ঘূর্ণিঝড় সিডর, ইয়াস, আইলা, মহাসেন, বুলবুলের আঘাতের ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি উপকূলীয় উপজেলার মানুষেরা। এরই মধ্যে এবার চোখ রাঙাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সামুদ্রিক ঝড় ‘মোখা’। আবহাওয়া অধিদপ্তর আভাস দিয়েছে, আগামী ১৩-১৫ মের মধ্যে উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। আবহাওয়া দপ্তরের এ পূর্বাভাস কপালে চিন্তার রেখা এনে দিয়েছে উপকূলীয় এলাকার মানুষের।
Advertisement
প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণও বেশ আকর্ষণীয়। তবে মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, এবারের ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ অর্থ কি? এছাড়াও এর নামকরণ নিয়েও চলছে নানান তর্ক বিতর্ক। চলুন জেনে নেওয়া যাক ‘মোখা’ অর্থ ও উৎপত্তি সম্পর্কে-
ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন/ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের তথ্য অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে ইয়েমেন। সেই দেশের বিখ্যাত শহর মোখার নাম থেকেই রাখা হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম।
ইয়েমেনের শহর মোখা সারা বিশ্বের কাছে পরিচিতি কফির জন্য। কফির উৎপাদন এবং সারাবিশ্বে সরবরাহের কাজ করা হয় এই শহর থেকে। এটির নামেই নামকরণ হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের। বর্তমানে ‘মোখা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ-অতি উন্নতমানের কফি। যে কোনো ধরনের কফি, দুধ চিনি ও কোকোর স্বাদযুক্ত পানীয়। সাধারণত ভেড়ার চামড়া দিয়ে তৈরি দস্তানা বিশেষ এবং গাঢ় বাদামি রঙের জলপাই অর্থ প্রকাশেও ‘মোখা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
Advertisement
ভাষাবিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ আমীন বলেন, ‘মোখা’ ইয়েমেনের লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত একটি বন্দর। এর ইংরেজি বানান ‘Mocha/Makka’। উচ্চারণ /Mokha (মোখা)/। আরবি االمخا /al-Mukhā/ হতে শব্দটির উদ্ভব। ঊনবিংশ শতক পর্যন্ত ‘মোখা’ ছিল ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর। ‘মোখা’ অঞ্চলে ‘মোখা’ নামে পরিচিত বিশ্বখ্যাত কফির চাষ হয়। এই কফির নামকরণও করা হয়েছে ‘মোখা’ শহরের নামে। অটোমান যুগে ‘মোখা’ বন্দর বিশ্ব কফি-বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র ছিল।
‘মোখা’ শব্দটির উৎস ‘আদি সেমিটিক’ (Mocha: מוקה। তখন এর অর্থ ছিল-জলাঘাতে বিধ্বস্ত হওয়ার শঙ্কা এবং উর্বর পলিতে সমৃদ্ধ হওয়ার মতো সম্ভাবনায় অঞ্চল; গাঢ় জলপাই রং, প্রবল মেঘে ঢাকা আকাশের রং। সম্ভাব্য ১২ মে দুপুর ১২টার পর কিংবা ১৩ মে দুপুর ১২টার পর বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’।
কেএসকে/এএসএম
Advertisement