মতামত

বৈশাখী পূর্ণিমা ও বুদ্ধজাতক

“..... তবু জানি আমাদের স্বপ্ন হতে অশ্রুক্লান্তি রক্তের কণিকা/ ঝরে শুধু- স্বপ্ন কি দেখনি বুদ্ধ।/” (তুমি কেন বহু দূরে/ রূপসী বাংলা/ জীবনানন্দ দাশ)। শান্তি, মানবতা, কল্যাণ, অহিংসার মূর্ত প্রতীক গৌতম বুদ্ধ। আড়াইহাজারের বেশি বছর আগে জন্মেছিলেন এই উপমহাদেশে। দুঃখবাদ থেকে বুদ্ধের দর্শনের উৎপত্তি। আর এই দুঃখবাদই তাঁর ধর্মের মূল বৈশিষ্ট্য।

Advertisement

রাজকুমার সিদ্ধার্থ মানুষের নিত্যসঙ্গী জরা, ব্যাধি, মৃত্যু, দুঃখ দেখে তা থেকে মুক্তির উপায় উদ্ভাবনের জন্য রাজঐশ্বর্য, ভোগবিলাস, স্ত্রী-পুত্র সবই ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন গহিন বনে। একাগ্র মনে ছয়বছর কঠোর ধ্যান করে শুভ বৈশাখী পূর্ণিমায় বোধিজ্ঞান লাভের মাধ্যমে তিনি আবিষ্কার করলেন দুঃখ মুক্তির উপায় বা পথ। দুঃখ কী? জন্ম-জরা, ব্যাধি, মৃত্যু।

প্রিয়বিয়োগ, অপ্রিয় সংযোগ, ইপ্সিত বস্তুর অপ্রাপ্তি দুঃখ- সংক্ষেপে পঞ্চউপাদান স্কন্ধই দুঃখ। অর্থাৎ জন্মগ্রহণ বা দেহধারণ করাটাই দুঃখ। বুদ্ধ বললেন, এই দুঃখের কারণ আছে। কারণ কী? -তৃষ্ণাই দুঃখের কারণ। তৃষ্ণা ত্রিবিধ- কামতৃষ্ণা, ভবতৃষ্ণা, বিভবতৃষ্ণা। অবিদ্যার কারণে তৃষ্ণার উৎপত্তি হয়। এই তৃষ্ণার নিবৃত্তি বা নিরোধ অবশ্যই আছে। দুঃখ নিরোধগামিন প্রতিপাদ্য বা আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গই তৃষ্ণা এবং দুঃখ নিরোধের উপায়। এই মার্গে বিচরণ করলে জরা, ব্যাধি, মৃত্যুর অবসান ঘটিয়ে পরম শান্তিনির্বাণ লাভ সম্ভব হবে।

বুদ্ধ জন্মেছিলেন যখন এই উপমহাদেশে হানাহানি, বর্ণবাদ, বৈষম্যবাদ ও ধর্মের নামে পশুবলি, গোত্রে গোত্রে যুদ্ধবিগ্রহ চলছে। মানবতার এই চরম দুর্দশা দেখে বুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, মানুষ মাত্রেই সমান, মানুষের প্রতি মানুষের হিংসা ও বৈষম্য পরিহার করতে হবে। ধর্মের বা দেবতার নামে প্রাণীবধ বন্ধ করতে হবে। দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার চলবে না। মানুষকে তার আপন মর্যাদা দিতে হবে। কোনো প্রাণীকে হিংসা করা যাবে না। সব প্রাণীর প্রতি দয়া ও মৈত্রী পোষণ করতে হবে।

Advertisement

‘.....এই পৃথিবীর পথে আড়াই হাজার/ বছর বয়সী আমি;/ বুদ্ধকে স্বচক্ষে মহাপরিনির্বাণের আশ্চর্য শান্তিতে/ চলে যেতে দেখে- তবু অবিরল অশান্তির দীপ্তি ভিক্ষা করে/” (তবু, শ্রেষ্ঠ কবিতা, জীবনানন্দ দাশ)। বুদ্ধ বিশ্বাস করতেন, উপদেশও দিয়েছেন সেই আড়াই হাজার বছর আগে, সর্বজীবের হিতের জন্য, সুখের জন্য, কল্যাণের জন্যই ধর্মজীবন। বুদ্ধ অবশ্য তাঁর নিজের উপদেশকেও অভ্রান্ত বা চিরকালের জন্য মাননীয় বলে নির্দেশ করেননি। কোনো মানুষ সর্বজ্ঞ হতে পারে বলে বিশ্বাস করতেন না। বুদ্ধ তাঁর উপদেশকে সেতুর সঙ্গে তুলনা দিয়েছেন একস্থানে। আবার একস্থানে নদী পার হওয়ার জন্য ‘ভেলা’ হয়েছে তাঁর উপদেশের উপমা। বলেছেনও বুদ্ধ তাই- “আমার উপদিষ্ট ধর্মকে ভেলা (কুল­) সদৃশ মনে করিও, ইহা কেবল পার হইবার জন্য, জড়াইয়া ধরিয়া রাখিবার জন্য নহে।’

বুদ্ধ চাইতেন অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের ভেতরের বুদ্ধিকে জাগ্রত করে বুদ্ধ হয়ে ওঠা। তারই উপদেশে ‘আত্মদীপ’ হওয়া। বুদ্ধ ‘ক্ষণিক অনাত্মবাদ’র দর্শন তাঁর অনুসারীদের প্রদান করেছিলেন। তবে বলেছিলেন, এই দর্শনেই চিরকাল আটকে থাকতে হবে এমনটা নয়। বরং সত্যানুসন্ধানের পথচলায় এটাকে সেতু বা ভেলার মতো ব্যবহার করে নতুনতর সত্যে পৌঁছে যেতে পারলে এটাকে পরিত্যাগ করাই বাঞ্ছনীয়। বুদ্ধ জগৎ-সমাজ-মনুষ্য সকলকেই ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তনশীল বলে ঘোষণা করেছেন এবং সেই পরিবর্তনশীলতাকে তিনি দেখেছেন ‘কার্যকারণ শৃঙ্খলার বিচ্ছিন্ন প্রবাহ’ রূপে। বুদ্ধ বলতেন, মানুষ নিজেই নিজের ত্রাণকর্তা, নিজেই নিজের সুখ-দুঃখ ও জন্ম মৃত্যুর কারণ।’ আরও বলেছেন, ‘সকল দেহের ক্ষয় হয়, জন্মের সাথে মৃত্যু অনিবার্য; সুতরাং এই চক্র থেকে মুক্তির জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালাও।’

বুদ্ধ মনে করতেন; মানুষের মৃত্যুর পর তার আত্মা পুনরায় নতুন দেহে জন্মলাভ করে। নতুন জন্মলাভ করলেও তাকে গতজন্মের কর্মফল ভোগ করতে হয়। বুদ্ধ প্রায় ২১ বছর কোশল দেশে ধর্মপ্রচার করেন। কোশলের জেতবন নামে এক কাননের এক কুটিরে বাস করতেন। সেই কুটিরে ভোরের ধর্মসভায় একদিন ভিক্ষুরা বুদ্ধের সন্ন্যাসগ্রহণ ও ত্যাগের মহিমা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সন্ন্যাসীদের একজন বললেন, তথাগত শাক্যসিংহ যদি সন্ন্যাস গ্রহণ না করতেন, তবে তিনি শাক্যবংশের রাজা হতেন।

যশোধরার মতো রূপসী স্ত্রী, রাহুলের মতো প্রিয়পুত্র ও রাজসুখ পরিত্যাগ করে তথাগত ত্যাগের পথ অনুসরণ করেছেন। যেইমাত্র তিনি সংসারের অনিত্যতা বুঝতে পেরেছেন, সেইমাত্র তিনি সংসার ত্যাগ করেছেন। রাজচক্রবর্তী হয়ে পৃথিবীর অধিপতি হওয়ার পরিবর্তে তিনি একাকী ছন্দকের সাহায্যে রাত্রির অন্ধকারে গৃহত্যাগ করেছেন। গৃহত্যাগের পর সেই আদরে-যত্নে লালিতপালিত দেহকে অসীম কষ্ট দিয়ে দীর্ঘ ছয়বছর কঠোর তপস্যা করেছেন। এতো কষ্ট স্বীকার করে তবেই তিনি বুদ্ধত্ব লাভ করেছেন।

Advertisement

ভিক্ষুরা যখন বুদ্ধকে নিয়ে আলোচনায় মগ্ন, তখন তিনি ধর্মসভায় প্রবেশ করেন। ভিক্ষুদের কথা শুনে বললেন, ‘হে ভিক্ষুগণ, কেবল এ জন্মে নয়, পূর্ব পূর্ব জন্মেও তথাগত এইভাবেই মহান ত্যাগ স্বীকার করে প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেছিলেন। এই বলে বুদ্ধ এক অতীত কাহিনি বর্ণনা করতে লাগলেন। যে কাহিনি মূলত: বুদ্ধের নিজেরই পূর্বজন্মের। আর এসব কাহিনি ধরা আছে জাতকের কাহিনিতে। বুদ্ধ তাঁর কাহিনি শুরু করলেন এভাবে- ‘পুরাকালে রামনগরে সর্বদত্ত নামে এক রাজা ছিলেন। তার ছিল সহস্র পুত্রসন্তান। সর্বজ্যেষ্ঠ যুবঞ্জয় ছিলেন বলশালী, সুদর্শন, সুপুরুষ, সৎগুণাধিকারী। এই রাজকুমারকে সর্বদত্ত ঔপরাজ্য দান করেছিলেন। ঔপরাজ যুবঞ্জয় একদিন অন্য রাজকুমারদের মতোই ভোরে রাজউদ্যানে আমোদ করতে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে রথের সারথি। পথে যেতে যেতে দেখতে পেলেন, ভোরের আলোয় মাকড়শার জাল দেখা যাচ্ছে। সেই জালের মধ্যে বিন্দু বিন্দু শিশির মুক্তোর দানার মতো শোভিত। শুধু তাই নয়, গাছের পাতায়, ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু ঝকমক করছে। রাজকুমার বিস্মিত হয়ে সারথিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই জলের বিন্দুগুলো কী? গাছের আগায় মুক্তোর মতো কেন শোভা পাচ্ছে’ সারথি জানালো, ‘এগুলো শিশির কণা। শীতকালে শিশির পড়ে।’

সারথির কাছ থেকে যুবঞ্জয় অবহিত হলেন শিশির কণা বিষয়ে। যুবঞ্জয় দিনভর বাগান বাড়িতে আমোদ-প্রমোদ শেষে বিকেলে রাজবাড়িতে ফেরার পথে চারদিক তাকিয়ে আর শিশির কণাগুলো দেখতে পেলেন না। আবারো বিস্ময় জাগে। সারথিকে আবারো প্রশ্ন, ‘সকালে যে সব শিশিরের কণাগুলোকে মুক্তোর মতো শোভা পেতে দেখলাম, সেসব এখন তো চোখে পড়ছে না। কণাগুলো গেলো কোথায়?’ সারথি হেসে জানালো, যুবরাজ, শিশিরকণা তো জলের বিন্দু। সকালে সেগুলোকে দেখা যায়। দিন যতো দীর্ঘ হয়, সূর্যের উত্তাপে তারা মাটির সঙ্গে মিশে যায়। শিশির কণা বড়ই ক্ষণস্থায়ী।’

সারথির এই সামান্য কথা অসামান্য প্রতিক্রিয়া তৈরি করলো যুবঞ্জয়ের মনে। জনম জনম ধরে তার মনে ঈশ্বর প্রেমের যে ফল্গুধারা বয়ে যাচ্ছিল, সেই ধারা যেন হঠাৎ একটি আঘাতে বাধাপ্রাপ্ত হলো। যুবঞ্জয় ভাবলেন, এই সুন্দর শিশির কণাগুলো এতোই ক্ষণস্থায়ী এগুলো আমাদের জীবনের মতোই। ব্যাধি জরা আর মরণে মানবজীবন দ্রুত শেষ হয়ে যায়। তাই ব্যাধিগ্রস্ত জ্বরাগ্রস্ত হওয়ার আগেই পিতা-মাতার অনুমতি নিয়ে তপস্যায় বেরিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। সামান্য শিশিরকণা যুবঞ্জয়ের মনে বৈরাগ্যের হাওয়া ছাড়ালো। ভেতরে ভেতরে এক বিবাগী মন তৈরি হতে থাকলো। রাজবাড়িতে ফিরে দেখলেন, রাজসিংহের চারপাশে কাম-রূপ আর ঐশ্বর্যের খেলা চলেছে। কিন্তু এসব তার মনকে আর মোহিত করতে পারলো না। বরং বিতৃষ্ণতাই জাগালো। রাজাকে বললেন, পিতা হে রাজন, আমি প্রব্রজ্যার জন্য আপনার কাছে অনুমতি নিতে এসেছি।’

জ্যেষ্ঠপুত্রের মুখে প্রব্রজ্যার কথা শুনে রাজা ভীষণ উদ্বিগ্ন হলেন এবং দুঃখও পেলেন। বিস্ময়ে ভারী কণ্ঠ তার। বললেন, হে পুত্র, এই রাজবাড়ীতে তোমার যদি কিছু ভোগের অভাব হয়ে থাকে, তবে আমি তা পূরণ করবো। যদি তোমার কোনো বলশালী শত্রু জন্মে থাকে, তাকে আমি বিনাশ করবো। কিন্তু তুমি সন্ন্যাস গ্রহণ কোরো না। তুমি জ্যেষ্ঠপুত্র। আজ রাজ্যের প্রজারা তোমাকে চায়, তুমি তাদের মনোবাসনাকে বিফল করে দিও না। পিতার কথা শুনে যুবঞ্জয় বললেন, ‘পিতা এই রাজভবনে আমার কোনো কিছুরই অভাব নেই। সম্প্রতি আমার কোনো বলশালী শত্রুও নেই। আমি কেবলমাত্র নির্বাণ লাভের জন্য সংসার ত্যাগ করতে চাই। কারণ এই জরাগ্রস্ত পৃথিবীর যন্ত্রণা থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই। তাই নির্বাণের জন্য আমি ব্যাকুল।’

সর্বদত্ত পুত্রের কথা শুনে নীরব হলেন। কিন্তু নীরব থাকলেন না রাজমহিষী। পুত্র পিতার কাছে সন্ন্যাস গ্রহণের জন্য অনুমতি চাইছে- এ খবর তাঁর কানে পৌঁছানো মাত্র তিনি রাজ অন্তঃপুর থেকে পালকি করে রাজ দরবারে হাজির হলেন। মানব জীবনে মায়ের স্নেহ সব থেকে বলশালী, তাই মাতৃস্নেহেই তিনি সংসারে ধরে রাখবেন পুত্রকে। এই আশা মনে পোষণ করে পুত্র যুবঞ্জয়কে বললেন, ‘তুমি আমার সহস্র পুত্রের মধ্যে কেবল জ্যেষ্ঠ নও, তুমি শ্রেষ্ঠও বটে। আমি মা হয়ে তোমায় না দেখে থাকতে পারব না। তাই তোমার প্রব্রজ্যা গ্রহণ সম্ভব নয়।’

মায়ের কথা শুনে যুবঞ্জয় মোটেই বিচলিত হলেন না। তিনি মাকে শিশিরকণার ঘটনা দিয়ে জীবনের অনিত্যতা বোঝালেন। অবশেষে পিতা-মাতার কাছ থেকে অনুমতি পেলেন। যুবঞ্জয়ের আরেক ভ্রাতার নাম ছিল যুধিষ্ঠির। তারও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার মতোই সংসারের প্রতি বিরাগ এসেছিল। যুবঞ্জয়ের সন্ন্যাস গ্রহণ করা দেখে যুধিষ্ঠিরও পিতা-মাতার কাছে অনুমতি নিয়ে সংসার ত্যাগ করলেন। রাজ্যশাসনের লোভ, পিতা-মাতার স্নেহ কোনোটিই তাঁদের সংসারে বেঁধে রাখতে পারলো না। হিমালয়ের এক নির্জন কোণে আশ্রম করে দুই ভাই আজীবন তপস্যার জীবনযাপন করলেন। এই কাহিনি বর্ণনা করে বুদ্ধ বললেন, সেই জন্মে আমি ছিলাম যুবঞ্জয় আর আনন্দ ছিল যুধিষ্ঠির।

বৌদ্ধশাস্ত্রে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণকে বলা হয় ‘মহাবিনিস্ক্রমণ’। সন্ন্যাস জীবন গ্রহণের পর আরাদ কালাম নামে এক সাধক সন্ন্যাসীর কাছে গৌতম সাংখ্যযোগ, ধ্যান ও তপস্যার বিদ্যাশিক্ষা নেন। দিব্যজ্ঞান বা বোধিলাভের পর প্রায় ৪৫ বছর বুদ্ধ উপমহাদেশের নানা স্থানে পরিভ্রমণ ও ধর্মমত প্রচার এবং দীক্ষা দেন। বুদ্ধ বছরে ৮ মাস নানা স্থানে ভ্রমণ করতেন এবং বাণী ছড়াতেন। বাকি চার মাস বর্ষার সময় কোনো একস্থানে স্থায়ীভাবে বাস করতেন।

বুদ্ধ মনে করতেন জন্মগ্রহণ করলেই মানুষকে কর্ম করতে হয়। এবং কর্মের ফল মানুষকে ভোগ করতে হয়। কর্ম থেকে আসে আসক্তি ও তৃষ্ণা এবং তার থেকে আসে দুঃখ। মানুষ নিরন্তর বিভিন্ন জন্মে কর্ম করছে। আর তাঁর কর্মের ফল হিসেবে দুঃখ ভোগ করছে। সুতরাং যদি তার পুনরায় জন্মগ্রহণকে রদ করা সম্ভব হয়, তবে মানুষ দুঃখের হাত থেকে মুক্তি পাবে। তার আত্মা নির্বাণ লাভ করবে। বুদ্ধ মনে করতেন, তার দর্শনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো দুঃখভোগ থেকে মানুষের মুক্তিলাভের পথ নির্দেশ করা। বলেছেনও, “সমুদ্র জলের যেমন মাত্র একটিই স্বাদ, তা হলো লবণের স্বাদ, তার ধর্মের একটিই লক্ষ্য- তা হলো দুঃখের হাত থেকে মানুষের মুক্তি। নির্বাণ হলো পুনর্জন্মের আকাঙ্ক্ষায় নিবৃত্তি। নির্বাণ লাভ করলে মানুষকে দুঃখ স্পর্শ করতে পারে না।”

সব ধর্মের শিক্ষিত প্রবক্তাদের কাছে তিনি সমাদৃত এবং এ বিষয়ে তিনি সত্যই অনন্য। রাজত্বের লোভ ত্যাগ করে তিনি সত্যের সন্ধানে ব্রতী হয়েছিলেন। সেই সত্য সন্ধান এখনো চলছে মানবের, মানুষের। বৈশাখী পূর্ণিমায় বুদ্ধ জন্ম, বুদ্ধত্ব ও নির্বাণ লাভ করেছিলেন। পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধ আজও জাগরণের মহাবাণী শুনিয়ে যান।

লেখক: একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও মহাপরিচালক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)।

এইচআর/ফারুক/এএসএম