নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে, যা দেশদ্রোহিতার শামিল- এমন অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টিরই এক সাবেক শিক্ষার্থী।
Advertisement
কয়েক মাস ধরেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মধ্যে শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’র জমি নিয়ে বিবাদ চলছে। একাধিকবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য অমর্ত্য সেনকে ‘জমি দখলদার’, ‘মাটি চোর’, ‘জমি কব্জাকারী’ বলে আপত্তিকর ভাষায় আক্রমণ করেছেন। এ নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ছাড়াও অমর্ত্য সেনের পাঁশে দাঁড়িয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সুশীল সমাজের সদস্যরাও।
আরও পড়ুন>> ১৫ দিনের মধ্যে জমি ছাড়ুন, অমর্ত্য সেনকে কড়া নোটিশ বিশ্বভারতীর
এবার বিশ্বভারতীর উপাচার্যসহ ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব ও ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ তুলে বোলপুর শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গীত ভবনের কথাকলি বিভাগের সাবেক ছাত্রী তৃষারানি ভট্টাচার্য।
Advertisement
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছেন, অমর্ত্য সেন নোবেলজয়ী। দেশ-বিদেশে তার খ্যাতি রয়েছে। তিনি বহু সম্মাননায় সম্মানিত। তিনি ভারতরত্ন বিজয়ী, যা ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান। এই ধরনের ৯০ বছরের একজন পণ্ডিত ব্যক্তিকে মানসিক নির্যাতন করছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীসহ অন্যরা। তাই একজন ভারতরত্নকে জমি দখলকারী, জমি কব্জাকারী বলা দেশদ্রোহিতা। অবিলম্বে দেশদ্রোহিতা আইনে (ইউএপিএ অ্যাক্ট) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
আরও পড়ুন>> অমর্ত্য সেন নোবেল পাননি, দাবি বিশ্বভারতীর উপাচার্যের
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ছবি সংগৃহীত
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, যার নামকরণ স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর করেছেন, তাকে এভাবে অবমাননা করা যায় না। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কের হাত থেকে বাঁচাতে, ভারতরত্নের সম্মান বাঁচাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি রাখছি।
Advertisement
তৃষারানি বলেন, আমি বিশ্বভারতীর সাবেক ছাত্রী। এই বিশ্বভারতীর সাবেক ছাত্র অমর্ত্য সেন। তাছাড়া তিনি নোবেলজয়ী ভারতরত্ন। অমর্ত্য সেনের মতো একজন মানুষকে জমি দখলকারী, জমি কব্জাকারী বলা যায় না। যারা বলে তারা দেশদ্রোহী। যারা এ ধরনের কথা বলে, আমি চাই তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আরও অনেক আগে আমার এই অভিযোগ করা উচিত ছিল।
আরও পড়ুন>> অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করলেন মমতা
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেছেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএএ/