অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। রোববার (১৪ মে) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে ঝড়টি দেশের উপকূলে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। শনিবার দিনগত রাতে ১৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
Advertisement
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকার অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্বে দিকে অগ্রসর ও আরও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। ঝড়টি রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতিপ্রবল এ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঝড়ের কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।
কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে আট নম্বর মহাবিপৎসংকেত এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
Advertisement
উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং তাদের অবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো আট নম্বর মহা বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে আট থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস এবং ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারি (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারি (৮৯ মিলিমিটার বা তার বেশি) বৃষ্টিপাত হতে পারে। অতিভারি বর্ষণের ফলে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।
Advertisement
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এসএম/কেএএ/