বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা আব্দুন নূর সজল ও পূজা চেরী। সজল দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মনে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করে পূজা চেরী নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এবারের ঈদ উপলক্ষে জাগো নিউজের বিশেষ অনুষ্ঠান ‘জাগো তারকা’য় অতিথি হয়ে এসেছিলেন এ দুই তারকা। কথা হলো তাদের সঙ্গে-
Advertisement
জাগো নিউজ: এবারের ঈদে আপনাদের সিনেমা ‘জ্বীন’ মুক্তি পেয়েছে। প্রথমেই পূজার কাছে জানতে চাই- কেমন লাগছে আপনার?
পূজা: ছোট করে বলতে গেলে- এক কথায় ‘অসাধারণ’। এ ঈদে চারটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে একটি শাকিব ভাইয়ের, একটি বুবলীর, একটি আদর আজাদের আর অন্যটি হলো সজল ভাই এবং আমার। আমি খুবই আনন্দিত যে বাংলাদেশেসহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে আমাদের সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে।
জাগো নিউজ: সজলের কাছ থেকে শুনতে চাই ‘জ্বীন’ সিনেমা এরই মধ্যে হলে চলছে। দর্শকদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
Advertisement
সজল: বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। যেহেতু এ সিনেমা একটি সাইকো থ্রিলার এবং হরর সিনেমা, সেক্ষেত্রে অন্য আট-দশটি সিনেমা থেকে একটু আলাদা। মানুষ একটু কিউরিসিটি নিয়ে এ সিনেমাটি হলে দেখতে গিয়েছে। পাশাপাশি দর্শক যেটা দেখতে চেয়েছিলেন, সেটি এ সিনেমার ভেতরে পেয়েছেন। সিনেমাটি দর্শক খুব ভালোভাবে নিয়েছেন। তাই ভীষণ ভালোলাগা কাজ করছে নিজের ভেতরে।
জাগো নিউজ: পূজার কাছে আসি, ‘জ্বীন’ সিনেমায় যুক্ত হলেন কীভাবে?
পূজা: আমি ‘পূজা চেরী’ জাজ মাল্টিমিডিয়ার সিনেমা করে আজ নায়িকা হয়েছি। ‘পোড়া মন’, ‘নূরজাহান’ ও ‘দহন’ সিনেমা করার পরপর তারা সিদ্ধান্ত নেন যে ‘জ্বীন’ নামে একটি বড় সিনেমা বানাবেন। অর্থাৎ, তারা তো কখনো হরর মুভি করেননি। তারা সবসময় রোমান্টিক কিংবা অ্যাকশন ঘরানার মুভি করেছেন। তখন থেকে আসলে আলোচনা চলছিল। এভাবেই ধীরে ধীরে ‘জ্বীন’ সিনেমার প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত হই। এরপর থেকে অনেক মিটি। তারপর শুটিং শুরু করা।
আরও পড়ুন: সাভারে জিনের সাথে সজল-পূজা
Advertisement
জাগো নিউজ: আচ্ছা এবার একটু সজলের কাছে শুনি কীভাবে যুক্ত হলেন এ সিনেমায়?
সজল: আমি তখন দেশের বাইরে। আমাকে রাধাভাই ফোন করে বলেন, আপনাকে জরুরি দরকার। একটা গল্প বলতে চাই। তারপর গল্পের কিছু অংশ শুনেছি। আমি তখন দেশের বাইরে। ফোনে গল্প শোনার পর যখন দেশে আসি, তখন জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আজিজ ভাই আমাকে ফোন করেন। অফিসে যেতে বলেন। আমি সেখানে যাই। সিনেমার পুরো গল্প শুনি। প্ল্যানিং শুনি। সবকিছু মিলিয়ে আমার পছন্দ হয়। এভাবেই ‘জ্বীন’ সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হই।
জাগো নিউজ: পূজাকে একটি ভয়ের প্রশ্ন করতে চাই। সেটা হলো কখনো কি বাস্তবে ‘জ্বীন’ দেখেছেন?
পূজা: ‘জ্বীন’ তো আসলে দেখা যায় না। অনুভব করা যায় মাত্র। আমিও অনুভব করার চেষ্টা করেছি।
জাগো নিউজ: সজলকে কোন চরিত্রে আমরা ‘জ্বীন’ সিনেমায় পেয়েছি?
সজল: সিনেমার চরিত্রের কথা যদি বলি পূজা এবং আমি স্বামী-স্ত্রী। আর পেশাগত দিক থেকে আমি একজন ফটোগ্রাফার। এর বেশি কিছু বলতে চাই না। বেশি বললে দর্শকরা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
আরও পড়ুন: কবে দেখা যাবে সজল-পূজার জিন?
জাগো নিউজ: সজল দর্শকরা এর আগে সিনেমাবিমুখ হয়ে সিনেমা হলে যেতেন না। তারপর কয়েকটা ভালো ভালো সিনেমা মুক্তি পেলো। এরপর তারা সিনেমা হলে যাচ্ছেন। তো কি মনে হয়- দর্শকরা হলমুখী হবেন?
সজল: আমি আসলে নিজেই চিন্তিত যে দর্শকরা কোন ধরনের সিনেমা পছন্দ করেন। আমরা এর আগে দেখেছি ‘পরাণ’, তারপরে এসেছে ‘হাওয়া’। দুটো সিনেমার প্রেক্ষাপট বা গল্প দুই ধরনের। মানুষ লাইন ধরে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা উপভোগ করেছেন। আমাদের সিনেমার গল্পটা ভিন্ন ধরনের এটি একটি থ্রিলার হরর মুভি। যেটি মানুষ সচরাচর দেখে না। আমার কাছে মনে হয় প্রত্যেকটি সিনেমাই আসলে একটু একটু করে দর্শকদের দেখা উচিত। এবং আমরা কিন্তু চেষ্টা করছি ভালো সিনেমা বানাতে। এবং অভিনয় করতে। আমার বিশ্বাস দর্শক এবার ব্যতিক্রমধর্মী সিনেমা দেখার জন্য আবারও হলমুখী হবেন। আমাদের পাশের দেশের কথা বলি, তারা কিন্তু ভালো ভালো সিনেমা বানিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তো আমরা কি চাইবো না, যে আমাদের বাংলাদেশে চলচ্চিত্র এগিয়ে যাক। আমরা চাইবো আমাদের বাংলাদেশের চলচ্চিত্র কোনো দিক থেকে যেন পিছিয়ে না যায়। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সেরাটি দেওয়ার। মূল কথা হলো ভালো গল্পের ছবি মুক্তি পেলে দর্শক সেটা দেখতে হলে আসবেই। আমাদের সিনেমা ‘জ্বীন’র ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।
সজল ও পূজা চেরী, ‘জ্বীন’ সিনেমার একটি দৃশ্যে সজল-পূজা চেরী
জাগো নিউজ: পূজা আপনার কাছে জানতে চাই আপনি তো সিনেমায় অভিনয় করছেন, দর্শক আপনার অভিনয় দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সময় নেগেটিভ কমেন্টস করছে। নেগেটিভ কমেন্টসগুলো আপনার কেমন লাগে?
পূজা: আমি অভিনয় শুরু করার পর যখন কিছু ভিডিও বা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করি অনেকেই অনেক ভালো মন্তব্য করেন। কিছু মানুষ আছে যারা সচরাচর নেতিবাচক মন্তব্য করেন। তো প্রথম প্রথম এ নেতিবাচক মন্তব্যগুলো আমাকে খুব কাঁদাতো। আমি মেনে নিতে পারতাম না। খারাপ লাগতো। কিন্তু এখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি। তাই কেউ কখনো নেতিবাচক মন্তব্য করলে আগের মতো আর খারাপ লাগে না।
জাগো নিউজ: বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ এবং দর্শকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন?
সজল: আসলে সিনেমা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করার মতো দুঃসাহস আমার নেই। আমি একজন অভিনেতা হিসেবে বাংলা সিনেমাকে ৯০ দশকের স্বর্ণালি যুগের মতো দেখতে চাই। আমি আশা করি বাংলা সিনেমা এগিয়ে যাবে। সুন্দর সিনেমা দেখতে আমাদের দর্শক হলে আসবেন- এটিও আশা করছি। দর্শকদের উদ্দেশ্যে আরেকটি কথা বাংলা সিনেমাকে বাঁচিয়ে রাখার অন্যতম প্রাণভোমরা হলেন দর্শক। সে হিসেবে আপনারা বেশি বেশি বাংলা সিনেমা দেখে আমাদের উৎসাহিত করুন।
এমএমএফ/জিকেএস