লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতা নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান (৩৫) ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমাম।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের নাগেরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় যুবলীগ নেতা নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালে নেওয়ার পর নোমানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আর গুরুতর আহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে তার মরদেহও জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু রাত পৌনে ১২টার দিকে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
Advertisement
নিহত নোমান সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি প্রস্তাবিত জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক। রাকিব বশিকপুর নন্দীগ্রামের রফিক উল্যার ছেলে।
দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা জানান, ঘটনার আগে যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান পোদ্দারবাজারে ছিলেন। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা অন্যদের বিদায় দিয়ে তিনি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রাকিব ইমামকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে নাগেরহাটের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে নাগেরহাটের কাছাকাছি পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও নোমানের মোবাইল ফোনও নিয়ে যায় তারা।
পরে গুলির শব্দে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে নোমান ও রাকিবকে পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর নোমানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। গুরুতর আহত রাকিবকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। তার মরদেহও জেলা সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
এদিকে, যুবলীগ নেতার মৃত্যুর খবরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সদর হাসপাতালে জড়ো হয়েছেন। এসময় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কান্নার রোল পড়ে।
Advertisement
আরও পড়ুন>> বাস থেকে নামার সময় চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেলো যুবকের
নিহত নোমান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের ভাই।
নোমানের ভাই মাহফুজুর রহমানের অভিযোগ, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী আবুল কাশেম জেহাদী পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। কাশেম আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও হেরেছিল। এরপর থেকে আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিল।’
সন্তানদের সঙ্গে নিহত নোমান/ছবি: সংগৃহীত
স্থানীয়রা জানান, বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম জেহাদী গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মাহফুজুর রহমান। এতে আবুল কাশেম জেহাদীর ভরাডুবি হয়। ওই নির্বাচন নিয়েই কাশেম ও তার অনুসারীদের সঙ্গে মাহফুজ-নোমান গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পরে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন>> পিবিআই প্রধানের মামলায় ইলিয়াস-বাবুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট
জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, আমরা এ হত্যার প্রতিবাদ জানাই। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। আমরা গুরুত্বসহকারে কাজ করছি।
কাজল কায়েস/এএএইচ