সাহিত্য

বেদনাবোধ এবং বধির শিল্পকলা

মাসুদ চয়ন

Advertisement

বেদনাবোধ(সায়েম আল রাজি ভাইকে)

নিঃশব্দ রাতে পেখম মেলেছে রুঢ় অন্ধকার—ডাকছে কাক ঝাঁকের মতো কর্কশ শব্দে;কর্মব্যস্ত যাপনের জমে ওঠা কলঙ্কগুলো বিদঘুটে বিচ্ছুর মতো কিলবিলিয়ে হাঁটছে মস্তিষ্ক করোটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে,আগন্তুক আক্ষেপ মুছে দিতে অগ্নি উনুনে ঝাঁপিয়ে পড়া,জ্বলে পুড়ে সাঁতরাচ্ছিই—লুপ্ততায় নীল হয়ে যাচ্ছে স্বপ্নগুলো—ক্ষয়ে যাচ্ছে হৃৎপিণ্ডের স্পর্শকাতর দিগন্ত;জমকালো ছাইরং পেয়েছে মানবিক চৈতন্য—আমি আজ চেতনাবহির্ভুত ক্যাকটাস!কলঙ্কমুক্ত হতে কত ট্রিলিয়ন আলোকবর্ষ পেরোবে জানি না!জ্বলছি অসীম আয়ু প্রাপ্ত নির্জন নক্ষত্রের মতো—অতি ক্ষীণ পথ পরিক্রমা নাব্যতা চেয়েছিল!চেয়েছিল ব্যথাবোধ গেথে শিল্প রেণু ফলাতে—কোটি অপ্রাপ্তির ভিড়ে পিষে যাওয়া ক্যাকটাস যদিও,এক বিন্দু প্রশান্তি দিতে পারো কবিতা!ঋণী রবো অনন্তে আজন্ম...

****

Advertisement

বধির শিল্পকলা

তোমার সাদাকালো চোখের আগুনেঅঙ্গার হয়ে ওঠে বোধ শিল্প;তবুও বোধ জন্মায় ক্ষয়ে ক্ষয়ে—হৃদয়ের অগাধ সাগরে নিতান্তই জন্ম নেয় বোধ—আমি সেই বোধেই সারাক্ষণ বিচরণ করি,জীবন ছুঁয়ে যায় কাব্য কথায়,মনে হয় জলের স্বর্ণ আভা হৃদয়ে নিবাস বুনেছে—মাঝে মাঝে কবিতার মুমূর্ষু প্রহর আসে—শত প্রচেষ্টায়ও ডালপালা মেলতে পারে না—শৈত্যশীর্ণ ডানার থরথর কম্পন পাহাড়ের মতো অটল স্থবির হয়ে রয়;পৃথিবীকে নিথর পেন্ডুলাম বলে মনে হয়—অবরুদ্ধতায় ঢাকা বুকপৃষ্টে অহমের তরল আগুন ধিক ধিক করে জ্বলে;তোমার চোখের ভাষা পড়া যায় না কিছুতেই—ওই সাদাকালো চোখের আগুনে অঙ্গার হয়ে ওঠে বোধ;একদিন পৃথিবী ছেড়ে পালিয়ে যাবো বৃত্ত বহির্ভুত কাখৈ গ্রহে—তোমার সাদাকালো চোখের আগুন কী ভীষণ তেজোদীপ্ত!তার তুল্যতা এই ছায়াপথ গ্যালাক্সিতে নেই—ব্ল্যাকহোল হয়ে হোয়াইটহোলে লীন হয়ে যাচ্ছি—বাতাসের পালকিতে ভেসে এলো সোনালি রৌদ্র—শৌখিন পাখিদের রাজ্য এখন তোমার চোখে—সবুজ শৃঙ্খলে নিবিষ্ট দেহখানা এলিয়ে দিয়েছো বুনো রোদনে;কত সহজে পড়ে নিলাম পৃথিবী বিস্তৃতির রূপ রস—তোমায় পড়ে নেওয়া হলো না—তোমার সাদাকালো চোখে শুধুই আগুন দেখেছি—তুমি পূর্ণিমা রাতের নিষ্কলঙ্কিত উপমা—এক কোটিবার সে আগুনে পুড়েছে বোধএ কি প্রেম নয় তবে!নাকি উদবাস্তু কবিতার মতো চিরকালীন হাহাকার।।

এসইউ/

Advertisement