ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। রোববার (১৪ মে) দুপুর থেকে মেঘনা উপকূলীয় এলাকাতে হালকা বাতাস বইছে। এছাড়া সকাল থেকে নদী শান্ত থাকায় জেলেরা মাছ শিকারে নৌকা ভাসিয়েছে৷ এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে ভাঙন আতঙ্ক বেড়েছে তীরের বাসিন্দাদের মাঝে।
Advertisement
এদিকে লক্ষ্মীপুরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের উপকূলে তেমন কোনো প্রভাবের চিত্র দেখা যায়নি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় এলেই নদী ভয়াল রূপ নেয়। বেড়ে যায় ভাঙন। বিলীন হয় স্থাপনাসহ বিস্তীর্ণ জনপদ। অতীত অভিজ্ঞতায় তাদের এখন ভাবিয়ে তুলছেন। এতে নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থেকে আতঙ্কিত উপকূলের বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: হাতিয়ায় বাড়ছে পানি, উপকূলে সতর্কতা
Advertisement
অন্যদিকে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত থাকলেও নদী দুপুর পর্যন্ত শান্ত রয়েছে। এজন্য রামগতি, কমলনগর, সদর ও রায়পুরে সকাল থেকে মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছে জেলেরা। ইলিশ শিকারিরা নদীতে নৌকা ভাসিয়েছে।
রেডক্রিসেন্টের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুদিন ধরে তারা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষকে সচেতন করে আসছেন। কিন্তু আবহাওয়া এখনো অনুকূলে থাকায় কেউই তাদের কথা শুনছেন না। এখনো পর্যন্ত কেউই আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যায়নি।
জেলে আবুল কাশেম মাঝি ও মোসলেহ উদ্দিন জানায়, বেড়িবাঁধ না থাকায় উপকূলীয় বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক থাকে। বেড়িবাঁধ থাকলে তাদের আর আতঙ্কিত থাকতে হতো না। নদীর ভাঙনে হাজার-হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এখন যারা নদী এলাকায় আছেন, তারা তাদের পূর্বের প্রতিবেশীদের শূন্যতা অনুভব করছেন সবসময়। আর কোনো প্রতিবেশীকে নিঃস্ব দেখতে চান না তারা।
জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, জেলা সদর, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলা মেঘনা উপকূলীয় এলাকা। এতে এসব এলাকার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা কাজ করছেন। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সাইক্লোন শেল্টারসহ ১৮৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। ৬৪ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেবা নিশ্চিতের জন্য। এছাড়া সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন: ‘মোখা’ অতিক্রমের পর কক্সবাজারে ২৪ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টির শঙ্কা
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, আমি সকাল থেকে মেঘনা নদীর ফলকন, লুধুয়া, পাটারিরহাট ও মাতাব্বর হাট এলাকা পরিদর্শন করেছি। নদী শান্ত থাকায় সবখানেই জেলেরা মাছ শিকারে ব্যস্ত রয়েছে। এ মুহূর্তে নদীতে গিয়ে তাদের ধাওয়া করে উঠিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমদ বলেন, রামগতি ও কমলনগরে নদী তীর রক্ষা বাঁধের জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে। এটি শেষ হলে লোকজন সুরক্ষা পাবে। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সতর্ক রয়েছে।
কাজল কায়েস/আরএইচ/এমএস