বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় জীবন বিমা কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স। মালিকপক্ষের দ্বন্দ্বে বছরের পর বছর ধরে ভুগতে হয়েছে কোম্পানিটিকে। সেই দ্বন্দ্ব কিছুটা আড়ালে গেলেও এখনো কোম্পানিটির সমস্যার সমাধান হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। দখল, পাল্টা দখলের চেষ্টা আর মামলা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে কোম্পানিটির জন্য।
Advertisement
দেশের বৃহৎ এ জীবন বিমা কোম্পানিটির সমস্যা সমাধানে আদালত পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিলেও সংকট কাটেনি। বরং সৃষ্টি হয়েছে নতুন সংকট। আদালত যে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে, সেই পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যেই দেখা দিয়েছে মতবিরোধ। এ মতবিরোধের পিছনেও রয়েছে কোম্পানির দখল সংক্রান্ত বিষয়।
এরই মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ থেকে একজন পদত্যাগ করেছেন। তার জায়গায় নতুন একজনকে পর্ষদে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ। এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আরডিআরএ) কাছে নতুন পরিচালক নিয়োগের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। তবে তা অনুমোদন না দিয়ে সুপ্রিম কোটের আপিল বিভাগের সম্মতি নিতে বলেছে আইডিআরএ।
এ পরিস্থিতিতে লভ্যাংশ সংক্রান্ত বোর্ড সভার তারিখ নির্ধারণ করেও তা বাতিল করতে বাধ্য হয়ছে ডেল্টা লাইফ কর্তৃপক্ষ। ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ সালের সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনার জন্য এই বোর্ড সভার তারিখ নির্ধারণ করা হয় গত ১১ এপ্রিল। তবে ৪ এপ্রিল আইডিআরএ থেকে নতুন পরিচালক নিয়োগের জন্য আপিল বিভাগের অনুমোদন নিতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড সভার তারিখ নির্ধারণ করেও তা বাতিল করা হয়।
Advertisement
আরও পড়ুন>> ‘জাল’ শিক্ষা সনদধারীকে সিইও করতে চায় ডেল্টা লাইফ
জানা যায়, আইডিআরএ’র সাবেক চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে ডেল্টা লাইফের মালিক কর্তৃপক্ষ দ্বন্দ্বে জড়ালে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটিতে প্রশাসক বসানো হয়। এরপর একের পর এক মামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি জটিল হলে এক পর্যায়ে আইডিআরএ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন মোশাররফ। তার পদত্যাগের পর আইডিআরএতে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয় সরকার।
এরপর গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর দুটি আলাদা আদেশে ডেল্টা লাইফ থেকে প্রশাসক প্রত্যাহার এবং কোম্পানিটি পরিচালনায় নতুন পর্ষদের দায়িত্ব দেয় আইডিআরএ। সুপ্রিম কোটের আপিল বিভাগের নির্দেশে এই পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। পরের দিন ২০ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নেয় জীবন বিমা কোম্পানিটির।
ডেল্টা লাইফের নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে হাফিজ আহমেদ মজুমদার ও ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক ড. মো. জুনায়েদ শফিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ডেল্টা লাইফের সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদিবা রহমান, ডেল্টা লাইফের সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদে থাকা সুরাইয়া রহমান ও জেয়াদ রহমানকে। এদের পাশাপাশি সাকিব আজিজ চৌধুরী, চাকলাদার রেজানুল আলম এবং সাকিব আজাদ কোম্পানিটির নতুন পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব পান।
Advertisement
আরও পড়ুন>> ডেল্টা লাইফের প্রশাসক প্রত্যাহার, দায়িত্বে নতুন পর্ষদ
২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন করা, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যোগ্য সিইও নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করাসহ বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয় এই পরিচালনা পর্ষদকে। তবে প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে অল্পদিনের মধ্যে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা দুভাগে বিভাক্ত হয়ে পড়েছে। পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের এ দ্বন্দ্বের মধ্যেই পদত্যাগ করে বসেন সাকিব আজিজ চৌধুরী।
তার পদত্যাগের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। সাকিব আজিজ চৌধুরীর জায়গায় খন্দকার সাব্বির মোহাম্মদ কবিরকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ। তার নিয়োগ অনুমোদন চেয়ে গত ১৯ মার্চ ডেল্টা লাইফের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চিঠি দেন। এরপর ২৭ মার্চ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে আইডিআরএকে চিঠি দেওয়া হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৪ এপ্রিল আডিআরএ থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশ অনুযায়ী ডেল্টা লাইফের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। তাই ডেল্টা লাইফের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে একজন অর্থাৎ, খন্দকার সাব্বির মোহাম্মদ কবিরকে নিয়োগ অনুমোদন দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সম্মতি প্রয়োজন। চিঠির অনুলিপি ডেল্টা লাইফের চেয়ারম্যানকেও দেওয়া হয়েছে।
আইডিআরএ’র ওই চিঠির পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো খন্দকার সাব্বির মোহাম্মদ কবিরকে পরিচালক করতে আপিল বিভাগে যায়নি ডেল্টা লাইফ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে ডেল্টা লাইফের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার বৃহস্পতিবার (৪ মে) জাগো নিউজকে বলেন, খন্দকার সাব্বির মোহাম্মদ কবিরকে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য করার জন্য আপিল বিভাগের সম্মতি প্রয়োজন। আমরা আপিল বিভাগে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আরও পড়ুন>> বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হারানোর শীর্ষে ডেল্টা লাইফ
পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া দ্বন্দ্বের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মতবিরোধ থাকতেই পারে। পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে ছোটখাটো মতবিরোধ আছে, তবে তা খুব বড় না। আমরা ভালোভাবেই কোম্পানি চালাচ্ছি। বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে পারিনি তিন-চার বছর। এজিএমের মাধ্যমে নির্বাচিত পরিচালকদের কাছে দায়িত্ব দিয়ে দিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এর আগে ডেল্টা লাইফের দখল নেওয়ার লক্ষ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে বড় ধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। দখল, পাল্টা দখলের চেষ্টার পাশাপাশি হয় একাধিক মামলা। পরিচালকদের একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন। আর একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন ডেল্টা লাইফের বর্তমান পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ সদস্য জেয়াদ রহমান ও আদিবা রহমানের বাবা মঞ্জুর রহমান।
২০১১ সালের ২২ নভেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি) নির্দেশনা জারি করলে তা আশীর্বাদ হয়ে আসে মঞ্জুর রহমান গ্রুপের জন্য। ডেল্টা লাইফের ১১ জন পরিচালককে বিদায় করে কোম্পানিটির দখল নেন মঞ্জুর হরমান।
দখল নেওয়ার পর মঞ্জুর রহমান কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হন। মেয়ে আদিবা রহমানকে করা হয় সিইও। একই সঙ্গে পরিবারের একাধিক সদস্যকে পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত করা হয়। ডেল্টা লাইফে মঞ্জুর রহমানদের রাজত্ব চলার মধ্যেই ২০২০ সালে আইডিআরএ সাবেক চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ।
যার পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ সাসপেন্ড করে আইডিআরএ। একই সঙ্গে আইডিআরএ’র সাবেক সদস্য সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে দেড় বছরে তিন দফায় প্রশাসক পরিবর্তন করা হয়।
অবশ্য প্রশাসক নিয়োগের আগেই আইডিআরএ’র সাবেক চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুস দাবি করার অভিযোগ তোলে ডেল্টা লাইফ কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর ডেল্টা লাইফের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করা হয় আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেন ৫০ লাখ টাকা ঘুস দাবি করেছেন।
দুদকে অভিযোগ করার পর ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেও একই অভিযোগ করা হয়। এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডেল্টা লাইফের সাবেক সিইও আদিবা রহমান। ডেল্টা লাইফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করার এক সপ্তাহের মাথায় ১১ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটিতে প্রশাসক নিয়োগ দেয় আইডিআরএ।
আরও পড়ুন>> ডেল্টা লাইফে মাস্ক কেলেঙ্কারি
ডেল্টা লাইফে প্রথম প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা পরবর্তীসময়ে মাস্ক কেলেঙ্কারিতে জড়ান। ডেল্টা লাইফে প্রশাসক থাকা অবস্থায় কোনো দরপত্র আহ্বান ছাড়া নিয়মবর্হিভূতভাবে মাস্ক কেনার অভিযোগে তাকে কারাগারেও যেতে হয়।
আর ডেল্টা লাইফ নিয়ে জড়ানো বিতর্কের জেরে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে হয় এম মোশাররফ হোসেনকে। ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল আইডিআরএ সদস্য (লাইফ) হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মোশাররফকে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিন বছরের জন্য সংস্থাটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
সে হিসেবে মোশাররফের মেয়াদ ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা। মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই ২০২২ সালের ১৫ জুন তিনি পদত্যাগ করেন। ওই দিনই আইডিআরএ’র নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর দুটি আলাদা আদেশে ডেল্টা লাইফ থেকে প্রশাসক প্রত্যাহার এবং কোম্পানিটি পরিচালনায় নতুন পর্ষদের দায়িত্ব দেয় আইডিআরএ।
এদিকে কোম্পানিটির সিইও নিয়োগ নিয়েও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ এমন একজনকে সিইও নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের বৈধতা নেই। একাধিক বিমা কোম্পানিটি সিইও’র চলতি দায়িত্ব পালন করা শহিদুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে, আডিআরএ’র কাছে সেই নিয়োগ অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
শহিদুল ইসলাম সিইও নিয়োগ পেতে করা আবেদনের সঙ্গে ব্যাচেলর অব আর্টস (বিএ) ও মাস্টার্স অব আর্টস (এমএ) পাসের দুটি সনদ দিয়েছেন দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস মিরপুর-১০ থেকে ইস্যু করা। সনদ দুটির তথ্য অনুসারে, ২০১০ সালে তিনি সিজিপিএ ৩.৫১ নিয়ে বিএ এবং ২০১১ সালে সিজিপিএ ৩.৫৪ নিয়ে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
শহিদুল ইসলাম এই সনদ দিয়ে সানলাইফেও চাকরি নেন। তিনি সানলাইফে থাকা অবস্থায় তার শিক্ষা সনদ যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়কে শহিদুল ইসলামের সনদ দুটি যাচাইয়ের সুপারিশ করে চিঠিটি পাঠায়।
ওই চিঠির জবাবে ৩১ আগস্ট দারুল ইহসান ট্রাস্টের প্যাডে সনদ দুটির বিষয়ে মতামত পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ। মতামতটি ছিল- ‘সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর উল্লেখিত প্রোগ্রামের সনদ দুটি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বাড়ি নম্বর ২১, রোড-৯/এ, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা-১২০৯ থেকে ইস্যু করা হয়নি’।
দারুল ইহসানের চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মো. শহিদুল ইসলামের সনদ দু’টি বিশ্বিবদ্যালয়ের সংরক্ষিত রেকর্ডের সঙ্গে যাচাই করে মতামত দেওয়া হয়েছে।
এরপর শহিদুল ইসলাম বেস্ট লাইফে যোগ দেন। কোম্পানিটিতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট বেস্ট লাইফ কর্তৃপক্ষ দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিরপুর ক্যাম্পাসের বৈধতা জানতে চেয়ে ইউজিসিকে চিঠি দেয়।
তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি ইউজিসি থেকে বেস্ট লাইফকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়- ‘দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৯৩ সালের ২৯ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। বন্ধকৃত দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়টির সাময়িক অনুমতিপত্রে উল্লিখিত ঠিকানা ছিল বাড়ি নং-২১ (নতুন), রোড নং- ৯/এ, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা- ১২০৯। উক্ত ঠিকানার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়টির কমিশন অনুমোদিত আর কোনো বৈধ ক্যাম্পাস ছিল না।’
ইউজিসির ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০১০ সালের পর থেকে রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য নিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর না থাকায় উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ আইনের ২৯(১) ধারায় বর্ণিত বৈধ কোনো কর্মকর্তা/কর্তৃপক্ষ নেই। আইনের মৌলিক প্রিন্সিপাল অনুযায়ী অবৈধ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গৃহীত ও সম্পাদিত কার্যক্রম শুরু থেকে নাল অ্যান্ড ভয়েড অর্থাৎ বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।’
শিক্ষা সনদ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা এমন একজন ব্যক্তিকে সিইও করতে চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ যাচাই করিনি। তাকে নিয়োগ দিয়েছি এবং আইডিআরএ’র কাছে অনুমোদন চেয়েছি। এখন আইডিআরএ সিদ্ধান্ত নেবে।
এমএএস/এএসএ/জেআইএম