মাহমুদুল হক জালীস
Advertisement
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের আমোদপুর গ্রামের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তরিকুল ইসলাম তুষারের। রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। ২০১৩ সালে প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানার পর গুগল এবং ইউটিউব ঘেটে কিছু বিষয় রপ্ত করেন।
তরিকুল ইসলাম তুষার বলেন, ‘শুরুতে কোনো কিছু বুঝতাম না। গুগল ও ইউটিউব ঘেটে শিখতে লাগলাম। সফলতার চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি হতে লাগল। এখনকার মতো তখন এত কোর্সের ব্যবস্থাও ছিল না। অনেক ইচ্ছে ছিল ওয়েব-ডেভেলপমেন্টের ওপর কাজ করব। সেটাতে খুব বেশি সফলতা না আসায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ওপর কাজ করতে থাকি। এরপর পর্যায়ক্রমে এসইওর কাজ শিখে এগোতে থাকি। বর্তমানে প্রতি মাসে লাখ টাকা আয় হয়।’
তরুণ ফ্রিল্যান্সার তরিকুল ইসলাম তুষার এখন ঘরে বসেই চাকরি করছেন আমেরিকান একটি প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে তিনি আমেরিকান একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সিতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) স্পেশ্যালিস্ট হিসেবে কর্মরত। এমনকি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ফাইবার ও আপওয়ার্কে টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যুক্ত আছেন। গত বছর আপওয়ার্কে বাংলাদেশের সবচেয়ে দক্ষ এসইও এক্সপার্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
Advertisement
তিনি দশ তরুণ ফ্রিল্যান্সারের মধ্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। এছাড়াও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং কোডার্সট্রাস্ট আয়োজিত প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ (টিওটি) ও কর্মশালার সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
নিজে আয় করার পাশাপাশি তরুণদের বেকারত্ব দূর করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তুষার। তিনি মনে করেন, দেশের চাকরির বাজারে ঘুরে হতাশ না হয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে একধাপ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। তাই রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় ‘লার্ন ফ্রিল্যান্সিং উইথ তুষার’ নামে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন। এমনকি অনলাইনে ক্লাস পরিচালনার মাধ্যমেও আগ্রহী তরুণদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
এরই মধ্যে এলাকার ১২০ জনসহ দেশের প্রায় ৪ শতাধিক তরুণ-তরুণী তার হাত ধরে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে উঠেছেন। এছাড়াও অনলাইনে ‘Toriqul Islam Tusher’ নামে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নামে ইউটিউব চ্যানেল আছে। সেখানে লাইভ ক্লাস নেওয়ার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
তরিকুল বলেন, ‘ফ্রিল্যান্সিংয়ে মূলত বিদেশি কোম্পানি ও ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে ইংরেজি দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে ধৈর্যশীল হতে হবে। কারণ ফ্রিল্যান্সিং করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে এবং ভাষাগত দিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য ফ্রিল্যান্সারদের দেশের যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম ডিগ্রি পাস থাকা উচিত। এতে ফ্রিল্যান্সিং জগতের দক্ষতা সহজ হবে এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব হবে।’
এসইউ/জিকেএস