খেলাধুলা

জসওয়ালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ম্লান করে অবিশ্বাস্য জয় মুম্বাইয়ের

শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৭ রান। বোলার অভিজ্ঞস জেসন হোল্ডার। ব্যাটার টিম ডেভিড, অস্ট্রেলিয়ার সিঙ্গাপুর বংশোদ্ভূত ব্যাটার এবং তিলক ভার্মা। আগের ওভারে ১৫ রান নেয়ার ফলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান তখনও আশাবাদী, ম্যাচ জয়ের জন্য। অন্যদিকে রাজস্থান রয়্যালস আশাবাদী, অভিজ্ঞ জেসন হোল্ডার ম্যাচটাকে হোল্ড করতে পারবেন।

Advertisement

কিন্তু সবার হিসাব-নিকাশ স্রেফ উল্টে দিলেন টিম ডেভিড। হোল্ডারের কোনো ক্যারিশমাকেই আমলে নিলেন না। টানা তিন বলে তিনটি ছক্কা মেরে দিলেন তিনি। শ্বাসরুদ্ধকর সমাপ্তির আশা যেখানে করেছিলো সবাই, সেখানে টানা তিন ছক্কায় ম্যাচটা সহজেই ৬ উইকেটের ব্যবধানে জিতে নিলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তখনও বল বাকি ৩টি।

ম্যাচটা ছিল হাই-স্কোরিং। জশস্বি জসওয়ালের ৬২ বলে ১২৪ রানের ঝোড়ো ইনিংসের ওপর ভর করে ২১২ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তোলে রাজস্থান রয়্যালস। কিন্তু জসওয়ালের এত বড় সেঞ্চুরি ইনিংসটাও ম্লান হয়ে গেলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের দলগত পারফরম্যান্সের কাছে। ট্র্যাজিক হিরো হয়েই থাকতে হলো তাকে। শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমে ১৪ বলে ৪৫ রান করে ম্যাচটাকে নিজেদের পকেটে পুরে নেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের টিম ডেভিড।

মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান দলনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। জশস্বি জসওয়াল ও জস বাটলারের ওপেনিং জুটি পাওয়ার প্লে-তে শক্ত ভিতে বসিয়ে দেয় রাজস্থানকে। ৬ ওভারে রাজস্থান কোনও উইকেট না হারিয়ে ৬৫ রান সংগ্রহ করে। শেষে ওপেনিং জুটিতে ৭২ রান যোগ করে আউট হন বাটলার। তিনি ২টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৯ বলে করেন ১৮ রান।

Advertisement

জশস্বি একপ্রান্ত দিয়ে ঝড়ের গতিতে রান তুলতে থাকেন। ৭টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৩২ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। জসওয়াল শতরানের গণ্ডি টপকে যান ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ৫৩ বলে। শেষ পর্যন্ত তিনি ১৬টি বাউন্ডারি এবং ৮ ছক্কায় ৬২ বলে ১২৪ রান করে আউট হন।

কার্যত একার হাতে জশস্বি রাজস্থানকে ২০০ রানের গণ্ডি পার করান। কেননা রাজস্থানের আর কোনও ব্যাটসম্যান ব্যক্তিগত ২০ রানের গণ্ডিও পার করতে পারেননি। সাঞ্জু স্যামসন ১৪, দেবদুত পাডিক্কাল ২, জেসন হোল্ডার ১১, শিমরন হেটমায়ার ৮, ধ্রুব জুরেল ২ ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন অপরাজিত ৮ রান করেন। রাজস্থান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২১২ রান সংগ্রহ করে।

মুম্বাইয়ের হয়ে আর্শাদ খান ৩৯ রানে ৩টি উইকেট দখল করেন। পিযুষ চাওলা ৩৪ রানে ২টি উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন জোফরা আরচার ও রাইলি মেরেডিথ।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে মুম্বাই একেবারে শুরুতেই অধিনায়ক রোহিত শর্মার উইকেট হারিয়ে বসে। রোহিত ৫ বলে ৩ রান করে মাঠ ছাড়েন। অপর ওপেনার ইশান কিশান ২৩ বলে ২৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ক্যামেরন গ্রিন নিশ্চিত হাফ-সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন। তিনি ৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ২৬ বলে ৪৪ রান করে মাঠ ছাড়েন।

Advertisement

৭টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ২৪ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সূর্যকুমার যাদব। তিনি শেষমেশ ৮টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ২৯ বলে ৫৫ রান করে মাঠ ছাড়েন। টিম ডেভিড ২টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ১৪ বলে ৪৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। তিলক বর্মা ৩টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ২১ বলে ২৯ রান করে নট-আউট থাকেন। মুম্বাই ১৯.৩ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ২১৪ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়।

রাজস্থানের হয়ে ২৭ রানে ২টি উইকেট নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ১টি করে উইকেট দখল করেন ট্রেন্ট বোল্ট ও সন্দিপ শর্মা। দল হারলেও ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন জশস্বি।

আইএইচএস/