জাতীয়

জলবায়ু খাতে ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন, সুবিধা পাবে বাংলাদেশও

শিল্প যুগের প্রাক-মুহূর্ত থেকে পৃথিবী খুব দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী এশিয়ার দেশগুলো। ২০২৩ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু মোকাবিলায় ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক(এডিবি)।

Advertisement

বর্তমানে এডিবির সদস্যভুক্ত দেশ ৬৮টি। এর মধ্যে ৪৮টিই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় অবস্থিত। বাকি ১৯ দেশ এ দুই অঞ্চলের বাইরের। এসব দেশে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করবে সংস্থাটি। এ অর্থায়ন থেকে প্রকল্পের আওতায় ঋণ পাবে বাংলাদেশও। বৃহস্পতিবার (৪ মে) এডিবি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার ইঞ্চনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫৬তম বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবারের (৩ মে) আয়োজন ছিল ‘গভর্নরস সেমিনার’। অর্থাৎ এডিবির পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে সেমিনার।

সেমিনারে জলবায়ু মোকাবিলার বিষয়টি উঠে আসে। মূলত সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানরাই এডিবির গভর্নর। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘রিবাউন্ডিং এশিয়া: রিকভার, রিকানেক্ট, অ্যান্ড রিফর্ম’। অর্থাৎ ‘এশিয়ার আবার ফিরে আসা: পুনরুদ্ধার, পুনঃসংযোগ এবং সংস্কার’। এটি ছিল সেমিনারে আলোচনার বিষয়।

Advertisement

আলোচনায় অংশ নেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নবিষয়ক পার্লামেন্টারি স্টেট সেক্রেটারি নিয়েলস আন্নেন এবং এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া। সেমিনার সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক এবং এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের প্রেসিডেন্ট জয়নাব বাদাউই।

এডিবি জানায়, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু মোকাবিলায় উদ্ভাবনী অর্থ সুবিধা চালু করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক। এটি যুগান্তকারী প্রকল্প, যা এডিবিকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জলবায়ু অর্থায়ন ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে। লিভারেজড গ্যারান্টি মেকানিজমের মাধ্যমে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার গ্যারান্টি রেখে নতুন জলবায়ু বিনিয়োগে ১৫ বিলিয়ন পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে। এভাবে ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ু খাতে অর্থায়নের করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়েছে সংস্থাটি। এশীয়ার দেশগুলো সঠিক ও যৌক্তিকভাবে এ অর্থ ব্যবহার করতে পারবে।

এডিবির সদস্যভুক্ত দেশ হওয়ায় ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ভাগ বসাতে পারে বাংলাদেশও। জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে। পুরো বিশ্বে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশে এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে। জলবায়ু যত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, এর বিরূপ প্রভাবও তত দ্রুত দৃশ্যমান হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে পানি ও বায়ুবাহিত রোগ, অপুষ্টি, দুর্যোগকালীন মৃত্যু ও আঘাতের হার বাড়ছে। গড় তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়তে থাকায় ঋতুর আচরণ বদলে গেছে। এতে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার কৃষির ওপর এরইমধ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশের নিচু ও উপকূলীয় এলাকা অতি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। জলবায়ু খাতে বাংলাদেশেও বিনিয়োগ করতে মুখিয়ে আছে এডিবি।

Advertisement

আগামী পাঁচ বছরে (২০২১-২০২৫) এডিবি বাংলাদেশকে এক হাজার ২০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেবে। বর্তমান বিনিময় মূল্য হিসাবে (ডলার ১০৬ টাকা) টাকার অংকে এ অর্থের পরিমাণ এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। নতুন কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজিও (সিপিএস) ঘোষণা করেছে এডিবি। এডিবির নতুন জলবায়ু ফান্ড থেকে ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

এমওএ/এএএইচ/জিকেএস