ফিচার

হুমায়ুন আজাদের জন্ম

হুমায়ুন আজাদ একজন বাংলাদেশি কবি, ঔপন্যাসিক, ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক, রাজনীতিক ভাষ্যকার, কিশোরসাহিত্যিক, গবেষক, এবং অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল তার মাতামহের বাড়ি, তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমানে বাংলাদেশ) অধীন বিক্রমপুরের কামারগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্ম নাম ছিল হুমায়ুন কবীর।

Advertisement

১৯৫২ সালে আজাদ দক্ষিণ রাড়িখাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইনফ্যান্ট (প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা) শ্রেণিতে ভর্তি হন, সেখানে তিনি ইনফ্যান্ট থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত মোট চার বছর অধ্যয়ন করেন। ছেলেবেলা থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী। এ বিদ্যালয় থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৯৬২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন (মাধ্যমিক) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৯৬২ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য আজাদ ঢাকায় চলে আসেন। মানবিক বিভাগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও বাবার ইচ্ছায় ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর একই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৬৮ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। হুমায়ুন আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াকালীন সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রাবাসে থাকতেন।

১৯৬৯ সালে ২২ বছর বয়সে তার কর্মজীবন শুরু হয় চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক হিসেবে। সেখানে কিছুকাল কর্মরত থাকার পর ১৯৭০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। একই বছর ১২ ডিসেম্বর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।

Advertisement

হুমায়ুন আজাদের কবিতার মাধ্যমে সাহিত্যচর্চার শুরু হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর তবে বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে থাকাকালীন তার ‘ঘড়ি বলে টিক টিক’ শিরোনামে প্রথম লেখা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল দৈনিক ইত্তেফাকের শিশুপাতা কচিকাঁচার আসরে। তার প্রকাশিত মৌলিক কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৭।

তার উল্লেখযোগ্য রচনাবলি- প্রবন্ধ: লাল নীল দীপাবলি, রবীন্দ্রপ্রবন্ধ: রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তা, আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম। কিশোরসাহিত্য: ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, আব্বুকে মনে পড়ে, বুকপকেটে জোনাকি পোকা, যাদুকরের মৃত্যু। উপন্যাস: ফালি ফালি ক’রে কাটা চাঁদ, নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু , একটি খুনের স্বপ্ন, সব কিছু ভেঙে পড়ে, মানুষ হিসেবে আমার অপরাধসমূহ, ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল, নারী ইত্যাদি।

১৯৮৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ২০১২ সালে সামগ্রিক সাহিত্যকর্ম এবং ভাষাবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা হয়। এছাড়াও অগ্রণী ব্যাংক-শিশু সাহিত্য পুরস্কার, মার্কেন্টাইল ব্যাংক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০০৪ সালের ১১ আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

কেএসকে/জেআইএম

Advertisement