ফিচার

টিপু সুলতানের প্রয়াণ দিবস

টিপু সুলতান ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা। তার পুরো নাম ফতেহ আলী সাহাব টিপু। তবে শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর (মহীশূরের বাঘ) নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। উপাধিটা ইংরেজদেরই দেওয়া। তার এই বাঘ (শের) হয়ে ওঠার পিছনে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কিত ছিল।

Advertisement

তার অসাধারণ ক্ষীপ্রতা, দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা আর কৌশলপূর্ণ রাজ্য পরিচালনা-বাবার সুযোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন টিপু সুলতান। বাবা হায়দার, ১৭৪৯ সালে টিপু নামে এক ফকিরের দোয়ায় এক পুত্রসন্তান লাভ করেন এবং আনন্দচিত্তে ঐ ফকিরের নামেই ছেলের নাম রাখেন ‘টিপু’। মহীশূরের স্থানীয় ভাষায় (কানাড়ী ভাষা) ‘টিপু’ শব্দের অর্থ হলো বাঘ। হয়তো তাকে ‘শের-ই-মহীশূর’ ডাকার পিছনে এটাও একটা কারণ ছিল।

১৭৫০ সালের ১০ নভেম্বর বর্তমান ব্যাঙ্গালোরের দেবনাহল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা বিখ্যাত সেনাধ্যক্ষ হায়দার আলী নিজে খুব শিক্ষিত না হওয়ায় ছেলেকে সকল ধরনের শিক্ষায় দীক্ষিত করেছেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করা হয়েছিলো রণকৌশল ও সমর বিদ্যার মাধ্যমে। পরবর্তীতে, উর্দূ, আরবী, ফারসি, কন্নড় ভাষায় তিনি পারদর্শীতা লাভ করেছিলেন এবং এর পাশাপাশি, কুরআন এবং ইসলাম শিক্ষার ওপর জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই তিনি অশ্বারোহণ, তীরন্দাজি, তলোয়ার চালনায় অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং নিপুণ ছিলেন।

১৮৬৬ সালে, মাত্র ১৫ বছর বয়সে, বাবার সঙ্গে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংঘটিত প্রথম মহীশূরের যুদ্ধের ময়দানে বীরত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া, ১৭ বছর বয়স থেকেই বাবার আদেশে, রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কূটনীতিক ও সামরিক মিশনগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে শুরু করে দিয়েছিলেন।

Advertisement

টিপু সুলতান তার শাসনামলে বেশ কিছু প্রশাসনিক উদ্ভাবন চালু করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে মুদ্রা, নতুন মৌলুদি লুনিসোলার ক্যালেন্ডার এবং নতুন ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা যা মহীশূর রেশম শিল্পের বৃদ্ধির সূচনা করেছিল। দক্ষিণ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসক ছিলেন টিপু সুলতান ৷ পিতা হায়দার আলী মহীশূর রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন ৷ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট তার মিত্র ছিল এবং ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধে সাহায্য করেছিল। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে যুদ্ধে ১৭৯৯ সালের ৪ মে নিহত হন টিপু সুলতান।

কেএসকে/এএসএম