বাংলাদেশে বর্তমানে খানা (পরিবার) পর্যায়ে জ্বালানির প্রধান উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বন, লাকড়ি ও কাঠ। একসময় যা ছিল খড়, পাতা, ভুসি, তুষ ও কুঁড়া প্রভৃতি উৎসের দখলে। ২০২১ সালের এক জরিপে দেখা যায়, দেশে মোট ২১ দশমিক ৬ শতাংশ খানা জ্বালানি হিসেবে খড়, পাতা ও তুষ ব্যবহার করে।
Advertisement
‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক জরিপের ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২১ সালের এ জরিপ প্রকাশ করেছে।
জরিপ প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, দেশের পল্লি অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ, সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দাদের ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং পৌরসভা বা অন্য শহরাঞ্চলের ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ বাসিন্দা জ্বালানি উপকরণ হিসেবে বন, লাকড়ি ও কাঠ ব্যবহার করছেন।
বিভাগওয়ারি তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ ৮২ দশমিক ২ শতাংশ খানা রান্নার জ্বালানি হিসেবে বন, লাকড়ি, কাঠ ব্যবহার করছে। এ ধরনের জ্বালানি ব্যবহারের অনুপাত সবচেয়ে কম রাজশাহী বিভাগে। সেখানে ৩২ শতাংশ খানা রান্নার জ্বালানি হিসেবে এসব উপকরণ ব্যবহার করে।
Advertisement
জরিপে দেখা যায়, ২০২১ সালে দেশের মোট খানার ১৪ দশমিক ২ শতাংশে রান্নার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা গ্যাস। পাইপলাইনের গাস ব্যবহারকারীদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ খানা (৭৪ দশমিক ১ শতাংশ) সিটি করপোরেশন এলাকায় এবং পৌরসভা ও অন্য শহরাঞ্চলে রয়েছে এক-তৃতীয়াংশ (৩১ দশমিক ৮ শতাং) খানা।
২০২১ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স’ (এসভিআরএস) জরিপের ফলাফলে আরও দেখা যায়, রান্নার কাজে পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহারকারী খানার হার সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগের প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ (৩৯ দশমিক ৯ শতাংশ) খানা রান্নার জ্বালানি হিসেবে সরবরাহ লাইনের গ্যাস ব্যবহার করে। রান্নার জ্বালানি হিসেবে এলপিজির ব্যবহার সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা বা অন্য শহর এলাকায় প্রায় একই রকম পরিলক্ষিত হয়। পৌরসভা বা অন্য শহরাঞ্চলে এলপিজি ব্যবহারের হার ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় এ হার ১৪ শতাংশ।
জরিপে উঠে এসেছে, দেশে সার্বিকভাবে সরবরাহ লাইনের গ্যাসের ব্যবহারের মাত্রা হ্রাস পাওয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে। ২০১৯ সালে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ খানায় রান্নার কাজে পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার হতো। ২০২০ সালে তা হ্রাস পেয়ে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসে। ২০২১ সালে তা আরও কমে। এছাড়া একই সময়ে এলপিজি ব্যবহারও ৫ দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে।
এমওএস/এমকেআর/জেআইএম
Advertisement