জাতীয়

সুদান থেকে ফিরলেন আরও ৫২ বাংলাদেশি

যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে দেশে ফিরেছেন আরও ৫২ বাংলাদেশি। বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকাল সাড়ে ১০টার পর বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট তাদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ নিয়ে দুই দফায় ১৮৮ জন সুদান থেকে দেশে ফিরলেন।

Advertisement

এর আগে গতকাল বুধবার (১০ মে) পোর্ট সুদান থেকে সুদানের বদর এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে জেদ্দায় পৌঁছান ১৭৬ বাংলাদেশি। তাদের মধ্য থেকে আজ ৫২ জন ঢাকায় ফিরলেন।

আরও পড়ুন: সুদানে আটকে পড়া সব বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনবে বিমান

রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসের তথ্য মতে, আজকের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে আরও ২৩৮ জন এবং কাতার এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ১৩০ জন মদিনা থেকে বাংলাদেশে ফেরার কথা রয়েছে।

Advertisement

গত সোমবার যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে প্রথম দফায় দেশে ফেরেন ১৩৬ বাংলাদেশি। বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে তারা দেশে ফেরেন। সুদানফেরতদের মধ্যে নারী, শিশু ও অসুস্থ প্রবাসীও ছিলেন।

গত ৩ মে সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে ৬৮০ বাংলাদেশিকে ১৩টি বাসে করে নিরাপদে পোর্ট সুদানে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: সুদান থেকে ঢাকায় ফিরলেন ১৩৬ বাংলাদেশি

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করেন। তাদের মধ্যে যারা দেশে আসার জন্য নিবন্ধন করেছেন পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

Advertisement

এদিকে গত ৮ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, সংঘাতপূর্ণ সুদানে আটকে পড়া সব বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনবে বিমান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করে ধাপে ধাপে সুদান থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

গত ৩ মে সুদানে আটকে পড়া ৬৮০ বাংলাদেশি দেশটির রাজধানী খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান বন্দরে পৌঁছান। ওইদিন সকালে তাদের বহনকারী ১৩টি বাস বন্দরে পৌঁছায়। আগের দিন ২ মে বাসগুলো ৬৮০ বাংলাদেশিকে নিয়ে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বন্দরে পৌঁছানোর পর দেখা যায়, অনেক বাংলাদেশির পাসপোর্ট নেই। সেক্ষেত্রে নতুন করে তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট তৈরি করতে হয়।

আরও পড়ুন: সুদান থেকে বাংলাদেশিদের আনতে দুই লাখ ডলার বরাদ্দ

জানা যায়, পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় ফেরার জন্য ৬৮০ বাংলাদেশি অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রাভেল পারমিট ইস্যু ও জাহাজের শিডিউল পেতে দেরি হওয়ায় তারা জেদ্দায় পৌঁছাতে পারছিলেন না।

আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত চারশোর বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। যাদের মধ্যে জাতিসংঘ কর্মী ও মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সুদানে প্রায় দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। এরমধ্যে রাজধানী খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশির বাস। যুদ্ধকালীন প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এরমধ্যে আটকে পড়া ৬৮০ জন বাংলাদেশিকে গত ৩ মে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে আনা হয়।

আরও পড়ুন: সুদানে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ না করার পরামর্শ

চলমান যুদ্ধে সুদানে চিকিৎসাসেবা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহতভাবে বিঘ্নিত হওয়া এবং খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে আসায় মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো আরও আগেই তাদের নাগরিক ও কূটনীতিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে শীর্ষ দুই সামরিক নেতার কাউন্সিলের মাধ্যমে সুদানের রাষ্ট্র পরিচালনা হচ্ছে। তারা হলেন- সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং দেশটির উপ-নেতা ও আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো।

আরও পড়ুন: সুদানে বাংলাদেশ দূতের বাসভবন-দূতাবাসে গোলাগুলি

ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র পরিচালনার রূপরেখা ও দেশটিতে বেসামরিক শাসন ফেরানোর প্রস্তাব ইস্যুতে এ দুই নেতার বিরোধ ঘিরেই গত ১৫ এপ্রিল সকাল থেকে যুদ্ধের সূত্রপাত। তবে কোন পক্ষ প্রথম আঘাত হেনেছে, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়।

এমএমএ/এমকেআর/জেআইএম