আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এতে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে আজমত উল্লা খানকে। আওয়ামী লীগেরই সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তবে নির্বাচনী মাঠে আছেন তার মা। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান কেমন সিটি করপোরেশন চান, বিজয়ী হলে কোন পরিকল্পনা নিয়ে এগোবেন, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ভূমিকা প্রভৃতি ইস্যুতে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জেলা প্রতিনিধি মো. আমিনুল ইসলাম।
Advertisement
জাগো নিউজ: এবার নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
আজমত উল্লা খান: গাজীপুর সিটিতে অবশ্যই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট হবে। আমি শতভাগ আশাবাদী নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত হবে। সুষ্ঠু ভোট হোক তা সরকার, নির্বাচন কমিশন ও জনগণেরও চাওয়া।
জাগো নিউজ: কোন প্রার্থীকে আপনি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন?
Advertisement
আজমত উল্লা খান: নির্বাচনে আমি সব প্রার্থীকেই প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি। কাউকে ছোট করে দেখি না।
জাগো নিউজ: নির্বাচনের মাঠে দলের নেতাকর্মীদের পাশে কতটুকু পাশে পাবেন?
আজমত উল্লা খান: গাজীপুর মহানগরে আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। তারা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন।
আরও পড়ুন>>আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি: আজমত উল্লা
Advertisement
জাগো নিউজ: সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?
আজমত উল্লা খান: জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্যে মনে হচ্ছে তিনি শুধু সরকার নয়, সরকার, নির্বাচন কমিশন সবাইকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন। তিনি একেক জায়গায় গিয়ে একেক রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। এগুলো জনগণ নিশ্চয় বোঝে।
জাগো নিউজ: জাহাঙ্গীর আলমকে মোকাবিলার বিষয়ে কী বলবেন?
আজমত উল্লা খান: আমি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমি জনগণের সঙ্গে আছি। কাউকে অসম্মান করতে চাই না। আমি সব প্রার্থীকেই মনে করি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী।
জাগো নিউজ: সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ঘরবাড়ি ভেঙে রাস্তা করেছিলেন। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
আজমত উল্লা খান: সরকার গাজীপুর সিটিতে একটি প্রকল্পে তিন হাজার ৮২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। সেখানে ক্ষতিপূরণের জন্য বরাদ্দ ছিল এক হাজার নয়শ কোটি টাকা। সুতরাং, ক্ষতিপূরণের সেই টাকাটা জনগণকে দেওয়া হয়নি। সাবেক মেয়র সেখান থেকে ৭২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। জনগণের জন্যই তো রাস্তা-ঘাট ও ড্রেন নির্মাণ করা হয়। সেই জনগণকে উচ্ছেদ করে রাস্তায় বসিয়ে ডেভেলপমেন্টটা কার জন্য? জনগণকে উচ্ছেদ করে সেই ডেভেলপমেন্ট কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
আরও পড়ুন>> জাহাঙ্গীর প্রার্থিতা ফিরে পেলে মোস্ট ওয়েলকাম: আজমত
জাগো নিউজ: নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে আপনার কর্মী-সমর্থকদের জন্য কোনো বার্তা আছে কি না?
আজমত উল্লা খান: দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া আচরণবিধি মেনে চলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জাগো নিউজ: দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে আপনাদের পদক্ষেপ কী হবে?
আজমত উল্লা খান: দলের যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন তাদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নেবে। এখানে আমার কিছু করার নেই।
জাগো নিউজ: বিএনপি নির্বাচনে নেই- বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
আজমত উল্লা খান: সিটি করপোরেশন নির্বাচন শুধু মেয়রকে নিয়ে নয়, সিটি করপোরেশন চলে একটি নির্বাচিত বডির মাধ্যমে। এখানে কাউন্সিলররাও থাকেন। মেয়র ওই বডির একটি অংশ। বিএনপি শুধু মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। তবে তাদের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার মানে বিএনপি নির্বাচনে আছে।
জাগো নিউজ: নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
আজমত উল্লা খান: আমি জয়ের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। এই মহানগরে আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। সবাই মিলে কাজ করে এর সুফল অবশ্যই ঘরে তুলে আনবে।
আরও পড়ুন>>ভোটের মাঠে থাকছেন জাহাঙ্গীরের মা, স্বাগত জানালেন আজমত
জাগো নিউজ: বিজয়ী হলে প্রথম ও প্রধান কাজ কী হবে?
আজমত উল্লা খান: নির্বাচনে বিজয়ী হলে দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশন গড়ে তোলাই হবে আমার প্রধান কাজ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সিটি করপোরেশনের অর্গানোগ্রাম অনুমোদন নিয়ে আসার চেষ্টা করবো।
জাগো নিউজ: নির্বাচিত হলে কোন পরিকল্পনা নিয়ে আপনি এগোবেন?
আজমত উল্লা খান: ১০ বছরে গাজীপুর সিটিতে কোনো সুষ্ঠু পরিকল্পনামাফিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। প্রথম কাজটি হবে এটাকে একটি পরিকল্পনার মধ্যে আনা, যাতে সেই কাজের জবাবদিহিতা থাকে, কাজের স্বচ্ছতা থাকে। দুর্নীতিমুক্ত একটি প্রশাসন এখানে গড়ে তুলবো।
এমএআই/এএসএ/এএসএম