লাইফস্টাইল

হাসলে কমে চাপ, ভালো থাকে হার্ট

হাসলে শুধু মন-মেজাজ ভালো থাকে না, বরং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিও কমে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাসলে মেজাজ ভালো থাকে। এক্ষেত্রে করটিসল হরমোন নিঃসরণ কমে ও এন্ডোরফিন হরমোন বাড়ে। ফলে শরীরের একাধিক সমস্যার সমাধান হয়।

Advertisement

গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা দিনে গড়ে ৪০০ বার হাসে। সুখী প্রাপ্তবয়স্করা প্রতিদিন ৪০-৫০ বার হাসেন ও সাধারণ প্রাপ্তবয়স্করা হাসেন ২০ বার। বিজ্ঞানীরা গণনা করে দেখেছেন, বিশ্বে মোট ১৯ ধরনের হাসি আছে।

আরও পড়ুন: হাত-পায়ের যে লক্ষণে বুঝবেন ডায়াবেটিস বেড়েছে

আজ বিশ্ব হাসি দিবস। প্রতি বছর মে মাসের প্রথম রবিবার পালিত হয় দিবসটি। জানলে অবাক হবেন, হাসির উৎপত্তি ঘটে ১০ মিলিয়ন বছর আগে। প্রথম বিশ্ব হাসি দিবসের সমাবেশ ১১ জানুয়ারি ১৯৯৮ সালে ভারতের মুম্বাইতে অনুষ্ঠিত হয়।

Advertisement

হাসির উপকারিতা কী কী, জেনে নিন-

ব্যথা উপশম করে

মন থেকে আপনি যদি হাসেন, তাহলে নিশ্চিত আপনার শরীরে এন্ডোরফিন (সুখী হরমোন) বেশি নির্গত হবে। এই হরমোন নিঃসরণের ফলে ব্যথা কমে। এক গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা একটি গ্রুপে ১৫ মিনিটের কমেডি শো দেখেছিলেন।

এরপর দেখা যায়, কমেডি শো দেখে হাাসির কারণে তাদের ব্যথার সহনশীলতা আগের চেয়ে ১০ শতাংশ বেড়েছে। যারা অন্যদের সঙ্গে না থেকে একা একটি কমেডি শো দেখেছেন, তাদের ব্যথা সহনশীলতাও বেড়েছে, কিন্তু তা ১০ শতাংশের কিছুটা কম।

Advertisement

আরও পড়ুন: ইউরিন ইনফেকশন ছাড়াও প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হয় যে কারণে

গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে

অনেক নারীই গর্ভধারণ করতে চেয়েও ব্যর্থ হন বারবার। এর কারণ হতে পারে মানসিক অস্থিরতা ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা।

জানলে অবাক হবেন, মানসিকভাবে আপনি সুস্থ থাকলে ও হাসির মাধ্যমে মন-মেজাজ ভালো রাখলে গর্ভধারণের সম্ভবনাও বাড়ে। ২০১১ সালে এক গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে আসে।

হৃদযন্ত্র ভালো থাকে

হাপসলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে হৃদস্পন্দনও বাড়ে ও সর্বোপরি হৃদযন্ত্র ভালো থাকে। হাসলে ধমনী প্রাচীরের কঠোরতাও হ্রাস পান, ফলে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমে।

আরও পড়ুন: কেন বয়সে বড় নারীর প্রেমে পড়েন পুরুষরা?

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

অবাক করা বিষয় হলেও সত্যিই যে, হাসলে ইমিউন সিস্টেম উন্নত হয় ও বিভিন্ন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকিও কমে।

হাসি আপনার শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করার জন্য আরও সংক্রমণ বিরোধী অ্যান্টিবডি বাড়ায়।

সুখী করে তোলে

হাসি মানসিক চাপ কমায় ও মেজাজ ভালো রাখে। এটি দীর্ঘস্থায়ী হতাশা ও উদ্বেগ কমাতে পারে, পাশাপাশি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সহজ করে তোলে।

আরও পড়ুন: এ সময় দিনে কয় লিটার পানি পান করবেন?

মানসিক চাপ কমায়

আপনি যখন চাপে থাকেন, তখন আপনার শরীর কর্টিসল (দুঃখ বা স্ট্রেস হরমোন) নিঃসরণ করে। কর্টিসল বেড়ে গেলে শরীর ও মনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। আর এই হরমোন নিয়ন্ত্রণে থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, প্রদাহ কমে, বিপাক পরিচালনা করে

আর কর্টিসল নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় হলো হাসি ও মন ভালো রাখা। হাসি অক্সিজেন গ্রহণ বাড়ায়, যা শরীরের সঞ্চালনকে উদ্দীপিত করে ও কর্টিসলের মাত্রা কমায়। কিছু গবেষণা দেখা গেছে, হাসি ইতিবাচক মানসিকতা বাড়ায় ও মানসিক চাপ কমায়।

আরও পড়ুন: পুরুষদের চেয়ে নারীদের মাথা বেশি গরম: গবেষণা

শরীরকে শিথিল করে

স্ট্রেসের কারণে পেশি টানটান হয়ে যায়। হাসি চাপ উপশম করতে সাহায্য করে, কারণ এটি আপনার পেশি শিথিল করে। মন থেকে কিছুক্ষণ হাসলে এর পরবর্তী ৪৫ মিনিট পর্যন্ত আপনার পেশিগুলো অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি পাবে ও রক্ত সঞ্চালনকে উদ্দীপিত করে।

এজন্য সুস্থ থাকতে নিয়মিত হাসতে হবে। প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিটের জন্য এমন কিছু করুন, যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে হাসাতে পারেন ও খুশি থাকতে পারেন।

সূত্র: সিলেক্ট হেলথ/ন্যাশনাল টুডে

জেএমএস/জেআইএম