খেলাধুলা

মিডল অর্ডারে ৬-৭ অপশন, একজন বেছে নেওয়া সহজ না!!

জাতীয় দলের আয়ারল্যান্ড মিশন শেষ। তামিম বাহিনী সব প্রতিকূলতা ও অনভ্যস্ততাকে অতিক্রম করে আইরিশদের ২-০ তে (বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে প্রথম ম্যাচ) হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ অনায়াসে জিতে দেশে ফিরে আসছে।

Advertisement

সামনের দুই সপ্তাহ কোনো অ্যাসাইনমেন্ট নেই। প্র্যাকটিসও নেই। ক্রিকেটাররা থাকবেন ছুটির আমেজে। কোচিং স্টাফদের অখণ্ড অবসরে কাটবে এ মাসের বাকি কটাদিন।

শুধু ব্যস্ত থাকবেন নির্বাচকরা। তাদের সামনে অনেক কাজ। জুনের প্রথম ভাগে আসবে আফগানিস্তান। আফগানদের সঙ্গে ঘরের মাঠে সিরিজের জন্য দল সাজানো, তারপর এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপের মাস খানেক আগে নিউজিল্যান্ডও আসার কথা। কাজেই মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, হাবিবুল বাশার ও আব্দুর রাজ্জাকদের অবসর নেই। তাদের দল সাজানোর কাজে কাটবে ব্যস্ত সময়।

যদিও আফগানিস্তানের সঙ্গে হোম সিরিজ আর এশিয়া কাপ আগে, বলা হচ্ছে এশিয়া কাপে যে দলটি খেলবে, সেটাই হবে বিশ্বকাপের দল। তার মানে এখনো সময় আছে বেশ। তারপর ক্রিকেট অনুরাগি, ভক্ত ও সমর্থকদের রাজ্যের কৌতূহল, কেমন হবে বিশ্বকাপের দল?

Advertisement

১৫ জনের দলে কজন ব্যাটার থাকবেন? ভারতের মাটিতে খেলা, পেসার ও স্পিনারের সংখ্যাই বা থাকবে কজন করে? মিডল অর্ডারে কাকে কাকে বিবেচনা করা হবে? তা নিয়ে আগ্রহটা বেশি। সেখানে আছেন এক ঝাঁক প্রতিষ্ঠিত পারফরমার।

আয়ারল্যান্ডে সঙ্গে সিরিজে দলের সঙ্গে না থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নুরুল হাসান সোহান আর ইয়াসির আলী রাব্বির নাম শোনা যাচ্ছে। শেষপর্যন্ত তাদের কজন বিবেচনায় আসবেন?

টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকরা কাকে বা কাদের বেছে নেবেন? সেটাই দেখার।

জাতীয় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মনে করেন, মিডল অর্ডারে ৬ থেকে ৭ টি অপশন আছে। তাদের মধ্য থেকে পছন্দ করা সহজ কাজ না। আজ সোমবার লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাকিব বলেন, জাতীয় দলের মিডল অর্ডারে একটা জায়গার জন্য ৬ থেকে ৭ জনের অপশন। তাদের মধ্য থেকে এক বা দুজনকে বেছে নেওয়ার কাজটা খুব সহজ না।’

Advertisement

সাকিব যোগ করেন, আমি যদি ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বলি প্রতিযোগিতা কিন্তু একজনের না, বেশ অনেকজনের। প্রতিটা খেলোয়াড়ই ওইখানে পারফর্ম করছে। যদি ঘরোয়া ক্রিকেট দেখেন আফিফ আছে ওইখানে, মোসাদ্দেক, সোহান, রিয়াদ ভাই অসাধারণ খেলেছেন, দলের সঙ্গে রাব্বি আছে, মিরাজ সাতে ব্যাটিং করছে। আমি আসলে নির্বাচক না, ডিসিশন মেকিংয়ের অংশও না। আমার জন্য বলা মুশকিল। কিন্তু দল নিয়ে আমি খুশি এবং নিশ্চিত। যারাই এ দলে থাকবেন তারা তাদের জায়গা থেকে ১৭ কোটি মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করবেন এবং বাংলাদেশের জন্য সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

সাকিবের ধারণা, আমি নিশ্চিত বিশ্বকাপের জন্য কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ মাথায় রেখে নির্বাচক, অধিনায়ক, কোচ সঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন।’

সাকিবের অনুভব, এখন সবই প্রাথমিক পর্যায়। এখানে যে ভুলগুলো হচ্ছে কিংবা যে ভালো জিনিসগুলো হচ্ছে এসবই বিশ্বকাপ বা এশিয়া কাপ থেকে ঠিক হওয়া শুরু হবে। আমাদের সামনে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচও নেই। আমি নিশ্চিত কোচ, অধিনায়ক এসব চিহ্নিত করেন। তারা খুবই ভালো চিন্তা করে যে কোন জায়গাতে আরও ভালো করলে আরও একটু ভালো হতো। আমি নিশ্চিত কখনই কোনো দলের নেতা, দেশের প্রধান দেশের জন্য বা দলের জন্য খারাপ চায় না। তাদের ইনটেনশন কখনই খারাপ থাকে না। সিদ্ধান্ত ঠিক, ভুল সবই হতে পারে।’

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনা কতটা? কি করলে পারফরমেন্স ও ফল ভালো হতে পারে?এমন প্রশ্নর জবাবে সাকিব বলেন, আইসিসির টুর্নামেন্টে কন্ডিশন সবসময় ফেয়ার থাকে। সব দলের জন্যই ব্যাপারগুলো একই রকম। আমাদের সবকিছুই ভালো করতে হবে, ভালো রেজাল্ট করতে হবে। সবশেষ বিশ্বকাপে আমাদের ভালো সুযোগ ছিল সামান্য কিছু কারণে হয়তো সফল হতে পারিনি। আমরা যেন ওই ভুলগুলো না করি সেটা নিশ্চিত করতে হবে। অবশ্যই অন্যান্য দলগুলো তাদের জায়গা থেকে উন্নতি করছে, আমাদেরও উন্নতি করতে হবে, তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে।

সাকিবের শেষ কথা, আসলে আমরা যখন রেজাল্টের পরে কথা বলি তখন বোঝা যায় ঠিক ও ভুল। সিদ্ধান্তটা আগে হয়, রেজাল্টটা হয় পরে। আমি নিশ্চিত কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক, সিদ্ধান্ত প্রণেতা যারা আছেন সবাই ভালো চিন্তা করবেন। যখন আমরা বিশ্বকাপ যাবো তখনই আমাদের আসল কম্বিনেশনটা তৈরি হবে দল, প্রতিপক্ষ কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করে। কোনো মাঠ আছে চার পেসার খেলতে হবে, কোনো মাঠে দুই পেসার খেলবে, কোনো মাঠ আছে ৬ জন বোলার নিয়ে খেলতে হবে পারে আবার কোনো মাঠে পাঁচজন বোলারই যথেষ্ট। যখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখন অনেক কিছুই আসলে চিন্তা করতে হয়। এখন এগুলো শুধু ট্রায়াল চলছে।’

এমএএইচ/