বিনোদন

মায়ের অনুপ্রেরণায় গানের ভুবনে পূর্ণতা

রাশেদ উদ্দিন আহমেদ তপু এবং আনিলা নাজ চৌধুরীর গাওয়া ‘এক পায়ে নূপুর’ গানটি মনকাড়ে ৩ বছর বয়সী তামজিদ জাহান পূর্ণতার। মেয়ের মধ্যে সংগীত প্রেম দেখে মা রিতা মুস্তাফিজ পূর্ণতাকে সংগীতশিল্পী হিসেবে দেখার প্রচেষ্টায় নামেন। সাড়ে তিন বছর বয়স থেকে সংগীতের শিক্ষকদের মাধ্যমে সংগীতচর্চা শুরু করেন পূর্ণতা। শুরু হয় সংগীতাঙ্গনে তার পথ চলা।

Advertisement

আরও পড়ুন: তসিবার ‘রঙ চা’ গানে মডেল হলেন সজিব-বৃষ্টি

সাড়ে তিন বছর বয়সে গানের প্রতি ভীষণ আগ্রহী পূর্ণতা সময়ের ব্যবধানে এখন পরিপূর্ণ। জাতীয় টেলিভিশনে সংগীতবিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে থাকে নিয়মিত। প্রকাশ হয়েছে পূর্ণতার বেশ কয়েকটি কভার করা গান, যা প্রশংসা কুড়িয়ে দর্শক ও শ্রোতা মহলে। এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাউন্ড হ্যাকার বিডি থেকে প্রকাশিত মাহতিম সাকিবের সঙ্গে কভার করা গান ‘কেনো পিরিতি বাড়াইলা রে বন্ধু’।

আরও পড়ুন: ঈদে আনন্দের কথায় সায়েরা রেজার ‘মনের মানুষ’

Advertisement

গানের রিয়েলিটি শো সেরাকণ্ঠ ২০২৩ সালের হাজারো প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে, প্রাথমিক, প্রি-গ্র্যান্ড, গ্র্যান্ড ও প্রি- ক্যাম্প অডিশন পর্যন্ত অংশ নিয়েছে পূর্ণতা। স্কুল পড়ুয়া পূর্ণতার অর্জনের ঝুলিতেও আছে ৭টি জাতীয় পুরস্কার। কেজি ওয়ানে থাকাকালীন ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় শিশু-কিশোর পুরস্কার পায় পূর্ণতা, এরপর একই পুরস্কারে ধারাবাহিকতা ছিল ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ সাল পর্যন্ত।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পৃষ্ঠপোষকতায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দেন পূর্ণতা, গানের মুগ্ধতায় ২০১৭, ২০১৮, ২০২০-২০২১ সালের জাতীয় শিশু পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।

গানের পাশাপাশি নাচেও পূর্ণতা প্রতিভা প্রতিফলিত। ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে বাছাইকৃত ১০ জন নৃত্য শিল্পীর যাওয়া কথা ছিল ইউক্রেনের চিলড্রেন ফেস্টিভ্যালে, নৃত্যশিল্পী হিসেবে সুযোগ পেয়েছিলেন পূর্ণতা। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার অংশ নিতে পারেননি সেখানে।

শিল্পী সামিনা চৌধুরীর সঙ্গে পূর্ণতা

Advertisement

শিল্পের বাইরেও পূর্ণতার প্রতিভা প্রতিফলিত শিক্ষায়। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া পূর্ণতা প্রথম শ্রেণি থেকে এখন অবদি ক্লাসের সেরা শিক্ষার্থীই। সংগীতশিল্পী হওয়ার পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হবে মেয়ে, এমনটিই প্রত্যাশা তার মায়ের।

পূর্ণতার মা রিতা মুস্তাফিজ বলেন, মেয়েকে সংগীতশিল্পী বানানোর ইচ্ছে খ্যাতি বা পরিচিতির জন্য নয়। আমি চাই আমার মেয়ে একজন ভালো মানুষ হবে, আমি মনে করি সংগীতের প্রতি ভালোবাসা, সংগীতচর্চা পূর্ণতাকে ভালো মানুষ হতে সহযোগিতা করবে। তিনি আরও বলেন, সংগীত মানুষের মেধা ও সৃজনশীলতাকে বৃদ্ধি করে, সেই সঙ্গে সন্তানরা যেন বিপথে না যায়, পড়াশোনার পাশাপাশি যেন সংগীতচর্চা করে।

তামজিদ জাহান পূর্ণতা বলেন, সংগীত আমার কাছে বন্ধুর মতো। আমি সংগীতকে অনেক ভালোবাসি, সব ধরনের গান করতেই পছন্দ করি, তবে বেশি করা হয় নজরুল ও রবীন্দ্রসংগীত। আমার মা যেভাবে আমাকে সংগীতশিল্পী বানানোর জন্য কষ্ট করে যাচ্ছেন, মায়ের এ পরিশ্রমকে সফল করে তুলতে ভালো সংগীতশিল্পী হতে চাই, তবে কারও মতো সংগীতশিল্পী নয়। নিজের মতো।

এমএমএফ/জিকেএস