পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ভাসমান সেতু ঘুরে দেখেছেন দর্শনার্থীরা। শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদের দিন দুপুর থেকেই সেতু এলাকায় হাজারো দর্শনার্থী ভিড় জমান। মানুষের এ ভিড় থাকবে প্রায় সপ্তাহ ধরে।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার টগরবন্ধ ইউনিয়নসহ আশপাশের সাতটি ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজারের বেশি মানুষের স্বপ্ন পূরণ করেছে ভাসমান সেতু। ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাগুরা, যশোর, নড়াইল, গোপালগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের একটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত পেয়েছে সেতুটি। আশপাশে তেমন কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় ঈদ উপলক্ষে ভাসমান সেতু এলাকায় হাজারো মানুষ ভিড় জমায়।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফরিদপুরে ভাসমান সেতু দেখতে উপচেপড়া ভিড়
মাগুরার মোহাম্মদপুরের ঝামা এলাকা থেকে আসা শাহিন আলম জাগো নিউজকে বলেন, ভাসমান সেতুর কথা অনেক আগেই শুনেছি। এতদিন আসা হয়নি। ঈদ উপলক্ষে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। বেশ ভালো সময় কেটেছে।
Advertisement
নড়াইলের লোহাগড়া থেকে আগত পারভিন বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের দিন পরিবারের সঙ্গে ভাসমান সেতু দেখতে এসেছি। পরিবেশটা খুব ভালো। সব মিলিয়ে ঈদের বিকেলটা ভালো কেটেছে।
বোয়ালমারী উপজেলা সদরের রিয়াজ খান উজ্জ্বল জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছি। স্ত্রী-মেয়েদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। ভাসমান সেতুর পুরো এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখার পাশাপাশি স্মৃতি হিসেবে ছবি, সেলফি, ভিডিও করে রাখলাম।
আরও পড়ুন: ঘুরে এলাম ড্রামের তৈরি বিস্ময়কর ভাসমান সেতুতে
ভাসমান সেতুতে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা মো. লিয়াকত আলী খান বলেন, টিকিটের মূল্য ১০ টাকা। এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় শতাধিক লোকের সমাগম ঘটে। ঈদের প্রথমদিন থেকেই কাছের ও দূর-দূরান্তের মানুষের ভিড় বেড়েছে। ঈদের প্রায় সপ্তাহ সময় ধরে মানুষের এ ভিড় থাকবে। এখানে বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো রাইডার রয়েছে।
Advertisement
টগরবন্ধ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইমাম হাসান শিপন জাগো নিউজকে বলেন, সেতুটির দৈর্ঘ্য আট হাজার ৮৫২ ফুট ও ১২ ফুট প্রস্থ। ২৫০ লিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৮৫২টি প্লাস্টিকের ড্রাম ও ৬০ স্টিল পাত দিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়। প্রথম দিকে এক বছর সেতু দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় করে। এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় একশো মানুষের আগমন ঘটে।
আরও পড়ুন: ড্রামের ওপর নির্মিত ভাসমান সেতু এখন বিনোদন স্পট
আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহিদুল হাসান জাহিদ জাগো নিউজকে বলেন, ভাসমান সেতুটি অত্র অঞ্চলের মানুষের কাছে একটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নে মধুমতি নদীর বাঁওড়ের ওপর নির্মাণ করা হয় এই সেতু। স্থানীয় ১০টি গ্রামের প্রায় হাজার মানুষ প্রতিদিন এ স্থান দিয়ে নৌকায় পারাপার হতেন। এতে কৃষিপণ্য ও নানা ধরনের মালামাল নিয়ে পার হতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হতো। তাই টিটা, টিটা পানাইল, পানাইল, শিকারপুর, ইকরাইল ও কুমুরতিয়া গ্রামের লোকজন মিলে একটি ভাসমান সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এ প্রক্রিয়ায় অর্থ সহায়তা দিতে এগিয়ে আসেন এলাকার ৫২ জন ব্যক্তি। ২০২০ সালের ২৮ মার্চ সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়।
এন কে বি নয়ন/জেডএইচ