রানা প্লাজা ধসে হাজার হাজার শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত ভবন মালিক সোহেল রানার বিচারের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে সমাবেশ হয়েছে। রোববার (৭ মে) সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের মূল ফটকে এ সমাবেশ করে গার্মেন্টস শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নের একাধিক জোট।
Advertisement
সমাবেশে বক্তারা বলেন, কর্মস্থলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নেই। অনিরাপদ পরিবেশে পোশাক শ্রমিকরা কাজ করেন। তারা জানান, রানা প্লাজা ধসে ১ হাজারের বেশি শ্রমিক মারা যান। ২ হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ৪৩০ জন মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে চিকিৎসাধীন, ৩৬৩ জন পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে গেছেন, ২৯৯ জন হাত ভেঙে পঙ্গু হয়ে গেছেন। ২০৫ জনের বুকের পাঁজর ভেঙে গেছে, ১৪০ জনের মেরুদণ্ড ভেঙেছে, ২৮৮ জন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে গেছেন। আরও ১৮ জন হাসপাতালে ও নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
তারা অভিযোগ করে বলেন, বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ করা ও ঝুঁকিপুর্ণ ভবনে শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করেন মালিক সোহেল রানা। তাই তার জামিন স্থগিত ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তারা।
ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। সেই জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।
Advertisement
রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি আগামীকাল (৮ মে) আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, ‘সোহেল রানার জামিন স্থগিত শুধু নয়, সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, ‘এখনো শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ পাননি। এ অবস্থায় সোহেল রানাকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিনে আমরা আতঙ্কিত। এই জামিনের ফলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হবে। শ্রমিক হত্যা উৎসাহিত করা হবে।’
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সদস্য মঞ্জুর মঈনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা জলি তালুকদার, শবনম হাফিজ, রাজু আহমেদ, শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
Advertisement
এফএইচ/এসএনআর/জেআইএম