জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুযায়ী এস এম শামীম আল মামুনের জন্ম ১৯৮৪ সালে। তিনি টাঙ্গাইলের নাগরপুর সদর ইউনিয়নের দুয়াজানী গ্রামের মো. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের ছেলে। ২০০০ সালে ১৬ বছর বয়সে চৌহালী জনতা হাইস্কুল থেকে তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। রাজশাহী বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়ে সেবার ৬১৩ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণও হন তিনি।
Advertisement
২০২০ সালে নাম পরিবর্তন করে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের বনগ্রাম শহীদ মেমোরিয়াল হাই স্কুল থেকে রেজিস্ট্রেশন করেন তিনি। নাম দেন এস এম শামীম আল মামুন পৃথিবী। ওই রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী ২০২৩ সালে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেন। হাতে পান প্রবেশপত্রও।
রোববার (৩০ এপ্রিল) শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। নাগরপুরে নয়ান খান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন তিনি। বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা চলাকালে শামীম কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তার নজরে পড়েন। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। পরে শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসময় অকপটে তার ২০০০ সালে প্রথমবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এবং পরে বয়স জালিয়াতি করে ২০২০ সালে রেজিস্ট্রেশন করার বিষয়টি স্বীকার করেন।
বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা শেষে তার প্রবেশপত্র ও নিবন্ধনপত্র জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার (২ মে) তিনি বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা দিতে আসেন। এসময় বয়স জালিয়াতির কারণে তাকে বহিষ্কার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান।
Advertisement
জানতে চাইলে শামীম আল মামুন বলেন, ২০০০ সালে আমি রাজশাহী বোর্ড থেকে এসএসসি পাস করেছি। সার্টিফিকেটে বয়স কমানোর জন্য নতুন করে ২০০৭ সালে জন্ম তারিখ দেখিয়ে জন্ম সনদ নিই। ২০২০ সালে নাগরপুর উপজেলার বনগ্রাম শহীদ মেমোরিয়াল হাইস্কুল থেকে রেজিস্ট্রেশন করি। পরে ফরম পূরণ করেছি। প্রবেশপত্র পেয়েছি। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। বয়স লুকানোয় আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক সহকারী কর্মকর্তা জি এম ফুয়াদ বলেন, দায়িত্ব পালনকালে ওই ছাত্রকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলাম।
কেন্দ্রসচিব ও নয়ান খান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন আলী মনসুর বলেন, ওই ছাত্রর এনআইডিতে জন্ম সাল ১৯৮৪। আর জন্ম সনদ অনুযায়ী তার জন্ম সাল ২০০৭। তিনি বয়স লুকিয়েছেন। এটা স্পষ্টত জালিয়াতি।
নাগরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহীনুর ইসলাম বলেন, এনআইডি কার্ডে তার জন্ম ১৯৮৪ সালে। নতুন জন্ম সনদে তার জন্ম ২০০৭ সালে। এর আগে তিনি এসএসসি পাস করেছেন। ২০-২২ বছর পর আবার এসএসসি পরীক্ষা দিতে আসছেন। মূলত বয়স গোপন করে প্রতারণার মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ নেওয়াটা অপরাধ। এ কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
Advertisement
আরিফ উর রহমান টগর/এএএইচ