বাগান গড়ে তুলেছেন। শহীদুল ইসলাম তার ভগ্নিপতি। সেই সুবাদে তার বাসার ছাদে বাগান করেছেন সজীব। বাগানে আঙুর ছাড়াও রয়েছে আনার গাছ, আম, আমলকি, পমেলো ও বারমাসি কাঁঠালসহ দেশি-বিদেশি প্রায় ২০ থেকে ২৫ রকমের ফলের চারা।

এসব ফলের চারায় বাসার ছাদটি সবুজে ছেয়ে গেছে। আঙুর গাছগুলোর ডালে ডালে ঝুলছে আঙুরের থোকা। বাগানটি দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় প্রতিনিয়ত তা দেখতে শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষজন ছুটে আসছেন। অনেকে আবার বাগান তৈরিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

Advertisement

সজীব চৌধুরী বলেন, মূলত শখের বসেই বাগান শুরু করেছিলাম। আমার এই বাগান করার বয়স ৬ বছর। প্রথমদিকে কোনো স্থায়ী বাগান করতে পারিনি কারণ আমি প্রবাসী ছিলাম। প্রবাসে থাকা অবস্থায় বাগান করার চেষ্টা করা হলেও সেটা সম্ভব হয়ে উঠছিল না। তবে প্রবাসে থাকার সময় বাগান সংক্রান্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতাম। তখন থেকেই মনে মনে বাগান করার ইচ্ছা ছিল।

তিনি বলেন, যখন স্থায়ীভাবে দেশে আসার চিন্তা করি তখন বাগান করার সিদ্ধান্ত নিই। সেইসঙ্গে আমার পছন্দের ফল আঙুরকে বেছে নিই এবং আঙুরের বাগান করার সিদ্ধান্ত নিই। এ সময় দেশের বাইরে থাকা কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষির কাছ থেকে আঙুর গাছের চারা সংগ্রহ করেছি। নিউক্রেন, ইতালি, তুরস্ক ও জাপান থেকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে আঙুর গাছের চারা সংগ্রহ করেছি। একটা দুইটা করে সংগ্রহ করতে করতে ১৬৩ জাতের আঙুর সংগ্রহ করেছি আমি।

আঙুরের বাগান করতে চাইলে করণীয় প্রসঙ্গে সজীব বলেন, কেউ যদি বাগান করতে চায় সে বাগান করতে পারে। আঙুর বাগানই করতে হবে এমনটা নয়। আঙুর বাগান করেও লাভবান হওয়া যাবে। নিজস্ব যত্নে বাসার ছাদে কিংবা আঙিনায় করতে পারেন। বাংলাদেশে আঙুরের ভালো ফলন হচ্ছে। আঙুরের জন্য তিনবছর অপেক্ষা করতে হবে। তিন বছর অপেক্ষার পর ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, আমার কাছে সংগ্রহ এত পরিমাণ হয়েছে যেগুলো এখন বিস্তার করার চেষ্টা করছি। সে লক্ষ্যে ফেসবুকে সাজ গার্ডেন নামে একটি গ্রুপ খোলা হয়েছে। আমাদের এই গ্রুপে অনেক বাগানি রয়েছেন। তারা অনেকেই আমাদের এখান থেকে বিনামূল্যে এসব জাত সংগ্রহ করছেন। বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগুলো উপহার দিয়ে আসছি।

Advertisement

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার তাহমিনা আক্তার রিনা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি খবর নিয়ে দেখছি। যদি তার আঙুর ভালো হয় তাহলে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করবো। এতে আঙুরের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম জাগো নিউজকে বলেন, আঙুর আমাদের দেশে অনেক আগে থেকেই উৎপাদন হয়। তবে মিষ্টি না হয়ে টক হয়ে যায়। এখানে যে আঙুর চাষ করা হচ্ছে সেটা নাকি মিষ্টি। যদি এটা মিষ্টি হয় তাহলে খুবই ভালো। আমি নিজে এ বিষয়ে সজীব চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলবো।

এফএ/এমএস