ঈদ ঘিরে মৌলভীবাজারে আনাগোনা নেই পর্যটকের। তবে আনন্দ ভাগাভাগি করতে স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র।
Advertisement
পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দূর-দূরান্তের পর্যটকদের আনোগোনা নেই। হোটেল রিসোর্ট প্রস্তুত করেও আশানুরূপ পর্যটক মেলেনি। তবে ঈদের ছুটিতে মৌলভীবাজারনহ আশপাশ জেলার দর্শনার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি আছে। তাদের পদচারণায় রাত পর্যন্ত মুখর শ্রীমঙ্গল বধ্যভূমি ৭১, ফাইভস্টার হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান, জাতীয় উদ্যান লাউয়াছড়া, সবুজ চা বাগান, মাধবপুর লেকসহ জেলার কমলগঞ্জ, বড়লেখা, কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র।
মৌলভীবাজারের সবুজ প্রকৃতির নান্দনিক পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে স্বজন কিংবা প্রিয়জনকে নিয়ে আসছেন। কেউ মোটরসাইকেলে আবার কেউ প্রাইভেটকার কিংবা মাইক্রোবাসে আসছেন। রাত পর্যন্ত বিভিন্ন স্পটে ভিড় করছেন মানুষ।
হবিগঞ্জ থেকে আসা হামিদা বলেন, আমরা এক মাস রোজা রাখার পর ঈদের দিন বেড়াতে এসেছি। বাচ্চাদের নিয়ে গ্র্যান্ড সুলতানসহ বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখবো।
Advertisement
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর কমলগঞ্জ শ্রীমঙ্গল সড়ক আর মাধবপুর চা-বাগানে উপচে পড়া ভিড় আছে স্থানীয় দর্শনার্থীদের। অল্প সংখ্যক দূরের পর্যটকরা আসছেন।
কুমিল্লা থেকে আসা ফাহমিদা চৌধুরী জানান, তিনি চা-বাগান দেখতে এসেছেন। চা বাগান খুব ভালো লাগে। তিন উপভোগ করছেন।
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে আসা নমিতা চৌধুরী বলেন, জাতীয় উদ্যান লাউয়াছড়া দেখার মতো একটি বন। এখানে শিশুদের নিয়ে আসা যায়।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মাতারকাপন গ্রামের বাসিন্দা রিপন আহমদ বলেন, এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদে পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করতে সবুজ চা বাগান দেখতে এলাম। কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর লেকে যাবো। প্রকৃতি উপভোগ করতে ভালোই লাগে।
Advertisement
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার শিক্ষিকা রহিমা বেগম বলেন, সময়ের অভাবে নিজ জেলার সৌন্দর্য দেখা হয় না। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারের ঈদে ছেলে মেয়েদের নিয়ে ঘুরছি। খুব ভালো লাগছে। বাচ্চারাও আনন্দ উপভোগ করছে।
দায়িত্বে থাকা পর্যটন পুলিশ নেপাল সিংহ জাগো নিউজকে বলেন, এ ঈদে স্থানীয় পর্যটকের উপস্থিতি বেশি। দীর্ঘদিন পর্যটক খরা ছিল। আজ ফুরফুরে আবহওয়ায় মুখর হয়েছে লাউয়াছড়াসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট।
মৌলভীবাজার পর্যটন সেবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কাজী শামসুল হক বলেন, প্রতি বছরই ঈদের ছুটিতে ঢল নামে পর্যটকের। দেশ-দেশান্তর থেকে আসেন হাজারো পর্যটক। রমজানের একমাস মন্দাভাব থাকলেও ঈদে তা পুষিয়ে নেন হোটেল রির্সোট মালিকরা। কিন্তু এবারের ঈদে আশানুরূপ থেকে অনেক কম সিট বুকিং হয়েছে।
মৌলভীবাজার পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, সম্ভাবনাময় মৌলভীবাজারের পর্যটন স্পট গুলোকে যুগান্তকারী উন্নয়নের মাধ্যমে ও ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় করে না তুলতে পারলে এ খাত ক্ষতির মুখে পড়বে।
ঢাকা ট্যুর প্লানের পরিচালক আফতাব আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এবারের ঈদ উৎসবে তাপপ্রবাহ আর ঝড় বৃষ্টির ভয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকার পর্যটকরা বাইরে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়েছেন। আর্থিক বিষয়টিও হিসেবে আছে তাদের।
গ্র্যান্ড সুলতান রির্সোটের সহকারী ব্যবস্থাপক বশির আহমদ বলেন, অন্যসময়ের তুলনায় দর্শনার্থী খুবই কম। আমরা এ নিয়ে চিন্তায় আছি।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জার শহীদুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, দূরে তেমন কোনো পর্যটক নেই। তবে ঈদের দিন বিকেলে হাজারো স্থানীয় দর্শনার্থীর সমাবেশ ঘটে।
এসজে/জেআইএম