ছোট-বড়দের পোশাকে ঠাসা রুপম গ্যালারি। নান্দনিক নকশার পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন চারজন বিক্রয়কর্মী। তবে দোকানটিতে কোনো ক্রেতা নেই। অলস সময় কাটাচ্ছেন বিক্রয়কর্মীরা।
Advertisement
নামিদামি ব্র্যান্ডের পারফিউম, কসমেটিকস বিক্রি করে হাবিবা এন্টারপ্রাইজ। এ দোকানে বিক্রয়কর্মী তিনজন। এর মধ্যে একজন ক্রেতা দরদাম করছেন। কিছুক্ষণ পর কিছু না কিনেই দোকান থেকে বের হয়ে যান তিনি।
মার্কেটের গলিতে টেবিল-চেয়ার পেতে ইমিটেশনের গয়না, প্ল্যাস্টিকপণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানি আবুল খায়ের। তার দোকানে কিছুক্ষণ পরপর দু-একজন ক্রেতা আসছেন। দরদাম করে পণ্য কিনছেন। অনেকে আবার ঘুরে দেখে চলে যাচ্ছেন।
এ চিত্র ঢাকার গুলশান-১-এর ডিএনসিসি মার্কেটের। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এবার ঈদে মার্কেটে ক্রেতা অনেক কম। অথচ স্বাভাবিক সময়ে এ মার্কেট খুবই জমজমাট থাকে। এজন্য ডিএনসিসি মার্কেট সারাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত।
Advertisement
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ডিএনসিসি মার্কেটে ক্রেতা কম কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ীরা জানান, কিছু কারণে ঈদ মৌসুমে ডিএনসিসি মার্কেটে ক্রেতা কমে গেছে। প্রথমত কাঠফাটা রোদে মার্কেটের ভেতর প্রচণ্ড গরম। অথচ মার্কেটে কেন্দ্রীয় কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র নেই।
দ্বিতীয়ত ২০১৭ সালে মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লাগে। অনেক দোকান আগুনে পুড়ে যায়। এ ঘটনার পর ২০১৯ সালে ফের অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে বহু দোকানি মার্কেট ছেড়ে গুলশানের পুলিশ প্লাজা, যমুনা ফিউচার পার্কে চলে যান। এ কারণে ক্রেতাও সেখানে চলে গেছে। বিশেষ করে ঈদের সময়টাতে ক্রেতা আসে না। তবে অন্যান্য সময়ে এ মার্কেটে ভালোই বেচাকেনা হয়।
ডিএনসিসি দ্বিতীয় তলায় জামা-কাপড়, কসমেটিকস, গয়না বিক্রি হয়। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, দ্বিতল এ মার্কেটের প্রায় সবকটি দোকান প্রায় ফাঁকা। দু-চারজন করে ক্রেতা মার্কেটে ঢুকছেন। কেউ কিনছেন, আবার কেউ কিছু না কিনেই বের হচ্ছেন। তবে মুদি দোকানগুলোতে কেনাকাটা স্বাভাবিক ছিল। কাপড়ের অধিকাংশ দোকান ফাঁকা দেখা গেছে।
রুপম গ্যালারির বিক্রয়কর্মী হোসেন মোহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের চেয়ে স্বাভাবিক সময়ে দোকানে ভালো বেচাকেনা হয়। আর ঈদ আসলে ক্রেতারা যমুনা ফিউচার পার্কসহ আধুনিক মার্কেটে কেনাকাটা করতে চলে যান। এতে দোকানে তেমন বিক্রি হয় না। এজন্য মালিকের মন জোগাতেও পারি না।
Advertisement
গয়না ও সিরামিকের জিনিসপত্র কিনতে ডিএনসিসি মার্কেটে যান মহাখালীর জামান দম্পতি। জামান বলেন, ঈদে স্ত্রী গয়না কেনার জন্য বায়না ধরেছে। এজন্য মার্কেটে নিয়ে আসলাম। কিন্তু এ মার্কেটে দোকানের সংখ্যা কম। পছন্দমতো পাচ্ছিও না।
ডিএনসিসি মার্কেট সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. এনায়েত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এবার ঈদের অনেক আগ থেকেই বেচাবিক্র শুরু হয়েছে। তবে বিভিন্ন কারণে মার্কেটিতে ঈদ মৌসুমে ক্রেতা কমেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ে ভালোই বেচাকেনা হয়।
এমএমএ/এএএইচ/এমএস