এবার ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে রাজধানীর আফতাবনগরে গরুর হাট না বসানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে।পরিবেশ সংরক্ষণের দাবিতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সোমবার (১৫ মে) জনস্বার্থে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটের বিষয়ে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী নিজেই।
Advertisement
রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়।
এর আগে গত ২ মে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) পক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহে আলমের সই করা সম্পত্তি বিভাগ ইজারা/বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র ঘোষণা করেন। দরপত্রে ঈদুল আজহার দিনসহ পাঁচ দিন গরুর হাটের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে প্রথম পর্যায়ে দরপত্র বিক্রি ১৫মে, আর ১৬ মে সাড়ে ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পযর্ন্ত। এভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পযার্য়ে দরপত্র বিক্রির পর ১৯ জুন পযর্ন্ত দরপত্রের বাক্স ও খাম খোলার পর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সর্বোচ্চ দর দাতাকে সিডিউল দেওয়া হবে।
রাজধানীর বাড্ডা ইস্টার্ণ হাউজিং আফতাব নগরিস্থিত ব্লক-বি হতে এইচ পযর্ন্ত খালি জায়গায়, যা বাড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের অংশ। আফতাব নগরসহ উত্তর সিটি করপোরেশন সাত স্থানে বাজারের কোরবানির গরু বিক্রির জন্য বাজারের ইজারা আহ্বান করেছেন।
Advertisement
রিটের আগে সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে বাসিন্দাদের পক্ষে শেখ মাহমুদ উজ্জ্বল আবেদন করেন। বলা হয়, জহিরুল ইসলাম সিটিতে (আফতাব নগর) বসবাসরত লোকজন ঈদুল আজহার আগে ও পরে প্রায় এক মাস অস্থায়ী হাট বসানোর কারণে ব্যাপকভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেন। যেহেতু চলাচলের প্রধান সড়কের ওপর অস্থায়ী গরু-ছাগলের হাট বসে বলে (আফতাব নগর) এখানে বসবাসরত নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এসময় কোনো লোক অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করা সম্ভব হইয়া উঠে না। কেউ মারা গেলেও তার মরদেহ বহন করা দূরুহ হয়ে পড়ে।
এছাড়াও গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে আবাসিক এলাকাটির বসবাসের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। গরু-ছাগলের নানাবিধ বর্জ্যে এলাকাটির পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হয়।
এছাড়া প্রধান সড়কটিও জহিরুল ইসলাম সিটি (আফতাব নগর) ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার প্রেক্ষিতে সারা বছরেই প্রধান সড়কটিতে খানাখন্দ থাকায় জহিরুল ইসলাম সিটির (আফতাব নগর) বসবাসরত সব নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক অসুবিধা পোহাইতে হয়।
এছাড়াও নিম্ন বর্ণিত কারণ সমূহের জন্য অত্র আবাসিক এলকায় গরু ছাগলের হাট বসানো সমীচীন নয়।
Advertisement
১. রাজউক অনুমোদন মোতাবেক আফতাব নগর একটি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা।২. গরু ছাগলের হাটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে অসুবিধা হয়।৩.গরু ছাগলের হাটের কারণে এলাকাবাসীর যাতায়াতে ভোগান্তি ও অসুবিধা হয়।৪. ইস্টার্ন হাউজিং লি. ও সোসাইটি কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সড়কে যেসব বৈদ্যুতিক লাইন ও বাতি লাগানো হয়েছে হাটের সময় ব্যবসায়ীরা তাদের নিজস্ব বাতি লাগানোর জন্য এ সব লাইন নষ্ট করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক বাতি নিয়ে যায়।৫.গরুর হাটের জন্যে ওয়াসার অনুমোদ ছাড়া কয়েকশ পানির লাইন অবৈধভাবে সংযোগ দেওয়া হয়। যা পরে ঠিকমতো না লাগানোর কারণে সারাবছর এলাকাবাসীর ময়লা পানি ব্যবহার করতে হয়। ওয়াসার বক্তব্য গরুর হাট বন্ধ না হলে এলাকাবাসী সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত হবে।৬. গরুর হাটের কারণে কয়েকশ কাঁচা টয়লেট স্থাপন করা হয় যা পরবর্তীতে সঠিকভাবে অপসারণ করা হয় না।৭. গরুর হাটের কারণে সব রাস্তা-ঘাট নষ্ট হয়ে যায় এবং ময়লা আবর্জনায় ভরে যায়। যা মাসের পর মাস পরিষ্কার করা হয় না। ফলে দুর্গন্ধের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এলাকাবাসীকে বসবাস ও চলাচল করতে হয়। গরুর হটের কারণে এলাকার আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয় এবং এলাকার বাসা-বাড়িতে চুরি ডাকাতিও বেড়ে যায়।
এফএইচ/এমএইচআর/জেআইএম/এমআইএইচএস