অনেকে অডিওতে কোরআন তেলাওয়াত ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে, চাকরি-বাকরি কিংবা পড়ার টেবিলে লেখালেখির কাজে কিংবা ঘরের রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকেন। এভাবে কাজে ব্যস্ত থেকে কোরআন তেলাওয়াত শোনা যাবে কি? কিংবা ঘুমানোর আগে কানে হেড ফোন দিয়ে কোরআন তেলাওয়াত শোনা যাবে কি?
Advertisement
মনোযোগ দিয়ে কোরআন তেলাওয়াত শোনা সবচেয়ে বেশি সওয়াব। কারণ প্রখ্যাত তাবেয়ি হজরত খালিদ ইবনু মাদান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করেন, তার জন্য রয়েছে একটি পুরস্কার। আর যিনি তা মনোযোগ দিয়ে শোনেন, তার জন্য রয়েছে দুটি পুরস্কার।’ (সুনানে দারেমি, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৩৬)
ইসলামিক স্কলাররা মনে করেন, অন্য কাজে ব্যস্ত থেকে কোরআন তেলাওয়াত শোনা উচিত নয় তবে নিষেধ নেই। তাই পড়ালেখা, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা অন্যান্য যে কোনো কাজ চলাকালীন বা মাঝপথে কোরআন তেলাওয়াত শোনা নিষেধ না হলেও উচিত নয়। কারণ, কোনো কাজে ব্যস্ত থাকাকালীন কোরআন তেলাওয়াত শুনতে গেলে তেলাওয়াতের প্রতি মনোযোগ থাকে না। অথচ কোরআন তেলাওয়াত করা হলে, তা মনোযোগ দিয়ে শোনা আবশ্যক। (ফাতওয়ায়ে শামি, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৫১০)
মনোযোগ দিয়ে কোরআন তেলাওয়াত শোনা
Advertisement
কোরআন তেলাওয়াতে শোনার ফজিলত বর্ণনায় কোরআনুল কারিমে এসেছে-
وَ اِذَا قُرِیٴَ الۡقُرۡاٰنُ فَاسۡتَمِعُوۡا لَهٗ وَ اَنۡصِتُوۡا لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ
‘যখন কোরআন তেলাওয়াত করা হয়, তখন তোমরা তা শোনো এবং চুপ থেকো, যেন তোমাদের ওপর করুণা করা হয়।’ (সুরা আরাফ: আয়াত ২০৪)
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি আয়াত মনোযোগ দিয়ে শুনবে, তার জন্য বহু গুণ বেশি সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করবে, কোরআন তার জন্য কেয়ামতের দিন আলো হয়ে উদ্ভাসিত হবে।’ (মুসনাদে আহমদ ৮৪৯৪)
Advertisement
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যদি কেউ আল্লাহর কিতাবের একটি আয়াতও মনোযোগ দিয়ে শোনে, তাহলে তা কেয়ামতের দিন তার জন্য নুরে পরিণত হবে।’ (সুনানে দারেমি, খণ্ড ০২, পৃষ্ঠা ৫৩৬)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মনোযোগের সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত শোনার তাওফিক দান করুন। কোরআন তেলাওয়াত শোনার সময় বেখেয়াল হওয়া থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম