জাতীয়

সংসার চালাতে সারারাত হকারি, মেসে থাকারও অর্থ জোটে না বৃদ্ধের

রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনের গলিতে পান-সিগারেট বিক্রি করেন শাহ আলম মোল্লা নামের এক বৃদ্ধ। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়লেও গভীর রাত অবধি পান-সিগারেট বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন সবমিলিয়ে আয় আড়াই থেকে তিনশ টাকা। এ টাকায় পরিবারের ব্যয় মিটিয়ে নিজের জন্য থাকে না তেমন কিছু। ফলে বাসা ভাড়া দিয়ে থাকার মতো সংগতি নেই তার। এ কারণে এই বৃদ্ধ বয়সে বাধ্য হয়েই রাস্তায় বা খোলা জায়গায় দিন কাটান তিনি।

Advertisement

রোববার (৩০ এপ্রিল) রাতে শেওড়াপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনের গলিতে কথা হয় শাহ আলম মোল্লার সঙ্গে। ভোলার দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম স্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। নিজের বয়সটাও বলতে পারেন না ঠিকঠাক। কখনো বলেন ৮৮ কখনো ৬৮ বছর। তবে পাকা চুল-দাড়ি আর শরীরের চামড়ার ভাঁজ বলে দেয় বয়স একেবারে কম নয়।

আরও পড়ুন: ঈদে বাড়ি যাইতে পারি নাই, ২ মাসের বাসাভাড়া বাহি

জাগো নিউজকে শাহ আলম জানান, তার সাত সন্তান। চার মেয়ে ও তিন ছেলে। মেয়েরা বড়, তিনজনের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে ও দুই ছেলে মাদরাসায় পড়ে। বড় ছেলের বিয়ে হয়েছে, তবে বাবাকে দেখভাল করার সামর্থ্য নেই তার।

Advertisement

স্ত্রী গ্রামে থাকেন। ঢাকায় শেওড়াপাড়ায় ওলি মিয়ার টেকে এক সময় মেসে থাকতেন শাহ আলম। কিন্তু ঈদে গ্রামের বাড়ি গিয়ে সন্তান ও স্ত্রীর জন্য কিছু কেনাকাটা করায় টাকা শেষ। ফলে মেসের খরচ দিতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়েই সারারাত হকারি করে দিনে ফুটপাতে ঘুমাতে হয় এই বৃদ্ধকে। একসময় নিজের বাড়ি ও জমি থাকলেও মেঘনা নদীতে তা বিলীন হয়ে গেছে। এরপর নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তবে এখন বয়সের ভারে আর তা পারেন না। ফলে গত এক বছর ধরে হকারি করে পরিবারের খরচ যোগান।

আরও পড়ুন: খনিতে ঝরে প্রাণ, জীবনে নামে পঙ্গুত্বের অভিশাপ

জাগো নিউকে শাহ আলম বলেন, সারারাত পান-সিগারেট বিক্রি করি। দিনে যেখানে সুযোগ পাই সেখানে ঘুমাই। আগে মাসে চার হাজার টাকা দিয়ে মেসে থাকতাম। টাকা দিতে না পারায় এখন পথে ঘুমাই।

এমওএস/কেএসআর/এএসএম

Advertisement