দেশজুড়ে

উদ্বোধনের ১৮ দিনেও মডেল মসজিদে নামাজ পড়তে পারেননি মুসল্লিরা

পটুয়াখালীতে জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র উদ্বোধনের ১৮ দিনেও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় নামাজ পড়ার সুযোগ পাননি মুসল্লিরা। এতে সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্বোধনের ১৮ দিনেও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি উন্নয়ন প্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া নিয়ে গণপূর্ত বিভাগ ও ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে।

Advertisement

অনুসন্ধানে জানা যায়, সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাবেক ডিসি কোর্ট মসজিদ ভেঙে দৃষ্টিনন্দন জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়। গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটি সারা দেশের চতুর্থ ধাপে ৫০টি মডেল মসজিদের সঙ্গে গত ১৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের ১৮ দিনেও মসজিদে নামাজ পড়া শুরু হয়নি। ফলে মডেল মসজিদ সংলগ্ন অস্থায়ী টিনশেড বিল্ডিংয়ে নিয়মিত নামাজ পড়া মুসল্লিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আল আমিন বলেন, এমন চমৎকার একটি স্থাপনা উদ্বোধনের পরও সেটি ব্যবহার না করাটা দুঃখজনক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। আমরা আশা করি দ্রুত মসজিদটি খুলে দিয়ে নামাজের ব্যবস্থা করা হবে।

নিয়মিত মুসল্লি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, অস্থায়ী মসজিদটি অনেক ছোট হওয়ায় অনেকেই জামাতে জায়গা পান না। এত বড় একটি সমজিদ নির্মাণ করা হলো, উদ্বোধন হলো কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশে কারো কাছে কাম্য হতে পারে না।

Advertisement

এ বিষয়ে পটুয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, বিদুৎ সংযোগের জন্য অনেক আগেই আবেদন করা হয়েছে, কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় মুসল্লিরা নামাজ পড়তে পারছেন না। বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেই নামাজ শুরু হবে।

তবে এ বিষয়ে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি পটুয়াখালী বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, গণপূর্ত বিভাগ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করেনি। প্রথমে গত ৯ মার্চ তারা আমাদের কাছে একটি আবেদনপত্র পাঠায়, এরপর ১৫ এপ্রিল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলেও তাতে কারো স্বাক্ষর ছিল না। সর্বশেষ ২ মে তারা স্বাক্ষরসহ কাগজপত্র জমা দিয়েছে। আমরা তৃতীয় প্রকল্লন তৈরি করে তাদের কাছে পাঠিয়েছি। প্রকল্লন অনুযায়ী তারা টাকা জমা দিলে ১৮ দিনের মধ্যে সংযোগ দেওয়া হবে। তবে আমরা এর আগেই সংযোগ দেবো। এখানে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো গাফিলতি নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম জানান, কী কারণে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি সে বিষয়ে আমি খোঁজ খবর নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

পটুয়াখালী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মাহবুবুর রহমান জানান, গত ১৫ এপ্রিল মডেল মসজিদের জন্য ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং খাদেম নিয়োগের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেই আমরা নামাজ শুরু করবো।

Advertisement

আব্দুস সালাম আরিফ/এফএ/জেআইএম