গাজীপুরের শ্রীপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ‘লাবুন্ধা’ বা ‘লবলাং’ নদী দখল ও দূষণমুক্ত করার দাবিতে সরকারের মন্ত্রণালয়, দখলদার ও দূষণকারীসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এতে নদী দূষণের সব উৎস চিহ্নিত করে দূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
Advertisement
একইসঙ্গে সিএস জরিপ অনুযায়ী- নদীর সীমানা নির্ধারণ করে পিলার স্থাপন, দখলদারদের পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত এবং তা উচ্ছেদের দাবি জানানো হয়েছে নোটিশে। এছাড়া বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে নদীটিকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।
বুধবার (১০ মে) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। আগামী সাতদিনের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার চেয়ে রিট আবেদন করা হবে। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন হাসানুল বান্না।
নোটিশে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক (ডিজি), গাজীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), পরিবেশ অধিদপ্তরের (গাজীপুর জেলা কার্যালয়) উপ-পরিচালক, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, পৌরসভার মেয়র, স্যালভো কেমিক্যাল লিমিটেড, ক্রাউন উলেন ওয়্যার, ক্রাউন গ্রুপ, এক্স সিরামিক্স, মেঘনা নীট কম্পোজিট, আমান কটন, হ্যামস ওয়াশিং, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ডার্ড কম্পোজিট, ডিগনিটি টেক্সটাইল লিমিটেড ও ইশরাক স্পিনিং মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
Advertisement
লাবুন্ধা নদী (লবলাং নামে পরিচিত) গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে একই জেলার সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে তুরাগ নদীতে পতিত হয়েছে। ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি উজানে গরগরা ও ভাটিতে লাবুন্ধা নদী নামে পরিচিত। নদীটির গতিপথ এক সময় লবলাং সাগর নামে পরিচিত ছিল।
দেশের অন্যান্য নদীর মতো দখল আর দূষণে এ নদী আজ চরম অস্তিত্ব সংকটে। এ নদী দখল ও ভরাট করে গড়ে উঠেছে শতাধিক কলকারখানা। নদীটির শ্রীপুর অংশের পুরোটাতে উভয় পাশে দখল ও ভরাট হয়ে সংকুচিত নালায় পরিণত হয়েছে।
দখলের পাশাপাশি এ নদীর দূষণ চরমে পৌঁছেছে। নদীটি বর্তমানে আশপাশের কল-কারখানা থেকে নির্গত দূষিত বর্জ্য পদার্থসহ দূষিত পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
চিকিৎসা বর্জ্য, প্ল্যাস্টিক বর্জ্যসহ পৌরসভার সব বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে এ নদীতে। বিভিন্ন শিল্প-কারখানার বর্জ্যেরে পাশাপাশি শ্রীপুর সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে এ নদীতে।
Advertisement
এফএইচ/এএএইচ/জিকেএস